পটল বহুবর্ষজীবী লতা হলেও কৃষিক্ষেত্রে এর প্রয়োগ মূলত একবার্ষিক বা দ্বিবার্ষিক রূপেই সীমিত। পটল গাছের কন্দ রোপণ থেকে শুরু করে লতা শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ফলস্বরূপ চাষিরা আশানুরূপ বাজারদর পান না। পটলের বিভিন্ন রোগগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষতির নিরিখে ধ্বসা বা ডাউনি মিলডিউ, শুকনো পচা (সুজিদানা ব্লাইট), হাজা, অন্যতম। সঠিক এবং সুসংহত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এদের দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে আনা যায়। লিখেছেন বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের গবেষক সাইনী দে।
আমাদের রাজ্যে বহুল প্রচলিত লতানে কুমড়ো জাতীয় সবজিগুলির মধ্যে পটল অন্যতম। প্রায় সারাবছর ধরেই বাঙালির নিরামিষ হেঁশেলে বাহারি পদ তৈরিতে এই সবজির জুড়ি মেলা ভার। কুমড়ো জাতীয় সবজিগুলির মধ্যে সবথেকে বেশি খনিজসমৃদ্ধ ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হল পটল। সেই কারণে ‘কুমড়ো জাতীয় সবজিদের রাজা’র শিরোপাও রয়েছে এর মাথায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী পটলে ৪.২০ গ্রাম শর্করা, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২০ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ৯ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম, ২৬ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৮৩ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ১৭ মিলিগ্রাম সালফার ইত্যাদি খনিজ এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। এমনকি প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এর ঔষধিগুণ এবং বহুল প্রয়োগ বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষত মধুমেহ রোগীদের জন্য পটল খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প খাদ্য। এছাড়াও ক্ষুধাবর্ধন, উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও এই সবজিটি সহায়তা করে।
পটল বহুবর্ষজীবী লতা হলেও কৃষিক্ষেত্রে এর প্রয়োগ মূলত একবার্ষিক বা দ্বিবার্ষিক রূপেই সীমিত। ভারতবর্ষের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের কিয়দংশে এর চাষ বহুল প্রচলিত। আমাদের রাজ্যে নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগণা এবং উত্তর দিনাজপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকাগুলিই হল প্রধান উৎপাদনকারী অঞ্চল। পটলের বিভিন্ন উন্নত জাতগুলির মধ্যে রয়েছে পাঁপড়া, কাজলি, বোম্বাই, লতা বোম্বাই, স্বর্ণ অলৌকিক, স্বর্ণ রেখা , মড়াঝাটি, দুধীয়া, কাশী অলঙ্কার ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গে সাধারণত আশ্বিন-কার্তিক মাসের মধ্যে পটলের কন্দ (একর প্রতি ৩০০০–৩২০০ টি মূল হিসেবে বা ৩৫০০০-৩৭০০০ সংখ্যক ২ ফুট দৈর্ঘ্যের লতা হিসেবে) রোপণ করা হয়।
এই লতাগুলিকে মাচা পদ্ধতিতে কিংবা মাটিতে উভয়ভাবেই চাষ করা সম্ভব। কিন্তু মাটিতে চাষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রোগপোকার সংক্রমণ তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি হয়। বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কৃষক বন্ধুরা প্রায় ৭-৮ মাস বা কিছুক্ষেত্রে ১-২ বছর যাবৎ একই মাচায় পটল চাষ করে থাকেন। এতে প্রায় সারা বছর ধরেই বাজারে পটলের যোগান অব্যাহত থাকে। কিন্তু একইসঙ্গে এই অঞ্চলগুলিতে ফসলটির তুলনামূলক দীর্ঘমেয়াদী জীবনচক্রের কারণে কন্দ রোপণ থেকে শুরু করে লতা শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি হয়। বিশেষত বর্ষকালে বাণিজ্যিক চাষ প্রায়শই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একর প্রতি উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ এবং পুষ্টিগুণ উভয়ই ব্যাহত হয়। ফলস্বরূপ চাষিরা আশানুরূপ বাজারদর পান না।
[আরও পড়ুন: অনাবৃষ্টিতে বিধ্বস্ত উত্তরের চা শিল্প-কৃষি, আর কতটা সর্বনাশের পর খরা ঘোষণা? প্রশ্ন কৃষকদের]
পটলের বিভিন্ন রোগগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষতির নিরিখে ধ্বসা বা ডাউনি মিলডিউ, শুকনো পচা (সুজিদানা ব্লাইট), হাজা, অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় সম্পূর্ণ জীবনচক্রেই রোগগুলি উপস্থিত থাকলেও সঠিক এবং সুসংহত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এদের দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে আনা যায়।
