সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ডুমস ডে’ বা প্রলয়ের দিন কি ঘনিয়ে এসেছে? না অ্যানথ্রেক্স হামলার মতো সন্ত্রাসবাদী ছক? ফেসবুকের অফিসে বিষাক্ত সারিন গ্যাস হামলায় উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। যার সদুত্তর এখনও পর্যন্ত মেলেনি।
[আরও পড়ুন: অনুমতি দিল না আদালত, থমকে গেল মালিয়াকে ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া]
মঙ্গলবার সকালের ঘটনা। ফেসবুক সদর দপ্তরের কাছে তাদের যে বিশাল মেল রুম সেখানেই বেলা ১১টা নাগাদ এসে পৌঁছায় একটি রহস্যজনক প্যাকেট। প্রেরকের নাম ঠিকানাহীন ওই প্যাকেটটি পরীক্ষার জন্য পাঠাতেই তাতে বিষাক্ত সারিন গ্যাসের উপস্থিতি টের পায় ফেসবুকের নিরাপত্তা বিভাগ। সঙ্গে সঙ্গেই ছড়ায় আতঙ্ক।
আসলে এই সারিন একধরনের রাসায়নিক যুদ্ধাস্ত্র। মারণ গ্যাস। যার রং, গন্ধ বা স্বাদ কিছুই নেই। আপাত তরল মারাত্মক এই নার্ভ এজেন্ট বাতাসের সংস্পর্শে এলেই মুহূর্তে তা বাষ্পের মতো মিশে যায়। আর সেই বিষাক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিলেই আক্রান্ত হয় মানুষ। এতটাই জোরালে এর প্রভাব যে একফোঁটা সারিন মানুষের ত্বকে পড়লে তা মাত্রাতিরিক্ত ঘাম এবং পেশীতে প্রবল ঝাঁকুনির সৃষ্টি করতে পারে। সামান্য বেশি পরিমাণ শরীরের সংস্পর্শে এলে, তা পক্ষাঘাতগ্রস্ত করতে পারে। বন্ধ করে দিতে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া, হতে পারে মৃত্যু।
তাই স্বাভাবিকভাবেই ফেসবুকের দুপরে সারিন গ্যাসের কথা শুনে আতঙ্ক ছড়ায় ফেসবুক মেলরুম ও তার সংলগ্ন চারটি অফিসে। দ্রুত খালি করে দেওয়া হয় অফিস। কর্মীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপদ এলাকায়। তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়। যদিও কেউই সারিন গ্যাস বা তার ভয়াবহ প্রভাবে আক্রান্ত হননি বলে জানানো হয়েছে ফেসবুকের তরফে।
ফেসবুক মুখপাত্র অ্যান্টনি হ্যারিসন একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে এখনও পরীক্ষা চলছে। বিশেষজ্ঞরা এখনও ওই প্যাকেজে সারিন গ্যাসের অস্তিত্ব রয়েছে বলে নিশ্চিত হতে পারেননি। আপাতত মেলরুমের মূল অফিসটি বাদে বাকি তিনটি অফিসে কাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে কর্মীদের নিরাপত্তার খাতিরে মেলরুমের মূল অফিসটিকে খালি রাখা হয়েছে। হ্যারিসন জানিয়েছেন, নিরাপত্তা পরীক্ষায় প্যাকেজটিতে সারিনের উপস্থিতি ‘পজেটিভ’ হিসাবে ধরা পড়েছিল। ঘটনায় তদন্ত শুরু করছে এফবিআই।
[আরও পড়ুন: দাউদ-আইএসআই ঘনিষ্ঠতা ফাঁসের ভয়, মতিওয়ালার প্রত্যর্পণ ঠেকাতে মরিয়া পাকিস্তান]
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে ‘ডুমস ডে কাল্ট’ বা প্রলয়ে বিশ্বাসী একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টোকিও শহরের সাবওয়ে সিস্টেমে ভয়াবহ সারিন গ্যাস হামলা চালায়। ওই হামলায় মৃত্যু হয়েছিলে ১৩ জনের। ফলে ফেসবুকের অফিসে সারিন প্যাকেজ পাঠানোর নেপথ্যে সেরকমই কোনও সংগঠনের হাত থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। একইভাবে ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যানথ্রেক্স জীবাণু ভরতি চিঠি পাঠিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। এফবিআইয়ের খাতে সেই ঘটনা ‘আমেরিথ্রেক্স’ নামে নথিবদ্ধ রয়েছে। ফলে এই ঘটনার নেপথ্যে সন্ত্রাসবাদী হামলার সম্ভাবনার দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
The post ফেসবুক দপ্তরে মারণ গ্যাস সারিন, নেপথ্যে কি ‘ডুমস ডে কাল্ট’? appeared first on Sangbad Pratidin.