shono
Advertisement

Breaking News

Mango

এখনও গাছেই হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগ, আমের জেলা মালদহের বাজার কাঁপাচ্ছে চেন্নাইয়ের আম!

ফল বিক্রেতারা বলছেন, মালদহের 'লোকাল' আম বাজারে ঢুকতে আরও এক-দেড় মাস দেরি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 02:15 PM May 08, 2025Updated: 02:55 PM May 08, 2025

বাবুল হক, মালদহ: যে জেলার আমের বিশ্বজোড়া নাম, সেই মালদহ জেলার বাজারই কাঁপাচ্ছে চেন্নাইয়ের আম। গোলাপখাস আর প্যাইকুম্যান। চেন্নাইয়ের এই দুই প্রজাতির আম আসছে মালদহে। বিকোচ্ছে চড়া দামে। প্রতি কেজি আমের দাম ১০০ থেকে ১৪০ টাকা। তাতে কী? আম বলে কথা। মালদহের হোক কিংবা চেন্নাইয়ের। দরদামের পরোয়া করছেন না। আসলে আমের রঙ দেখেই জিভে জল। বাজারে ঢুঁ মেরে চেন্নাইয়ের এই আমই কিনছেন আম বিলাসীরা। কেউ কার্পণ্য করছেন না। কিন্তু আমের জেলা মালদহে চেন্নাইয়ের আমের দাপট কেন?

Advertisement

আসলে এখনও গাছেই রয়েছে মালদহের হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগ। অপরিণত, অপরিপক্ক। কিছুদিন আগেই হলুদ মুকুলে ভরেছিল মালদহের আমবাগান। গাছে গাছে গুটি গুটি আম ধরেছে। পরিপক্ক হতে আরও অন্তত এক-দেড় মাস সময় লাগবে। আর এই ফাঁকেই আমের জেলা মালদহের বাজার দখল করে নিয়েছে দক্ষিণ ভারতের আম। তামিল আম। চেন্নাইয়ের গোলাপখাস আর প্যাইকুম্যান। এই দুই প্রজাতির আম ফি বছর মালদহের দিকে তাকিয়ে থাকে। মালদহের আমবাগানে যখন মুকুল থেকে গুটি গুটি আম গজায়, ঠিক তখনই চেন্নাইয়ের আম আমদানি হয়। এখানে বাজার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এবারেও ব্যতিক্রম কিছু নেই।

মালদহের অধিকাংশ আমই এখনও গাছে!

ইংরেজবাজার শহরের ফল বিক্রেতারা বলছেন, মালদহের 'লোকাল' আম বাজারে ঢুকতে আরও প্রায় এক-দেড় মাস দেরি আছে। তাঁরা তাই দক্ষিণ ভারতের আম এনে তাঁরা বিক্রি করছেন। রসিক বাঙালি তা কিনছেনও। কিন্তু দুধের স্বাদ কি ঘোলে মেটে? চেন্নাইয়ের আম খেতে কেমন? ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, ভিনরাজ্যের আমের না আছে স্বাদ, না আছে গন্ধ। মিষ্টির বদলে টক। তবু দুধের স্বাদ ঘোলেই মেটাচ্ছেন তাঁরা। মালদহের আমবাগানে গাছে গাছে এখন প্রচুর আম। তবে এখনও পরিপক্ক হয়নি। আমে আঁটি ধরেনি। গাছে আমের ওজন এখন ৫০ কি ১০০ গ্রাম মাত্র। বাগান থেকে আম পেড়ে বাজারে পৌঁছতে আরও দেরি। অথচ আমের জেলা মালদহের বাজারে চেন্নাইয়ের আম দেখে শহরবাসীর জিভে জল আসতে শুরু করে। আমের লোভনীয় স্বাদ পেতে কে না চান?

তাই এই মুহূর্তে তামিলনাড়ুর আমেই ভরসা রাখছেন আমের জেলার আমজনতা। মালদহ শহরের চিত্তরঞ্জন মার্কেটের ফল ব্যবসায়ীরা জানান, গোলাপখাস আমের স্বাদ ও গন্ধ বেশ ভালো। প্যাইকুম্যান প্রজাতির যে দ্বিতীয় আমটি এসেছে, তা অবশ্য ততটা ভালো নয়। গোলাপখাস এখন বিকোচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে। আর প্যাইকুম্যান ১০০ টাকার কম নয়। আপাতত বাজারও দখল করে নিয়েছে দক্ষিণের এই দুই আম। এখনও অপুষ্ট মালদহের আম। ইংলিশবাজার শহরের চিত্তরঞ্জন মার্কেটের ফল ব্যবসায়ী অজয় রায় জানালেন, ফি বছর এই সময়ে জেলার আম বাজারে আসে না। দক্ষিণের গোলাপখাস-সহ দু'-একটি প্রজাতির আমই বাজারে আসে। মানুষ কিনছেনও।

মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক উত্তম বসাক বলেন, "মালদহে আম বড় হতে এখনও এক-দেড় মাস লাগবে। গাছে গাছে এখন কুলের মতো আম। দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই-সহ আন্যান্য রাজয়ে এখন আমের মরশুম। সেখানে আম পেকে যাচ্ছে। সেই আম লরিতে আসছে মালদহে। খুচরো ব্যবসায়ীরা তা কিনে খোলা বাজারে বিক্রি করছেন। সুস্বাদু ফল বলে মানুষ কিনছেন।" মালদহ জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, জেলায় ৩১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এই বছর প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে। ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসাপাতি, হিমসাগর, আম্রপালি, মল্লিকা, লক্ষ্মণভোগ-সহ অন্তত চল্লিশটি প্রজাতির আমের চাষ হচ্ছে এই জেলায়। এবার গরমে জেলার আম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ও পুষ্ট হয়ে উঠছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এই মরশুমে আগেই জেলার আম খেতে পাবেন আমরসিক বাঙালি। তখন আর ১০০ টাকা দরে চেন্নাইয়ের আম কিনতে হবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মালদহের বিখ্যাত সব আম এখনও গাছে!
  • নিজেদের ফল না পেয়ে চেন্নাইয়ের আমে মজেছেন মালদহবাসী।
Advertisement