সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নীল রাস্তা। প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ গড়তে পথ দেখাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান (East Burdwan) জেলা। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী দিয়ে নির্মিত আরও একটা নতুন রাস্তা তৈরি হল জেলায়। নবরূপ পেল গ্রামের আঁকাবাঁকা পথ। মেমারি-২ ব্লকের সাতগাছিয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়বাটি গ্রামে তৈরি হয়েছে আধুনিক, পরিবেশবান্ধব এই রাস্তা। মঙ্গলবার এই রাস্তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
প্লাস্টিকমুক্ত (Plastic free) নির্মল পঞ্চায়েত, নির্মল গ্রাম গড়তে জেলার ২১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই গড়ে উঠছে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। কিছু পঞ্চায়েতে তা চালু হয়ে গিয়েছে। কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই কেন্দ্র চালুর অপেক্ষায়। এখানে পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথক করে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার পর তা পুনর্ব্যবহারযোগ্য (Reusable) করে তুলতে নির্দিষ্ট কারখানায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া এই বর্জ্য প্লাস্টিক পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে প্লাস্টিক মুক্ত পরিবেশ গড়তে নয়া দিশা পেয়েছে পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) গ্রাম বাংলা।
[আরও পড়ুন: বিরিয়ানির বদলে জিরা রাইস! গ্রাহক-কর্মী অশান্তিতে ধুন্ধুমার রেস্তরাঁয়]
সাতগাছিয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ গোলাম মোস্তাফা জানান, রায়বাটি এলাকায় পঞ্চায়েতের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ওই বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত এই নীল রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। যে রাস্তার উপাদান হিসেবে বিটুমিনের সঙ্গে বর্জ্য প্লাস্টিক মিশ্রিত করে ব্যবহার করা হয়েছে। এই বর্জ্য প্লাস্টিক সংগ্রহ করা পাশের বোহার গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র থেকে। তাঁদের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি চালু হয়ে গেলে পরবর্তীতে নীল রাস্তা নির্মাণে সেখান থেকেই প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া যাবে।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতগাছিয়া-১ গ্রামে তৈরি হওয়া নীল রাস্তাটি ৩ মিটার চওড়া। দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। রাস্তাটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৫৭ টাকা। রাজ্য অর্থ কমিশনের (২০২২-২৪ অর্থবর্ষ) টায়েড প্ল্যানে ট্রাইবাল এরিয়া ডেভলপমেন্টের অধীনে এই রাস্তা নির্মিত হয়েছে। এর আগেও মেমারি-২ ব্লকে প্লাস্টিক মিশ্রিত বিটুমিন রাস্তা গড়া হয়েছে। তবে তার রঙ নীল ছিল না। সাধারণ পিচ রাস্তার মতোই ছিল।
[আরও পডুন: ‘মণিপুরের সঙ্গে তুলনীয় নয়’, সন্দেশখালি ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করল না শীর্ষ আদালত]
জেলায় প্রথম নীল রাস্তা গড়া হয় রায়না-২ ব্লকের উচালন গ্রাম পঞ্চায়েতের একলক্ষ্মী টোল প্লাজা থেকে রাউতাড়া পর্যন্ত। তার পর দ্বিতীয় নীল রাস্তা পেল জেলা। এই রাস্তা সাধারণ পিচের রাস্তার তুলনায় বেশি টেকসই, পরিবেশবান্ধব। তবে তৈরিতে খরচ একটু বেশি হয়। মঙ্গলবার সাতগাছিয়া-১ পঞ্চায়েতের নীল রাস্তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকার কথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিশেষ সচিব অনামিকা মজুমদার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, জেলাশাসক বিধান রায়ের।