সুনীপা চক্রবর্তী, বেলিয়াবেড়া: গোলার ধান আর পুকুরের মাছ। বঙ্গ জীবনের স্লোগান ছিল। ট্যাংরা তবু কাটোন যায়, মাগুর মাছে ক্যাতক্যাতায়, আবার শিঙি মাছটা মারছে কাঁটা পরাণ যায় জ্বলিয়া রে... গান শোনা যেত বাঙালির হেঁশেল। কিন্তু এখন বাঙালির পাত থেকে উধাও মৌরলা থেকে পাঁকাল, শিঙিও। এবার এই প্রায় হারিয়ে যেতে বসা মাছগুলিকে সংরক্ষণে উদ্যোগী বিডিও। গোপীবল্লভপুর ২ বিডিও অফিস ক্যাম্পাসে প্রায় মজে যাওয়া পুকুরটিকে সংস্কার করে প্রতিপালন করা হচ্ছে লুপ্তপ্রায় বিভিন্ন মাছ। সঙ্গে সবজি চাষ, হাঁস প্রতিপালন। গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তী অফিসের স্টাফদের নিয়ে বছর দু’য়েক আগে পরীক্ষামূলকভাবে কাজটি শুরু করেছিলেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা সাফল্যের মুখ দেখেছে। বিডিওর উদ্যোগে এই মডেল যখন সাফল্যের মুখ দেখছে তখন ব্লকের পরিবেশ দপ্তরের উদ্যোগে এক প্রাকৃতিক পরিবেশে চলছে লুপ্ত প্রায় মৎস্য সংরক্ষণের প্রকল্প। বেলিয়াবেড়াতে বিডিও অফিসের কয়েক কিমির মধ্যেই একটি পুকুরে চলছে নানা প্রজাতির মৎস্য সংরক্ষণের প্রক্রিয়া। পুকুরটির জলজ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য লাগানো হয়েছে থানকুনি, লিলি, নল, হিলিংচা, খাগর, কলমির মতো নানা গুল্ম। পুঁটি, পাবদা, চেলা, ট্যাংরা, শিঙি, খোলসা, ল্যাটা, মৌরলা-সহ নানা মাছের সংরক্ষণ এবং প্রজণন চলছে বেলিয়াবেড়ার অভয় পুকুরে। অন্যদিকে বছর দুয়েক আগেই ব্লক অফিস চত্বরে পুকুরে বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তীর উদ্যোগে শুরু হয়েছে মৎস্য প্রতিপালন। মাছের পাশাপাশি এই পুকুরে চড়ে বেড়ায় ১৫টির কাছাকাছি হাঁস। পুকুরের পাশেই তৈরি করিয়েছেন একটি সবজি বাগান।
এই বিষয়ে বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিবেশ দপ্তরের উদ্যোগে অভয়পুকুরে লুপ্তপ্রায় মাছের প্রতিপালন সাফল্যের সাথে চলছে। তবে আমরা সবাই মিলে আমরা অফিস চত্বরে যে পুকুর রয়েছে সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে মৎস সংরক্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটা দেখে অনেকই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।’’ ব্লকের মৎস্য দপ্তরের এক্সটেনশন অফিসার দীপক সেনাপতি বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে বিডিও নিজের ক্যাম্পাসে থাকা পুকুরটিকে পরিচ্ছন্ন করিয়ে লুপ্তপ্রায় মাছের সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। এটি খুবই সফল হয়েছে। এটা দেখে অন্যরাও যাতে নিজেদের বাড়ির পুকুরে মাছ চাষ করতে পারেন, সেই বার্তাই আমরা দিচ্ছি।’’
