সুমন করাতি, হুগলি: পশ্চিমবঙ্গের হুগলি থেকে লাল লঙ্কা যাচ্ছে জাপানে। শুধু লঙ্কাই নয়, আরও বেশ কিছু সবজিও পাঠানো হচ্ছে। জাপানের এক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারপর থেকেই চাষে জোর দেওয়া হয়েছে। চুক্তিভিত্তিতে রাসায়ণিক ও কীটনাশক বিহীন চাষ হচ্ছে বলে খবর। বর্তমানে এই পাইলট প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত শুভেন্দু সিংহ রায় ও গৌতম দাস নামে হরিপালের দু'জন কৃষক। ইতিমধ্যেই ১৬০ কিলো লাল লঙ্কা জাপানে পাঠানো হয়েছে। আপাতত ২ প্রজাতির লঙ্কা উৎপাদন হচ্ছে বলে খবর। আরও কৃষক এই কাজে যুক্ত হবেন বলেও খবর।
শুভেন্দু সিংহ রায় বলেন, "পলি হাউসের মধ্যে এই লঙ্কাচাষ করছি। নির্দিষ্ট পরিমাণে জল, জৈব সার ও তাপমাত্রায় চাষ হচ্ছে। কোন রাসায়নিক সার এখানে ব্যবহার করা হচ্ছে না। সিসিটিভিও লাগানো হয়েছে। জাপানি সংস্থাও চাষের কাজ খতিয়ে দেখছে।" তিনি আরও জানিয়েছেন, জাপানি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে আরও কৃষক যুক্ত হবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। এখন এই লঙ্কা থেকে দ্বিগুণ দাম পাওয়া গিয়েছে। আগামী দিনে আরও কয়েকগুণ টাকা পাওয়ার আশাও করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে ৫০ থেকে ৬০ জন কৃষক এই লঙ্কা চাষের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে বলেও তিনি জানাচ্ছেন।
সিঙ্গুরের কিষাণ বাজারে একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ারহাউস আছে। ভালো সবজি বাছাই করে এখানকার কর্মীরা সবজি প্রসেসিং করেন। এই সংস্থার সঙ্গে ১০ জন চুক্তিভিত্তিক কৃষক যুক্ত। এছাড়াও অস্থায়ীভাবে ২০০ জন কৃষক যুক্ত। সবজি বিক্রি করে কৃষকরা ২০ শতাংশ বেশি দাম পান কৃষকরা। জাপানি সংস্থার এগ্রিকালচার অফিসার অর্পণ গুহ বলেন, "অনেক কৃষক এই লঙ্কা চাষে আগ্রহী। আমাদের রাজ্যের তুলনায় জাপানে লঙ্কার দাম পাঁচ থেকে দশ গুণ। এখন দ্বিগুণ দামে লঙ্কা কিনব কৃষকদের কাছ থেকে।"
জাপানি সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার পরিচিতা চক্রবর্তী বলেন, "সিঙ্গুরে তিন হাজার বর্গফুটের ওয়ারহাউস রয়েছে। সিঙ্গুরে ও শিলিগুড়ির ডাব গ্রামে ওয়ার হাউস হচ্ছে। শিলিগুড়িতে মিষ্টি আলুর উপর খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা আছে। সুইট পটেটো ক্যান্ডি ও স্ন্যাকস করা হবে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের তত্ত্বাবধানে জাপানি টেকনোলজিতে উচ্চ ফলনশীল বীজ ও জৈব চাষ হচ্ছে সিঙ্গুর ও শিলিগুড়িতে।" কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী সব সময় চেয়ে এসেছেন কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পাক। সিঙ্গুরে কিষাণ বাজারে রাজ্য ও জাপানি সংস্থার উদ্যোগে ইতিমধ্যেই জৈব পদ্ধতিতে কৃষকদের চাষ করাছে। আগামী দিনে লঙ্কা বিদেশে বাজার করবে। এছাড়াও মিশন নির্মল বাংলার মাধ্যমে কৃষকদের হাতে জৈব সার তুলে দিচ্ছি। যাতে কৃষকরা আরও লাভবান হয়।"
