shono
Advertisement
Tea

সবুজখেকো পোকার হামলা, উত্তরের চা উৎপাদন কমতে পারে প্রায় ৩০ শতাংশ

মাথায় হাত উত্তরের চা চাষিদের।
Published By: Sayani SenPosted: 07:47 PM May 28, 2025Updated: 07:47 PM May 28, 2025

স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: বর্গির হানা বললেও কম বলা হবে। 'লুপার ক্যাটার পিলার' নামে সবুজ খেকো পোকার হামলায় বিঘার পর বিঘা চা বাগানে দুটি পাতা একটি কুড়ি উধাও হতে বসেছে। কঙ্কালসার চেহারা দেখে মনেই হবে না ওটা চা বাগান। বড় চা বাগানের পাশাপাশি এমন দুর্যোগের কবলে পড়ে দিশাহারা হয়েছেন উত্তর দিনাজপুর, তরাই এবং জলপাইগুড়ি জেলার কয়েক হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ওই পরিস্থিতিতে চা পাতা উৎপাদন প্রায় ৩০ শতাংশ কমতে পারে।

Advertisement

বিঘার পর বিঘা চা বাগানের শুধু যে পাতা খেয়ে সাবার করেছে সেটাই নয়। গাছের ডাঁটা চিবিয়ে শেষ করেছে লুপার ক্যাটার পিলার। চা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকদের মতে তাপমাত্রার দ্রুত ওঠা-নামার কারণে বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে লুপার। এপ্রিলে অনাবৃষ্টি, অসহ্য গরম ছিলো। মে মাসে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রা দ্রুত ওঠানামা করছে। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে ঝড়ের গতিতে বংশবিস্তার করে একের পর এক বাগানে ছড়িয়ে সর্বনাশ ডেকেছে। চা গবেষকদের মতে, এটা একদিকে ভারী বর্ষণ অন্যদিকে গরমের কারণে হয়েছে। এর ফলে চা পাতা উৎপাদন অনেকটাই মার খাবে।

চা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসে উত্তরে ৫০ মিলিয়ন কেজি সবুজ চা পাতা উৎপাদন হয়ে থাকে। এবার লুপার হানায় ৩৫ মিলিয়ন কেজি পাতা উৎপাদন হয় কি না সন্দেহ আছে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "ক্ষুদ্র চা চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়েছে। একদিকে অনাবৃষ্টি-অতিবৃষ্টি অন্যদিকে রোগ পোকার আক্রমণে নাজেহাল দশা। কাঁচা পাতার উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমবে।"

চা চাষিরা জানিয়েছেন, মে মাসের গোড়া থেকে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বর্ষণ হলেও তাপমাত্রা কমেনি। মাঝেমধ্যে কয়েকদিন রোদের মুখ দেখা যায়নি। এর ফলে লালপোকা, চা মশা, লুপার ক্যাটার পিলারের উপদ্রব বেড়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি করেছে লুপার। রাতারাতি বিঘা পর বিঘা চা বাগানের সবুজ পাতা উধাও হয়েছে। কীটনাশক স্প্রে করেও পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব হয়নি। 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফোরাম অব স্মল টি গ্রোয়ার্স'-এর চেয়ারম্যান রজত কার্জি বলেন, "ফার্স্ট ফ্ল্যাশ ও সেকেন্ড ফ্ল্যাশ মার খেয়ে আশা ছিল আবহাওয়ার উন্নতি হবে। থার্ড ফ্ল্যাশে ঘাটতি মিটে যাবে। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। উলটে লোকসান বেড়েছে। এই পরিস্থিতি আরও কিছুদিন চললে অনেকে চা বাগান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন। কারণ, চা গাছ রক্ষা করতে ক্রমশ খরচ বাড়ছে। কিন্তু রোজগার নেই।"

চা চাষিরা জানিয়েছেন, লুপার ঠেকাতে অনেক কীটনাশক ব্যবহার করেছেন। লাভ হচ্ছে না। ময়নাগুড়ির রামশাই এলাকার চা চাষি মানিক সরাকার বলেন, "ওষুধ কিনতে দামের জন্য মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কাজ হচ্ছে না।" কেন এমনটা হল? চা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, চাষিরা সব সময় নিয়ম মেনে কীটনাশক প্রয়োগ করেন সেটা নয়। চটজলদি কাজের আশায় অনেক সময় নির্ধারিত মাপের বেশি কীটনাশক দিয়ে থাকেন। এর ফলে পোকামাকড়ের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। পরে সাধারণ কীটনাশকে কাজ হয় না। সেটাই এখানে হয়ে থাকতে পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সবুজখেকো পোকার হামলা।
  • মাথায় হাত উত্তরের চা চাষিদের।
  • কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ওই পরিস্থিতিতে চা পাতা উৎপাদন প্রায় ৩০ শতাংশ কমতে পারে।
Advertisement