বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আমন ধানের বীজতলা ঝলসে হলুদ হয়েছে। ধান চারার আকাল উত্তরের গ্রামে। এদিকে সেচের জল দিয়ে যারা চারা বুনেছিলেন তাদেরও খেতের মাটি প্রখর রোদের তাপে ফুটিফাটা হয়েছে। কৃষিকর্তাদের শঙ্কা, এবার আমন ধানের উৎপাদন উদ্বেগজনকভাবে কমতে পারে। উঁচুজমিতে এখনও ধান বোনা সম্ভব না হওয়ায় মার খেতে পারে পুজোর সবজি উৎপাদন। জলপাইগুড়ি জেলার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর বিপ্লব দাস বলেন, "এই সময় ৬০ শতাংশ জমিতে ধানচারা রোপণের কাজ শেষ হয়ে যায়। এবার মাত্র ৪০ শতাংশ জমিতে ধান বোনা হয়েছে। জলের অভাবে সেটার অবস্থাও উদ্বেগজনক। বৃষ্টি ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলার বিকল্প কোনও পথ নেই।"
ধান সঠিক পরিমাণে উৎপাদন না হলে কত টাকার ক্ষতি হতে পারে? সেই প্রশ্নও উঠছে। শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হলে কতটা সময় আমন ধান চাষে সময় পাওয়া যাবে? সেই প্রশ্নও উঠছে। ভরা বর্ষায় প্রখর রোদের দাপট। অসহ্য গরম। রবিবার তাপমাত্রার পারদ চড়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাতে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হলেও কাজে লাগেনি। মাঠে জল জল দাঁড়ায়নি। জলের অভাবে উঁচু জমিতে ধান চারা বুনতে পারছেন না চাষিরা। নিচু জমিতেও জলের টান ধরেছে।
কিছু চাষি ঘন্টায় দুশো টাকা খরচ করে সেচের জলে নিচু জমিতে ধানের চারা বুনেছিলেন। সেখানেও খরার মতো মাটি ফুটিফাটা হয়েছে। ধানের বীজতলা ঝলসে হলুদ হয়েছে। নতুন করে বুনবেন সেই চারা মিলছে না গ্রামে। এমন পরিস্থিতিতেও ভারী বর্ষণের সুখবর দিতে পারছেন না আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা। তারা জানিয়েছেন, আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত একই পরিস্থিতি চলতে পারে। কৃষিদপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, তেমন হলে এবার ধানের ফলন উদ্বেগজনকভাবে মার খাবে। শুধু তাই নয়। উঁচু জমিতে ধান কেটে নেওয়ার পর শুরু হয় পুজোর সবজি চাষ। এবার সেটাও মার খাবে। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের উত্তর মাধবডাঙা গ্রামের ধান চাষি গৌরাঙ্গ শর্মা বলেন, "জলের অভাবে গ্রামের প্রত্যেকের ধানখেতের মাটি শুকিয়েছে। ধানচারা হলুদ হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।"
