সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শোকে দুঃখে কাতর পরিজনেরা। তবু সামাজিক রীতির কথা ভেবে শ্রাদ্ধের আয়োজন করা হয়েছিল। করোনা কালে বিশেষ আত্মীয়স্বজন আসার সম্ভাবনা নেই। তাই বাড়ির ছাদে ছোট করে বাঁধা হয় প্যান্ডেল। ছেলে সবে প্রস্তুত হচ্ছেন স্থানীয় দোকান থেকে বাবার বাঁধাতে দেওয়া ছবি আনতে যাওয়ার। এমন সময় অজানা নম্বর থেকে এল ফোন। তা কানে দেওয়া মাত্রই যেন জ্ঞান হারানোর জোগাড় ছেলের। হতভম্ব হয়ে বিছানায় কিছুক্ষণ বসেও পড়েন তিনি।
ঘরে যখন এরকম পরিস্থিতি। তখন বাড়ির দরজার সামনে ঘটে গেল আরেক বিস্ময়। আচমকাই এসে দাঁড়াল একটি অ্যাম্বুল্যান্স। কে রয়েছেন অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরে? তা তখনও কারও কিছু জানা নেই। তারপরই দেখা গেল দরজা খুলে নেমে আসছেন শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। খড়দহের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের তিনিই কর্তা। তাঁরই শ্রাদ্ধের আয়োজন করে ফেলেছিলেন ছেলে। কিন্তু আচমকা ‘মৃত’ মানুষ ফিরে আসায় অবাক তাঁর শিবনাথবাবুর পরিজন ও প্রতিবেশীরা।
[আরও পড়ুন: প্রেমের টানে ছুটে যাওয়াই কাল, প্রেমিকার আত্মীয়দের বেধড়ক মারে হাসপাতালে প্রেমিক]
ঠিক কী ঘটেছিল? গত ১১ নভেম্বর করোনা আক্রান্ত শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভরতি করা হয় হাসপাতালে। তার ঠিক দু’দিন পর অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে রোগীর পরিবারের কাছে একটি ফোন আসে। তাতেই জানানো হয় শিবনাথবাবুর কোভিডের বলি হয়েছেন। দূর থেকে নাকি মৃতদেহও দেখানো হয় শিবনাথবাবুর পরিজনদের। তারপরই শ্রাদ্ধের আয়োজন করেন তাঁর ছেলে। শনিবারই ছিল শ্রাদ্ধ। জানা গিয়েছে, আদতে যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর নাম মোহিনীমোহন গোস্বামী। তিনি বিরাটির বাসিন্দা। তার সঙ্গে শিবনাথবাবুকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। শিবনাথবাবু জানান, শুক্রবার সন্ধেয় তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বিরাটির দিকেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে তিনি খড়দহের বাসিন্দা বলে জানান। তারপর সমস্ত ভুলভ্রান্তি সামনে আসে। এই ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর।