সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাষ করে আখ উৎপাদনে দীর্ঘ সময়ে বিপত্তি। সঙ্গে রয়েছে সেচের জলের সমস্যা। ফলে ক্ষতির মুখে আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন জেলার চাষিরা। মুর্শিদাবাদের কৃষকরা জানাচ্ছেন, সারা বছরের মধ্যে দশ মাস ধরে এই আখ চাষ করতে হয়। বীজ রোপণ থেকে আখ তৈরি পর্যন্ত কখনও এক বছর সময় লাগে। অন্যান্য ফসলের থেকে পরিশ্রম বেশি হলেও এই চাষ করে মিলছে না ন্যায্য মূল্য। আর সেই কারণেই কার্যত মুর্শিদাবাদের বড়ঞা-সহ বিভিন্ন ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এখন প্রায় বন্ধের পথে এই আখ চাষ। কৃষকরা বিকল্প হিসেবে আলু, ধান চাষে ঝুঁকছেন।
কান্দির মহকুমা কৃষি উপ অধিকর্তা পরেশনাথ বল বলেন, “কান্দি মহকুমার মধ্যে সব থেকে বেশি আখ উৎপাদন হয় বড়ঞা থানা এলাকায়। এরপর ভরতপুর ব্লকে। এলাকায় বড়ঞার সুন্দরপুর, বাহাদুরপুর, কয়থা, প্যাটারি, তারাপুর, মামুদপুর, ভরতপুর থানা এলাকার বিন্দাবনপুর, হরিশ্চন্দ্রপুরে পর্যাপ্ত আখের চাষ হয়। এবছর বড়ঞা এবং ভরতপুর ব্লক মিলে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। তবে সারা বছর আখ চাষ করে যে লাভ কৃষকদের হয়, তার থেকে সারা বছর ধরে অন্য কিছু চাষ করলে দ্বিগুন লাভ পান কৃষকরা। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই আখ চাষে বিমুখ হচ্ছেন চাষিরা।”
মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার বড়ঞা এবং ভরতপুর এক এলাকার মূলত নদী তীরবর্তী জমিতে আখের চাষ করেন কৃষকরা। ভরতপুর থানার হরিশ্চন্দ্রপুর ও বিন্দারপুর এলাকার কৃষক মনিরুল শেখ, তপন দাস, নিধুবন মণ্ডল প্রমুখরা জানিয়েছেন, “পাঁচবছর আগেও আখের চাষ করে লাভ পেতাম। কিন্তু এখন আখের চাষ করে মুনাফা নেই। কারণ একটা জমিতে আখের চাষ করলে সারা বছর আর কোনও ফসলের চাষ করা যায় না।” চাষিরা আরও জানান, “দেখা যাচ্ছে সারাবছর আখ চাষে খেতে ফাগুন, চৈত্র মাসে থেকে যে গুড় তৈরি করা হয়। যদিও তার ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায়না। বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা প্রতি কেজি দরে গুড় মিলছে বাজারে। আমাদের কাছে পাইকারি দাম আরও কম। দেখা যায় সারা বছর এক বিঘা আখের জমিতে খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। উৎপাদিত আখ বিক্রি করে মেলে মাত্র ১৪ হাজার টাকা। ফলে বিঘা প্রতি ক্ষতি হয় প্রায় ছয় হাজার টাকা।”
