অর্ণব আইচ: নেপাল থেকে কলকাতায় এসে যমুনা হয়ে গিয়েছিলেন জিতা। এখানেই ভুয়ো কাগজপত্র বানিয়ে জিতা সেজে থাকতে শুরু করেছিলেন যমুনা। কিন্তু পাসপোর্ট জোগাড় করে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে গিয়েই ধরা পড়লেন তিনি। এই তথ্য সামনে আসার পর গোয়েন্দারা খোঁজ নিতে শুরু করেছেন, বিদেশে মানুষ পাচারের কোনও চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে কি না। এমনকী, তার জন্য ওই চক্র জাল পাসপোর্ট তৈরি করছিল বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।
[পাকিস্তানের মাটিতে খলিস্তানপন্থী নেতার সঙ্গে সিধুর ছবি, তীব্র সমালোচনা বিজেপির]
কয়েক বছর আগে কলকাতা থেকে পাক চর আইএসআই এজেন্টরা ধরা পড়ার পর ধৃতদের সূত্র ধরে বেনিয়াপুকুর ও কড়েয়ায় জাল পাসপোর্ট তৈরির চক্রের সন্ধান মেলে। ওই চক্রটি যে কলকাতা থেকে আইএসআই এজেন্টদের বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য জাল পাসপোর্ট তৈরি করে দিত, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছিলেন গোয়েন্দারা। এবার এই নেপালি যুবতীর সন্ধান মেলার পর ফের নতুন করে গোয়েন্দা পুলিশ এই চক্রের বিষয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বহু আগেই নেপাল থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে কাজের আশায় এসেছিলেন যমুনা। নেপালের গোর্খা জেলার ওয়ারপার্ক গ্রামে তাঁর বাড়ি। কলকাতায় এসে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় কড়েয়া এলাকার এক যুবকের সঙ্গে। ফারদিন নামে ওই যুবক যমুনাকে এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। কড়েয়া এলাকার শামসুল হুদা রোডের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন যমুনা। এখান থেকেই কাজের উদ্দেশে তাঁকে বিদেশে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু নেপাল থেকে আসা ওই যুবতীর কাছে ভারতীয় কোনও পরিচয়পত্র বা নথি ছিল না। তাই এখান থেকে পাসপোর্ট জোগাড় করাও সম্ভব ছিল না। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, নেপালের যমুনার নাম ও পরিচয় পালটে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় কড়েয়ার ওই যুবক। তাতে রাজি হয়ে যান ওই নেপালি যুবতী। কড়েয়ায় বসেই নেপালের যুবতী হয়ে যান কলকাতার জিতা কুমারী ঘালে।
ওই যুবকের সাহায্যে ধীরে ধীরে তাঁর হাতে এসে যায় জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড। কড়েয়ার বাসিন্দা হিসাবেই তাঁর পরিচয় দেওয়া হয়। জাল পরিচয়পত্রগুলির সূত্র ধরে তিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। গত মে মাসে তিনি পাসপোর্টও পেয়ে যান। এর পরই তাঁকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু প্রস্তুতিপর্বেই গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, ওই যুবতী আদৌ কলকাতার বাসিন্দা নন। ১৯৮১ সালের আগস্ট মাসে নেপালের গোর্খা জেলার ওয়ারপার্কে তাঁর জন্ম হয়। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, যে নথিপত্রগুলি ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে, সেগুলি জাল।
[অবতরণের সময় বহুতলে ধাক্কা বিমানের, অল্পের জন্য রক্ষা যাত্রীদের]
The post কড়ি ফেললেই মিলছে ভারতীয় পরিচয়, শহরে সক্রিয় আইএসআই চক্র appeared first on Sangbad Pratidin.