দুলাল দে: একদিকে নতুন ইনভেস্টরের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে আবার ফুটবলারের বেতন নিয়ে ফেডারেশনের পর এবার ফিফার দফতরে বড় ধাক্কা খেতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব (East Bengal)। বিদেশি ফুটবলার উমেদ সিংয়ের (Omid Singh) বেতন না মেটানোয় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা গুনতে হবে লাল-হলুদকে। আর এই সিদ্ধান্ত কেউ নয়, নিয়েছে স্পোর্টসম্যানদের আরবিট্রেশনের সর্বোচ্চ সংস্থা–‘ক্যাশ’। আর ‘ক্যাশের’ এই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়েছে ফিফা (FIFA)। ফলে পরিস্থিতি মারাত্মক গুরুতর।
এর আগে ভারতীয় ফুটবলারদের ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বেতন না মেটানোয় ফুটবলারদের সই করানোর উপরে ব্যান এনেছে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। এবার এর সঙ্গে ফিফার নির্দেশে ব্যান। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অবশ্য তাকিয়ে রয়েছেন শ্রী সিমেন্ট কর্তাদের দিকে। কর্তারা এখনও আশাবাদী, পরিস্থিতি উপলব্ধি করে শ্রী সিমেন্ট কর্তারা উমেদ সিং সহ বাকি ফুটবলারদের টাকা মিটিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ব্যান তুলতে সাহায্য করবেন।
[আরও পড়ুন: রনজি কোয়ার্টারের বাংলা দল নির্বাচন, সামি-ঋদ্ধিমান নিয়ে দুই নীতি নিল সিএবি]
প্রথমে কোয়েস। তারপর শ্রী সিমেন্টের সময়ের একাধিক ফুটবলারের বেতন বাকি। ভারতীয় ফুটবলাররা বকেয়া বেতনের জন্য আবেদন করেছেন ফেডারেশনের কাছে। আর বিদেশি ফুটবলাররা আবেদন করেছেন ফিফায়। কোয়েসের সময়ের বিদেশি সহকারী কোচ, ফিজিকাল ট্রেনাররা মরশুম শেষে বেতন না পেয়ে অভিযোগ করেন ফিফায়। শ্রী সিমেন্ট কর্তারা পরিস্কার জানিয়ে দেন, কোয়েসের সময়ের কোনও ফুটবলারের বকেয়া তারা বহন করবেন না। কিন্তু উমেদ সিংয়ের সমস্যা শ্রী সিমেন্টের সময়ের।
ইনভেস্টর হিসেবে লাল-হলুদের সঙ্গে শ্রী সিমেন্টের চুক্তির আগেই ইস্টবেঙ্গল কর্তারা সই করিয়েছিলেন উমেদকে। কিন্তু ইনভেস্টর হিসেবে ইস্টবেঙ্গলে আসার পর উমেদকে সই করাতে রাজি হননি শ্রী সিমেন্টকর্তারা। সেক্ষেত্রে বলা হয়, ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে উমেদের যে চুক্তিপত্র রয়েছে, সেখানে ইস্টবেঙ্গলের তরফে কোনও সই ছিল না। ফলে সেই ফুটবলারের চুক্তি তারা মানতে রাজি নয়। বাধ্য হয়েই বকেয়া বেতনের জন্য ফিফার দ্বারস্থ হন উমেদ। যার বিরুদ্ধে স্পোর্টসম্যানদের আরবিট্রেশনের সর্বোচ্চ সংস্থা ‘ক্যাশ’-এ আবেদন করেন শ্রী সিমেন্ট কর্তারা। এক্ষেত্রে লাল-হলুদ কর্তাদের বক্তব্য হল, যদি উমেদ সিংয়ের সঙ্গে চুক্তি ঠিকঠাক না হয়ে থাকে, তাহলে ফিফা কেন সেই চুক্তির মান্যতা দিল? একই সঙ্গে শ্রী সিমেন্ট কর্তারাই বা কেন আইনজীবী নিয়ে ‘ক্যাশে’ গেল?
উমেদ সিংয়ের সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি ‘ক্যাশ’ জানিয়ে দিয়েছে, উমেদ সিংয়ের চুক্তি বৈধ। ইস্টবেঙ্গলকে উমেদের চুক্তি মতো ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। সঙ্গে ক্যাশে আইনজীবী নিয়োগের জন্য যা খরচ হয়েছে সেই আর্থিক দাবিও মেটাতে হবে। আর সেই টাকাটাও নেহাত কম নয়। আর এই টাকা যতদিন না মেটানো হবে, ততদিন ব্যান উঠবে না। আগে ছিল ফেডারেশনের। উমেদ সিংয়ের ঘটনার পর ফুটবলার রেজিষ্ট্রেশনের ব্যাপারে ব্যানের সিদ্ধান্ত আসতে চলেছে ফিফার। তবে ফিফার তরফে উমেদ সিংয়ের ব্যাপারে ‘ক্যাশের’ এই সিদ্ধান্তের চিঠি ফেডারেশন দফতরে এখনও এসে পৌঁছয়নি। তবে উমেদ সিং নিয়ে ‘ক্যাশ’ কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রী সিমেন্ট এবং ইস্টবেঙ্গল দু’তরফের কর্তারাই জেনে গিয়েছেন। সরকারি ভাবে চিঠি আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
শ্রী সিমেন্টের তরফে বলা হচ্ছে, “আমরা যেহেতু সরকারি ভাবে সেই সময়ে ছিলাম, সেই কারণেই উমেদের ঘটনা নিয়ে আমাদের ক্যাশে আবেদন করতে হয়েছিল। কিন্তু সই আমরা করাইনি।”
তাহলে কি উমেদের বকেয়া টাকা শ্রী সিমেন্ট দেবে? এ ব্যাপারে শ্রী সিমেন্টের কেউ মুখ খুলে আর বিতর্ক বাড়াতে চাইছেন না।