সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মের বেড়া ভেঙে যায় উৎসবের দিনগুলোয়। এই সময় ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় হয়। দীপাবলির (Diwali) সন্ধ্যায় দিল্লির নিজামুদ্দিন দরগায় (Nizamuddin Dargah) দাঁড়িয়ে কথাগুলো বললেন ভারতের মুসলিম ছাত্র সংগঠনের চেয়ারম্যান ডা. শুজাত আলি। উল্লেখ্য, আলোর উৎসবে প্রদীপে সেজে উঠেছে দেশের অন্যতম প্রাচীন দরগা। যা বিখ্যাত উর্দু কবি আমির খসরুর (Amir Khusro) স্মৃতি বিজরিত। যিনি সুফি সাধক হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার (Hazrat Nizamuddin Auliya) ভক্ত ছিলেন, যার নামে দরগা।
যখন গোটা দেশ দিওয়ালি উৎসবে মেতে, তখন প্রতিবারের মতো সেজে উঠেছে নিজামুদ্দিন দরগা। সবচেয়ে বড় কথা, হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার মাজার সাজানোর কাজ করে থাকেন হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায় মিলে। দূরদূরান্ত থেকে আসেন মানুষ, সন্ধে হলেই দরগার প্রতিটি কোণে প্রদীপ জ্বেলে দেন তাঁরা। এইসঙ্গে পরিবার, সমাজ ও গোটা দেশের শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন।
[আরও পড়ুন: কোনও প্রমাণ ছাড়াই স্বামীকে ‘মদ্যপ’, ‘চরিত্রহীন’ বলাটা নিষ্ঠুরতা, মন্তব্য বম্বে হাই কোর্টের]
মাজার প্রধান নাজিম নিজামী জানান, জাতপাতের ঊর্ধ্বে এভাবে দীপাবলি উদযাপনের ইতিহাস দরগার মতোই পুরনো। দরগার আলোর উৎসব স্থানীয়ভাবে ইদ-ই চর্যাঘন নামে পরিচিত। একইসঙ্গে যেমন পূণ্যার্থীরা দরগায় এসে প্রদীপ জ্বালান, তেমনই তাঁরা নিজামুদ্দিনের আশীর্বাদ হিসেবে প্রদীপ, মোমবাতি বাড়ি নিয়ে যান। নাজিম নিজামী আরও দাবি করেন, এই উৎসব আলাদা করে দরগার তরফে আয়োজন করা হয় না, বরং সাধারণ মানুষই দরগায় এসে উৎসব পালন করেন। তাঁর কথায়, “হিন্দু ভাইয়েরা নিজের ইচ্ছায় আসেন, প্রদীপ জ্বালান এবং মিষ্টি বিতরণ করেন। স্থানীয়রা তাঁদের সাহায্য করেন এবং উৎসবে অংশ নেন।”
[আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নয়া মোড়! বিজেপিতে যোগ দেবেন শিণ্ডে শিবিরের ২২ বিধায়ক, দাবি উদ্ধবের]
উল্লেখ্য, শুধু দীপাবলির সময়েই নয়, লক্ষ্মী পুজোর সময়েও মাজারের পথের দুই পাশ ভরে ওঠে আলোকসজ্জায়। এমনকী ভাইফোঁটা এবং অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের দিনগুলিতে উজ্জ্বল আলোয় সাজিয়ে তোলা হয় জায়গাটিকে। বেশ কিছু ঐতিহাসিকের মতো, হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার মাজারে দীপাবলি উৎসবের সূচনাই হয়েছিল বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতে।