সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাতভর মুজিব-হাসিনার বাসভবন তো বটেই, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত নানা জায়গায় কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে 'বিদ্রোহী' ছাত্ররা। আগুন, ভাঙচুর করে বাঙালির জাতিসত্তা থেকে ইতিহাস ক্রমশ মুছে দেওয়া হচ্ছে। বুধবারের এসব 'জঙ্গিপনা'র পর বৃহস্পতিবার সকালেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে ভারচুয়াল বার্তায় কড়া আক্রমণ করেছেন। ইউনুসকে 'বেইমান' বলেছেন তিনি। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছিলেন, ইতিহাস মোছা যাবে না! আর তাঁর এই বক্তব্যে লাগাম পরাতে এবার ভারতের উপর চাপ বাড়াল বাংলাদেশ। ঢাকার তরফে নয়াদিল্লিকে চিঠি দিয়ে বার্তা, হাসিনাকে 'উসকানিমূলক' মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলুন। বৃহস্পতিবার এই বিবৃতি দিয়েছেন ইউনুসের বিদেশন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ ইসলাম। তলব করা হয়েছে ঢাকার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকেও।
বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে ভিডিও বার্তা দিয়ে ইউনুসকে ‘বেইমান’ বলে সম্বোধন করেন মুজিবকন্যা। ৫৮ মিনিটের ভারচুয়াল বক্তব্যে তিনি বলেন, “লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে সংবিধান, স্বাধীনতা, পতাকা পেয়েছি — তা কয়েকজন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে পারবে না। এই শক্তি তাদের এখনও হয়নি। এটা তো দুর্বলতার প্রকাশ। তারা দালান ভাঙতে পারে, কিন্তু ইতিহাসকে ধ্বংস করতে পারে না। ইতিহাস যে প্রতিশোধ নেয়। এ কথা তাদের মনে রাখতে হবে। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা হীন মনের পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁদের হয়তো বাংলাদেশের স্বাধীনতাও পছন্দ নয়। পাকিস্তানিদের অধীনে থাকা এবং পদলেহন করাটাই হয়তো তাঁদের পছন্দ।” আরও বলেন, “ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল। আমার মা অনেক কষ্ট করে এই বাড়িটির প্রতিটি ইট নিজের হাতে গেঁথেছিলেন।”
এসবের পর ইউনুস সরকার পরিস্থিতি নিয়ে হাসিনাকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। এবার তাঁর বিদেশমন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের বক্তব্য, ভারতে বসে বসে ‘উস্কানিমূলক বিবৃতি’ দিচ্ছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে বিরত করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘হাসিনা ভারত থেকে যে সমস্ত বক্তৃতা করছেন, ছাত্র-জনতা তা ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তিনি অবিরাম উসকানি দিচ্ছেন। তিনি যদি এই ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকতেন, তবে অশান্তি হত না। গত কয়েকদিনের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা ভারতকে প্রতিবাদী চিঠি দিয়েছি। এখনও তার জবাব পাইনি। এখন রাষ্ট্রদূত নেই, আমরা উপরাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ বিষয়ে অনুরোধ করেছি। যাতে হাসিনা উসকানিমূলক মন্তব্য করা বন্ধ করেন, তা নিশ্চিত করার কথা বলেছি।’’