shono
Advertisement

টালা ব্রিজের নকশার অনুমোদন দিল রেল, দেড় বছরে নির্মাণ শেষের দাবি পূর্তমন্ত্রীর

ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে ব্রিজের পাইলিংয়ের কাজ।
Posted: 10:58 PM Dec 25, 2020Updated: 10:58 PM Dec 25, 2020

কৃষ্ণকুমার দাস: দক্ষিণের মাঝেরহাটের পর এবার দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ধাঁচেই উত্তরের টালাতেও ঝুলন্ত সেতু (কেবল ব্রিজ) তৈরি হচ্ছে। পুরোনো টালা ব্রিজে (Tala Bridge) লাইনের মাঝে পিলার ছিল, কিন্তু এবার লাইনের উপরে ২৪০ মিটার অংশের পুরোটাই কেবলের উপরে ঝুলবে। দফায় দফায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠক ও পর্যবেক্ষণ শেষে চার লেনের ৬১০ মিটার দীর্ঘ টালা সেতুর নয়া নকশা অনুমোদন করেছে পূর্ব রেল (Eastern Railways)। নয়া সেতুটি নির্মাণে রাজ্যের খরচ হচ্ছে প্রায় ২৬০ কোটি।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শুক্রবার জানিয়েছেন, “প্রথম দফায় নকশা অনুমোদন দিয়েছে রেল, এখনও অনেকগুলি পর্যায়ে রেলের সম্মতি লাগবে। ওয়ার্ক অর্ডারে মাত্র দেড় বছর হাতে পেয়েছি। রেল সহযোগিতা করলে আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নয়া সেতু খুলে দিতে পারবেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী।” পূর্ত দপ্তর সূত্রে খবর, উত্তর কলকাতা ও উত্তর শহরতলির অন্যতম ‘লাইফ লাইন’ নয়া টালা ব্রিজের নির্মাণ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পূর্ণ হবে।

[আরও পড়ুন: ট্যাবের বদলে টাকা পেতে ৩ দিনের মধ্যে দিতে হবে অ্যাকাউন্ট নম্বর! সমস্যায় পড়ুয়ারা]‌

মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধনের আগে অনুমোদনে গড়িমসির অভিযোগ নিয়ে রেল দপ্তরের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বাগযুদ্ধে চরমে পৌঁছেছিল। বিষয়টি শেষে বিজেপি-তৃণমূলের ময়দানি মিছিল–বিক্ষোভে পৌঁছায়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মাঝেরহাট সেতু উদ্বোধনে গিয়ে বিলম্বে চালুর দায় রেলের ঘাড়েই চাপান। কিন্তু এবার রাজ্যকে সেই বিলম্বের অভিযোগের সুযোগ দিতে যে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার, তা এদিন রেলকর্তাদের কথায় স্পষ্ট। তাঁদের কথায়, গত ১৪ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তরের সঙ্গে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা বৈঠক করেন। এরপর গত ২২ ডিসেম্বর প্রাথমিকভাবে ব্রিজ তৈরির জন্য নকশার অনুমোদন করেছে রেল। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য পূর্তমন্ত্রীর মন্তব্য, “এটা তো শুধু নকশায় অনুমোদন। যেহেতু ওই ব্রিজের নিচ দিয়ে কলকাতা স্টেশনের ট্রেন যাতায়াত করবে তাই রেলের সেফটি কমিশনার থেকে শুরু করে অনেকগুলি ধাপেই দ্রুত অনুমতি জরুরি।”

পুরোনো তিন লেনের টালা ব্রিজটি প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে তৈরি হয়ে চালু হয় ১৯৬২ সালে। তখন এটির ভারবহনের সক্ষমতা ছিল মাত্র ১৫০ টন। নয়া কেবল ব্রিজটি সর্বোচ্চ ৩৮৫ টন ভারবহন করতে পারবে। ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেসের নয়া সিদ্ধান্ত মেনে নয়া ব্রিজটি যুদ্ধের সাঁজোয়া গাড়ি বা ট্যাঙ্কের ভারবহনও করতে পারবে। অনুমোদিত নকশায় পাইকপাড়া দিকে সেতুর অ্যাপ্রোচ ১৯০ মিটার এবং চিৎপুরের দিকে ১৮৭ মিটার অ্যাপ্রোচ থাকছে। ঝুলন্ত অংশ ছাড়াও সেতুর অবশিষ্ট ১৮০ মিটার পিলারের উপর থাকছে।

[আরও পড়ুন: ‘আপনার প্রতি বিশ্বভারতীর আচরণে আমি মর্মাহত’, অমর্ত্য সেনকে চিঠি মমতার]‌

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে টালা ব্রিজে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে পুরোনো বিপজ্জনক সেতুটি ভেঙে ফেলেছে। লাইনের উপরের অংশ ভাঙতে রেল রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ৫৫ লাখ টাকা নিয়েছে। অবশ্য রেলের নকশা অনুমোদনের অপেক্ষা না করেই, মাস কয়েক আগে লাইনের অংশ বাদ রেখে সেতু নির্মানের কাজ শুরু করেছে লারসেন এন্ড টুব্রো। কিন্তু পিলার পাইলিংয়ে নেমে মাটির নিচে দফায় দফায় থমকে গিয়েছে কাজ। সেতু নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত দপ্তরের শীর্ষ ইঞ্জিনিয়ার এদিন জানান, ‘‌‘‌দিন–রাত ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে সাতদিনই কাজ চলছে। বড়দিনে সবার ছুটি থাকলেও আমাদের ছুটি নেই, দেখুন আজও কত সেট মিস্ত্রি কাজ করছে।’’‌‌ দু’টি ব্রিজ দেখতে এবং নির্মাণ কৌশল এক হলেও মাঝেরহাটের চেয়ে কম সময়ে টালা সেতু সম্পূর্ণ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement