shono
Advertisement
Sanghati Divas

মিলন মহান

ভারতবাসীর কাছে ৬ ডিসেম্বর মানে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে শপথগ্রহণের দিন।
Published By: Biswadip DeyPosted: 11:22 AM Dec 06, 2025Updated: 11:22 AM Dec 06, 2025

‘সংহতি দিবস’-এর মূল লক্ষ‌্য হওয়া উচিত নিরপেক্ষ ভারত গড়ে তোলার প্রয়াস। ধর্মের জঁাতাকলে পড়ে, তা যেন বিঘ্নিত না হয়।

Advertisement

ভারতবাসীর কাছে ৬ ডিসেম্বর মানে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে শপথগ্রহণের দিন। দেশের বহু রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন গত তিন দশক ধরে দিনটিকে ‘সংহতি দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে। ‘বৈচিত্রের মধে‌্য ঐক‌্য’-ই হল অামাদের রাষ্ট্রের মূল ভাবনা। এই কথাটিই প্রত্যি বছর ৬ ডিসেম্বর অামরা স্মরণ করে থাকি।

এ বছরের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩ বছর পূর্ণ হবে। ১৯৯২ সালে একদল কট্টর হিন্দুত্ববাদীর হাতে বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়। তারপরে দেশ সাক্ষী ছিল ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার। মৌলবাদী বা দাঙ্গাকারীরা ভারতে কখনও শেষকথা বলতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ঐক‌্য ও সংহতির ভাবনাই সবসময় জয়ী হয়েছে। রক্তক্ষয়ী দেশভাগের পর যেমন ঐক‌্যবদ্ধ ভারতকে জেগে উঠতে অামরা দেখেছি– তেমনই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের গ্লানি কাটিয়ে ফের ঐকে‌্যর সুর বিরাজ করতে দেখা গিয়েছে।

তবে গত তিন দশক ধরে মৌলবাদীরা একের-পর-এক ধর্মীয় স্থান ঘিরে বিতর্ক বাধিয়ে চলেছে। ফলে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো কঠিন চ‌্যালেঞ্জের মুখে। এই প্রেক্ষিতে এ বছর সংহতি দিবস পালন করা বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকে বাদ দিয়ে ভারতে গণতন্ত্র বঁাচিয়ে রাখা কঠিন। ফলে ৬ ডিসেম্বর ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে শপথগ্রহণ এককথায় গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখার অঙ্গীকার গ্রহণ। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলার নিষ্পত্তি হলেও তাতে সুবিচার মিলেছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু মানুষের বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত মসজিদের ধ্বংসাবশেষের উপর মন্দির নির্মাণে সায় দিয়েছে। অযোধ‌্যায় সেই মন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণও হয়েছে। শীর্ষ আদালতের রায় মেনে অবশ‌্য এখনও নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যায়নি। অযোধ‌্যায় নবনির্মিত রাম মন্দির অবশ‌্যই দেশের অন্যতম দর্শনীয় নির্মাণে পরিণত হয়ে উঠুক। কিন্তু এই কাঠামো যেন কোনওভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বার্তা না-ছড়ায়, তা নিশ্চিত করাও প্রয়োজন।

প্রতি বছর এই নির্ধারিত দিনে দেশবাসীকে ঐক‌্যরক্ষার অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে ঊর্ধ্বে তুলে গণতন্ত্রের জয়ধ্বজা নিয়ে ভারত এগিয়ে চলুক– এই স্বপ্নই যেন থাকে সমগ্র দেশবাসীর চোখে। মন্দির-মসজিদ ঘিরে বিতর্ক যাতে চিরতরে অবসান হয়, সে বিষয়েও আমাদের বিচারব‌্যবস্থার উচিত আরও বিশেষভাবে সক্রিয় ও সচেষ্ট হয়ে ওঠা।
মন্দির, মসজিদ বিতর্ককে প্রশ্রয় না-দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের সাধারণ মানুষকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সেই কাজটিও ৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে শুরু হওয়াই কাম‌্য। কারণ, এখন বড় চ‌্যালেঞ্জ দেশের অর্থনীতি মজবুত করে তোলা। এই চ‌্যালেঞ্জ যেন কোনওভাবেই ধর্মীয় উত্তেজনার বিভাজনের দ্বারা দিক্‌ভ্রষ্ট না হয়। যত দিন যাবে ততই এই দিনের তাৎপর্য বৃদ্ধি পাবে। ভারতের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো, মজবুত হবে গণতন্ত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ভারতবাসীর কাছে ৬ ডিসেম্বর মানে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে শপথগ্রহণের দিন।
  • দেশের বহু রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন গত তিন দশক ধরে দিনটিকে ‘সংহতি দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে।
  • ‘বৈচিত্রের মধে‌্য ঐক‌্য’-ই হল অামাদের রাষ্ট্রের মূল ভাবনা।
Advertisement