বাবুল হক, মালদহ: নামে কালো, দামে সোনা! ব্ল্যাক রাইস। কেউ বলেন 'প্রিন্স অফ রাইস'। কালো নুনিয়া ধান। যার চাহিদা রয়েছে বাংলা জুড়েই। সেই চাহিদা মেটাতে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির পর এবার মালদহ জেলাতেও এই সোনার ধান চাষ করে প্রথম রাউন্ডেই সাফল্য পেলেন মালদহের হবিবপুরের এক কৃষক। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সোলাডাঙা গ্রামের বাসিন্দা রতন প্রামাণিক নামে ওই কৃষক নিজের জমিতে ব্ল্যাক রাইস চাষ শুরু করেন। ভালো ফলন যেমন হয়েছে, ঠিক তেমনই ভালো দামও পেয়েছেন তিনি। এবারও শীত মরশুমে চাষ শুরু করতে চলেছেন।
উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার, জলপাইগুড়ির পাশাপাশি দার্জিলিং, কালিম্পং ও রায়গঞ্জের কিছু অংশে ব্ল্যাক রাইস চাষ হয়। সেই তালিকায় মালদহের নাম জুড়তে অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন সোলাডাঙার চাষি রতন প্রামাণিক। তিনি দিশা দেখাচ্ছেন এলাকার অন্যান্য কৃষকদেরও। এই সোনার ধান চাষ করে মালামাল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মালদহের রতন। ভারতের অসম, মণিপুরেও এই চাষ হচ্ছে। কালো চালের চাষ শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও। উত্তরবঙ্গে জৈব পদ্ধতিতে এই ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকারের কৃষি দপ্তর। পরীক্ষামূলকভাবে সরকারি সহায়তায় জৈব পদ্ধতিতে চাষ শুরু হবে আলিপুরদুয়ারের হ্যামিল্টনগঞ্জ এলাকায়। এতে কৃষকরা আরও লাভবান হবেন। মালদহের বুলবুলচণ্ডীর সোলাডাঙার রতনবাবুর এই ধানের খেত সবুজ নয়, দেখতে কালো। এই কালো ফসল ঘরে তুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। সোলাডাঙার বাসিন্দা রতন প্রামাণিকের উদ্যোগেই এই প্রথম 'ব্ল্যাক রাইস' চাষ শুরু হয়েছে হবিবপুরে। এনিয়েই এলাকাজুড়ে চাষিদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে।
রতনবাবুর কথায়, "মোবাইল ইউটিউবে ওয়েব সিরিজ দেখেই এই চাষ শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চাষ করে সফল হয়েছি। এলাকার চাষিদের এই চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করছি।" রতনবাবু বলেন, "অনলাইনে এই ধানের বীজ অর্ডার করছি। নিজের পাঁচবিঘা জমির মধ্যে আপাতত দু'বিঘা জমিতে এই কালো ধানের চাষ করছি। সাধারণ ধানের থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে এই কালো ধান বা চাল বিক্রি হচ্ছে। বাজারদাম অন্যান্য ধানের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। কৃষি দপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ মাঠে নামলে মালদহ জেলাতেও চাষিরা এই কালো ফসল ফলাতে শুরু করবেন। এই লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি।" জেলা কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, এই বিষয়ে চাষিদের পরামর্শ ও সব রকম সহায়তা করতে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
