সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের আগে টুইট করে দিল্লি নির্বাচনকে ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী কপিল শর্মা। নিজের দলকে ভারত আর বিরোধীদের পাকিস্তান বানিয়ে দিল্লির নাগরিকের মন জয়ের চেষ্টা করেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে আম আদমি পার্টির সরকারের তৃতীয় ইনিংস শুরুর বিষয়টি স্পষ্ট হতেই সেই মন্তব্যের যোগ্য জবাব পেলেন তিনি। AAP-এর সদর দপ্তরের সামনে দাঁড়িয়ে ‘আজ হিন্দুস্তান জিত গ্যায়া’ বলে মন্তব্য করলেন কেজরিওয়াল ঘনিষ্ঠ ও দলের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিং। কেজরিওয়াল যে জঙ্গি নয় তা দিল্লির মানুষ প্রমাণ করলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আর তাঁর এই কথা শুনে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেন সেখানে হাজির হওয়া আম আদমি পার্টির কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের উল্লাসই বুঝিয়ে দিল জাতীয়তাবাদের সুড়সুড়ির জায়গায় উন্নয়নের জোয়ারকে প্রাধান্য দিয়েছে দিল্লির জনগণ। জনপ্রিয় একটি হিন্দি সিনেমার বিখ্যাত ডায়ালগকে একটু অদলবদল করে তৈরি করা ‘লগে রহ কেজরিওয়াল’ স্লোগানেই আস্থা রেখেছে।
মঙ্গলবার বেলা একটু গড়াতেই ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আপের অফিসেও বাড়ছিল কালো মাথার সংখ্যা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা জনসমুদ্রের আকার ধারণ করে। বাইরে যখন কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে মিষ্টি বিতরণ করছেন তখন ভিতরে ফোন ধরতেই ব্য়স্ত ছিলেন নেতারা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে আসা অভিনন্দন বার্তার পাশাপাশি ফলাফলের বিষয়েও প্রশ্ন করছিলেন অনেকে। এর মাঝেই আপের জয় ও বিজেপির পরাজয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলকে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার জন্য অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন অনেকে। সেই তালিকায় ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথও। অন্যদিকে হার স্বীকার করে নিয়ে এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলেন দিল্লির বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর থেকে শুরু করে বিতর্কিত পরবেশ সিং বর্মাও। আর দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেস যে ফের দিল্লিতে কোনও বিধানসভা আসন জিততে ব্যর্থ হচ্ছে তার দায় স্বীকার করে নেন প্রদেশ সভাপতি সুভাষ চোপড়া।
[আরও পড়ুন: ধর্মীয় ভেদাভেদে অনীহা, দিল্লির বাঙালি মহল্লায় এবার ফুটল না পদ্ম ]
এই বিষয়টি নিয়ে আজ বাঁকুড়ার সভা থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। দেশের মানুষ CAA ও NRC কে প্রত্যাহার করে উন্নয়নের পক্ষ ভোট দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এটা গণতন্ত্রের জয় বলে উল্লেখ করে এর জন্য দিল্লির মানুষ ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলকে শুভেচ্ছা জানান। অন্যদিকে খারাপ ফলের দলে আলোচনা হবে বলে মন্তব্য করার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপিকেও কটাক্ষ করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে কংগ্রেসের ফল নিয়ে ইতিমধ্যে দলের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। তবে এবার বিজেপিকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন ওরা যে নির্বাচনের আগে বড় বড় দাবি করেছিল। তার কী হল?’
[আরও পড়ুন: গুরুর ভূমিকায় ফের সফল প্রশান্ত কিশোর, বজায় রাখলেন ঈর্ষণীয় রেকর্ড ]
উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, ‘আমি অরবিন্দ কেজরিওয়ালজিকে অভিনন্দন জানাই। এর পাশাপাশি আমি দিল্লির মানুষকেও এই কারণে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে তাঁরা ঘৃণা, বিশ্বাসঘাতকতা ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতিকে প্রত্যাখান করেছেন। আশাকরি এই নির্বাচনের ফলাফল দেখার পরে বিজেপি আর কোনও বাগকে মনে রাখতে পারবে না।’
The post বিভাজনের রাজনীতিকে হারিয়ে জিতল উন্নয়ন, বিজেপিকে কটাক্ষ বিরোধীদের appeared first on Sangbad Pratidin.