shono
Advertisement
Nadia

পুষ্টিতে ঠাসা চাল, হারিয়ে যাওয়া সেই 'সানকেনে'কে বাঁচিয়ে নজির নদিয়ার লক্ষ্মণের

চাষ করতে মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়।
Published By: Kousik SinhaPosted: 07:14 PM Dec 02, 2025Updated: 07:14 PM Dec 02, 2025

রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: তাঁর নেশা সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ফসলকে বাঁচিয়ে রাখা! আর সেই নেশা থেকেই বাংলায় হারিয়ে যাওয়া 'সানকেনে' ধান চাষ করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন লক্ষণ প্রামানিক। এজন্য পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরষ্কারও। শুধু 'সানকেনে' ধান নয়, হারিয়ে যেতে চলা এমন কয়েক রকম ফসল বাঁচিয়ে রাখার জন্য লক্ষ্মণকে পুরস্কৃত করেছে কৃষিমন্ত্রক। এহেন অবদানের জন্য সারা ভারতবর্ষের মধ্যে মাত্র তিনজনকে এই পুরষ্কার দেওয়া হয়। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ডাক পেয়েছিলেন নদিয়ার লক্ষণ।

Advertisement

হোগলবাড়িয়া থানার জয়রামপুর অঞ্চলের হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ প্রামাণিক। ছোট থেকেই কৃষিকাজে ছিল তাঁর প্রবল আগ্রহ। আর সেই আগ্রহ থেকে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ফসল এবং সানকেনে ধান চাষ এবং সংরক্ষণ শুরু করেন। গত ৭-৮ বছর ধরে নিজস্ব উদ্যোগে এবং কল্যাণী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র ও বাংলার প্রকল্পের প্রযুক্তি সহায়তায় এই ধান সংরক্ষণ করেন লক্ষ্মণ। শুধু তাই নয়, গোবিন্দভোগ ধান চাষের প্রসার ও চাল বিপণনে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগও নিয়েছেন হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ।

কিন্তু কীভাবে হয় এই চাষ? লক্ষণ বলেন, ''রাসায়নিক সার ছাড়াই জলা জমিতেও সানকেনে ধানের চাষ করা সম্ভব। তাতে ভালো ফলন পাওয়া যায়।'' তাঁর কথায়, ''এই জাতের ধান চাষ এক প্রকার বিলুপ্তির পথে। কিন্তু এই ধানের চাল শরীরের পক্ষে ভীষণ পুষ্টিকর। বাজারে এর দামও ভালো।" এমনকী চাষের খরচ অনেকটাই কম বলেও জানাচ্ছেন লক্ষ্মণ প্রামাণিক। তাঁর কথায়, ''এক বিঘা জমিতে এই চাষ করতে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। ধান পাওয়া যায় প্রায় চার কুইন্টাল। বর্তমানে সেই ধানের বাজার মূল্য আড়াই হাজার টাকা প্রতি  কুইন্টাল।'' ফলে কম খরচ করে যারা বেশি লাভ পেতে চান তাঁদের জন্য সানকেনে ধানের চাষ একেবারে জথার্থ বলেই মন্তব্য লক্ষ্মণবাবুর।

পুরষ্কার হাতে লক্ষ্মণ প্রামাণিক। (নিজস্ব ছবি)

বলে রাখা প্রয়োজন, কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলা সুগন্ধি ধান প্রকল্প ও নদিয়া কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের যৌথ পরামর্শে ও সহায়তায় লক্ষণ ২০২৩ সালের অগস্ট মাসের ‘উদ্ভিদ প্রজাতি সুরক্ষা কৃষক’ পুরস্কারের জন্য আবেদন করেন। গত নভেম্বর নতুন দিল্লির পুসাতে অবস্থিত ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান সংস্থার ভারতরত্ন সি সুব্রামানিয়াম কনভেনশন সেন্টারে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কারের সঙ্গে নগদ এক লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অশোককুমার পাত্র বলেন, "হারিয়ে যাওয়া প্রজাতির বীজের সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। তবেই নতুন নতুন গবেষণায় সফলতা মিলবে। লক্ষণ প্রামাণিকের এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে গ্রাম বাংলার চাষিদের উৎসাহ বাড়াবে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাংলায় হারিয়ে যাওয়া 'সানকেনে' ধান চাষ করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন লক্ষণ প্রামানিক।
  • এজন্য পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরষ্কারও।
  • হারিয়ে যেতে চলা এমন কয়েক রকম ফসল বাঁচিয়ে রাখার জন্য লক্ষ্মণকে পুরস্কৃত করেছে কৃষিমন্ত্রক।
Advertisement