দেব গোস্বামী, বোলপুর: একদিকে যেমন তিনি বিধায়ক ভাতা পেতেন, ঠিক তেমনই স্কুলে না এসেই মাসে-মাসে পেতেন শিক্ষকের বেতনও। নিয়োগ দুর্নীত কাণ্ডে তাঁর গ্রেপ্তারির পর এহেন চাঞ্চল্যকর একের পর এক তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে গত ছ’মাস ধরে স্কুলে যাননি। অবশেষে মে মাস থেকে জীবনকৃষ্ণ সাহার বেতন বন্ধ করল বীরভূমের নানুরের দেবগ্রাম হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, ১৬ এপ্রিল ভোরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড়ঞার বিধায়ককে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তারপর থেকেই জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করে। নিয়োগ দুর্নীতি তো বটেই, আয়-বহির্ভূত সম্পত্তি বাড়ানোর অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, সিবিআই হেফাজতে থাকা জীবনকৃষ্ণ বিধানসভা থেকে বেতন পাচ্ছেন প্রতি মাসে ৮২ হাজার টাকা। ভাতা হিসেবে ১৮ হাজার টাকা এবং বিধানসভার বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগ দিলে আরও ৬৪ হাজার টাকা প্রাপ্য জীবনকৃষ্ণর।
[আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগ, এবার সিবিআই আদালতের বিচারককেই সাসপেন্ড করল হাই কোর্ট]
মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও বীরভূমের নানুরের দেবগ্রাম হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। স্কুল ও বিধানসভা থেকে সবমিলিয়ে মাস মাইনে বাবদ পেতেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। একইসঙ্গে বিধায়ক ও স্কুল শিক্ষকের বেতন তুলতেন কীভাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকলেও তাঁর বেতন কীভাবে চালু থাকল তা নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সুনীল মণ্ডল ও রীতা দাসের মতো স্কুলের একাধিক অভিভাবকদের দাবি, তিনি না কি খুব একটা স্কুলে আসতেন না। ওঁকে স্কুলে খুব একটা দেখতে পাওয়া যেত না।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মানব আচার্য বলেন, “স্কুলের প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারি। তিনি সই করেন। আমি প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি নই। বেতন বন্ধ বা চালু করার আমার কোনও এক্তিয়ার নেই”। যদিও দেবগ্রাম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কমলকৃষ্ণ ঘোষ জানান, স্কুল থেকে রেজুলেশন করে স্কুল পরিদর্শককে ইতিমধ্যেই জীবনকৃষ্ণ সাহা ছয় মাসের অধিক ছুটি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উনি যে বিধায়ক সে বিষয়েও কখনও লিখিতভাবে কিছু জমা দেননি। জেলার স্কুল পরিদর্শক চন্দ্রশেখর জাউলিয়া বলেন,”ছুটি শেষ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বেতন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুলে সমস্ত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে প্রধান শিক্ষককে।”