রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: বক্সা বাঘ বনে হরিণ প্রজনন কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু করেছে বনদপ্তর। বক্সা বাঘ বনের পশ্চিম বিভাগের বনাঞ্চলে ২.২ একর জমিতে এই প্রজনন কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এখানে হরিণ রেখে তাদের বংশ বৃদ্ধি করা হবে। তার পর সেই সব হরিণদের ছাড়া হবে বক্সা বাঘ বনে। বক্সা বাঘ বনে মাংসাশী প্রাণীদের খাবারের জোগান দিতে এই ব্যবস্থা বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে একাধিকবার বাইরে থেকে হরিণ এনে এই বনাঞ্চলে ছাড়া হয়েছে। প্রায় ২ হাজারের বেশি হরিণ বাইরে থেকে এনে এই বনাঞ্চলে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু বনদপ্তর বুঝতে পেরেছে বাইরে থেকে হরিণ এনে এই বনাঞ্চলে ছাড়া অনেক ঝক্কি ঝামেলার কাজ। তাছাড়া এভাবে বাইরে থেকে হরিণ আনা ব্যয়সাপেক্ষও বটে। সেই কারণে বনাঞ্চলের ভেতরেই কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে হরিণের প্রজনন করিয়ে সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ফের সিজিওতে সন্দীপ, পর পর ৪ দিন সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ]
ইতিমধ্যে বক্সা বাঘ বনে শকুন প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে। হরিণ প্রজনন কেন্দ্র চালু হয়ে গেলে তা হবে বক্সা বাঘ বনে দ্বিতীয় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র। কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র হলেও এখানে হরিণ রেখে প্রাকৃতিক উপায়ে স্ত্রী ও পুরুষ হরিণের মিলন ঘটিয়েই হরিণের বংশ বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন বক্সা বাঘ বনের কর্তারা।
বক্সা বাঘ বনের পশ্চিম বিভাগের উপক্ষেত্র অধিকর্তা ডঃ হরিকৃষ্ণন বলেন, “আমরা বক্সা বাঘ বনের জীব বৈচিত্রকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছি। এখানে মাংসাশী প্রাণীদের খাবারের কোনও সময় যাতে ঘাটতি না হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই উদ্দেশ্যেই হরিণ প্রজনন কেন্দ্র গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। এখানে কত হরিণ রাখা হবে সেই বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে লোহার তারের এনক্লোজারের বাইরে আরেকটি সোলার ফেন্সিং গড়ে তোলা হবে।" লোহার তারের বেড়া হাতি যে কোনও সময় ভেঙে দিতে পারে। আর সেই কারণে এই লোহার তারের এনক্লোজারের বাইরে সোলার প্যানেলে তৈরি হওয়া বিদ্যুৎবাহী তারের একটি বেড়া দেওয়া হবে। যাতে হাতি হরিণের এনক্লোজার ভেঙে দিতে না পারে সেই কারণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭৬০ বর্গ কিলোমিটার বক্সা বাঘ বনে বাঘ থাকার নজির থাকলেও বর্তমানে বাঘহীন বক্সা বাঘ বন। অনেকেই বলেন শুধু নামেই বাঘ বন কিন্তু এখানে বাঘ নেই। তবে সম্প্রতি অসম থেকে ভুটান হয়ে এখানে বাঘ আসার ঘটনা ঘটেছে। আর এই অবস্থাতে এই বনাঞ্চলকে বাঘেদের উত্তম বাসস্থান তৈরিতে কোন খামতি রাখতে চাইছে না বক্সা বাঘ বন কর্তৃপক্ষ।