সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোকলামে ধাক্কা খেয়ে এবার সুর নরম করল ‘ড্রাগন’। ভারতের কড়া অবস্থানে কার্যত ফাটল দেখা যাচ্ছে লালফৌজের অন্দরে। ডোকলাম ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের দাবি তুলেছিল সে দেশের সর্বশক্তিমান কমিউনিস্ট পার্টি ও লালফৌজের যুদ্ধবাজ নেতৃত্ব। কিন্তু আস্ফালন করলেও প্রধানমন্ত্রী মোদির দৌত্যের সামনে শক্তি খুইয়ে শেষমেষ মাথা নত করেছিল ড্রাগন। ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে একরকম বাধ্যই হয় লালফৌজ। তারপর থেকেই চিনা সরকার ও লালফৌজের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ফাটল তৈরি হয়েছে। দেখা দিয়েছে প্রবল মতানৈক্য।
[কিমের মাথা কেটে আনতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাবে সিওল]
বেজিংয়ের ‘যুদ্ধবাজ’দের কার্যত মূর্খ বলে দাবি করেছেন ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’র মেজর জেনারেল কুইয়াও লিয়াং। তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের দাবি তুলছেন তাঁরা চিনের কৌশলগত অবস্থানের কিছুই বোঝেন না। পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণাই নেই। অনেকেই মনে করেন, যুদ্ধই হল শক্তি প্রদর্শনের একমাত্র পন্থা। কিন্তু তাঁরা যুদ্ধের পরিণামের কথা ভুলে যান। বিনা যুদ্ধেই সমস্যার সমাধান করা উচিত।” প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডোকলাম নিয়ে লালফৌজের অন্দরে ব্যাপক ভাঙন। সেনার একাংশ যুদ্ধের পক্ষে হলেও, অন্য গোষ্ঠীটি চাইছে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে। কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতারাও আলোচনার পক্ষেই সায় দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। ফলে মারাত্মক সংঘাত তৈরি হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘যুদ্ধ’পন্থী লবিকে তুলোধোনা করেছেন মেজর জেনারেল কুইয়াও লিয়াং। তিনি মনে করেন, ‘চিন ও ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্র। এটা ঠিকই যে, দু’দেশই একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু তাই বলে সব প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে, বিশেষত ভারতের মতো দেশের বিরুদ্ধে গায়ের জোর ফলানো চলে না।’ ওয়াকিবহল মহল মনে করছে, লিয়াংয়ের বক্তব্যে সমর্থন রয়েছে বেজিংয়ের নীতি নির্ধারকদেরও। জানা গিয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করতে চাইছে চিন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ওই দেশের নীতিতে।
[দাউদের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ব্রিটেন]
যদিও, ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় প্রবল ক্ষুব্ধ চিনের ‘যুদ্ধবাজ’ লবি। অপরদিকে, নিজেদের অবস্থানে অনড় আলোচনাপন্থী শিবির। ফলে দু’দলের মধ্যে বাড়ছে সংঘাত। লালফৌজের শীর্ষ সামরিক আধিকারিক কুইয়াও লিয়াংয়ের বয়ানে তা স্পষ্ট, বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়াকিবহল মহলের একাংশ মনে করছেন, দেরিতে হলেও পরিস্থিতির জটিলতা আঁচ করতে পেরেছে বেজিং। তাই যুদ্ধের আস্ফালন ছেড়ে এবার সুর নরম করেছে ড্রাগন।
The post ভারতের কাছে মাথা নত ড্রাগনের, ডোকলাম নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত লালফৌজ appeared first on Sangbad Pratidin.