হাজা ফাইটোপথোরা মেলোনিস (Phytophthora melonis) নামক একটি ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগ হয়। বর্ষার শুরুতে, এপ্রিল-মে মাসের মেঘলা, গরম আবহাওয়ায় এই রোগের সংক্রমণ শুরু হয়। একদম শুরুতে অপরিণত ফলগুলির বৃন্ত সংলগ্ন অঞ্চল বা মাঝের অংশ ডেবে যায় এবং কিছুদিন পর তার উপর ধূসর মাইসেলিয়ামের আস্তরণ লক্ষ্য করা যায়। ধীরে ধীরে এই সংক্রমণ লতার আগাগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত কাণ্ডগুলি শুকিয়ে প্রথমে বাদামি এবং একদম শেষে কালো বর্ণ ধরণ করে। অনেকসময় শুকিয়ে যাওয়ার আগে আক্রান্ত কাণ্ড এবং ফলগুলি থেকে একরকম হলুদাভ আঠালো রস নিঃসৃত হয় (oozing), যা পরবর্তীকালে ফলের গায়ে শুকিয়ে বিন্দু আকারে জমে থাকে।
জুন-জুলাই মাস থেকে ক্রমাগত বৃষ্টি এবং তার সাথে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও আরও উচ্চ তাপমাত্রায় ফলপচার সাথে সাথে কাণ্ডপচা উপসর্গটিও প্রকট হয়ে ওঠে এবং সম্পূর্ণ লতায় ছড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে সংক্রমণ প্রথমে পাতার বৃন্ত সংলগ্ন অংশ থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ পত্রফলককে গ্রাস করে, যার কারণে ব্লাইটের মতো লক্ষণ দেখা যায়। অনেকক্ষেত্রেই আক্রান্ত জমিতে প্রায় ৯০ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়ে যায়। যেসকল কৃষকবন্ধুরা দ্রুত ফলন এবং বেশি বাজারদরের আশায় ratooning এর মাধ্যমে একই জমিতে বিগত বছরের মূলগুলি থেকেই চারা তৈরি করেন, তাদের জমিতে মার্চ মাস থেকেই শীতের শেষে তাপমাত্রার দ্রুত বৃদ্ধিতে নতুন লতাগুলিরও ভাল বৃদ্ধি হয় এবং পুরো বেড লতায় ঢেকে যায়। এইধরণের মাদার মাটিতে আদ্রর্তার পরিমাণ এবং ঘন পাতার ছাউনির কারণে ছত্রাকের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে খুব বেশি হয় মার্চ মাস থেকেই, যা কিছুদিনের মধ্যে পার্শ্ববর্তী জমিগুলিতেও ছড়িয়ে পরে। জমিতে জল দাঁড়ানো বা আক্রান্ত ফল ও কাণ্ডগুলিকে সেচনালায় ফেলে দেওয়ার মতো কারণগুলিই কার্যক্ষেত্রে দায়ী ছত্রাকটিকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। পরবর্তীকালে ওই একই জমিতে পটল চাষ হলে রোগটির পুনরাবির্ভাব ঘটে।
প্রতিকার
জমিতে একবার হাজা রোগের সংক্রমণ শুরু হলে তার থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় প্রায় অসম্ভব। তাই প্রথম থেকেই সুসংহতভাবে প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগটির আক্রমণের হাত থেকে ফসলকে বাঁচাতে হবে। কৃষক বন্ধুরা পর্যায়ক্রমে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি নিতে পারেন:
১) কন্দ রোপণের পর, শীতের শেষ থেকেই জমির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
২)অসময়ে বৃষ্টির হলে পরে লতাগুলিকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি সংক্রমণ শুরু হয় সেক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩) আক্রান্ত ফল বা কাণ্ডগুলিকে একজায়গায় সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সেগুলিকে সেচনালা বা আল বরাবর ফেলা যাবে না।
৪) পুনর্নবীকরণ পদ্ধতিতে পুরোনো কন্দ রোপণ (Ratooning) না করাই শ্রেয়। নতুন কন্দ ব্যবহার করতে হবে।
৫) সার্বিকভাবে জমিতে জল নিষ্কাশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে কোনওভাবেই জল না দাঁড়ায়।
৬) কন্দগুলিকে রোপণের আগে ০.৪% কপার অক্সিক্লোরাইড অথবা ০.৩% মেটালাক্সিল ও ম্যাঙ্কোজেব দ্রবণে অন্তত ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে।
৭) কন্দ থেকে কচি ডাল বেরোনোর ১০-১৫ দিনের মাথায় একবার ০.১% কার্বেন্ডাজিম ও ০.২% ম্যাঙ্কোজেব দ্রবণ প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে গাছ ও সংলগ্ন মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে।
৮) বৃষ্টির পূর্বাভাস বিবেচনা করে এই একই মিশ্রণ ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর প্রায় ৪-৫ বার প্রয়োগ করতে হবে (মূলত ফসল তোলার পর ওই দিনগুলিতে বিকেলে স্প্রে করাই সমীচীন)।
৯) আক্রান্ত অংশগুলিতে মেটালাক্সিল ৮% ও ম্যাঙ্কোজেব ৬৪% ডাব্লুপি ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে বা সাইমক্সানিল ৮% ও ম্যাঙ্কোজেব ৬৪% ডাব্লুপি ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
১০) বর্ষাকালে পাতায় ওষুধ ধরে রাখার জন্য স্টিকার স্যান্ডভিট (@১ মিলি প্রতি লিটার দ্রবণে ) ব্যবহার করা যেতে পারে।
শুকনো পচা / সুজিদানা ব্লাইট রাইজক্টোনিয়া সোলানি (Rhizoctonia solani ) নামক একটি ছত্রাক এই রোগের জন্য দায়ী। আক্রান্ত মাচায় খুব সহজেই এই রোগটিকে দূর থেকে চেনা সম্ভব। মাচার মাঝামাঝি যেকোনও জায়গায় প্রায় গোলাকারে বেশ কিছু লতায় একসাথে পোড়া ক্ষতের মতো হয়ে যায়। ধীরে ধীরে এই অংশটির আয়তন বাড়তে থাকে। এই ডগার পাতাগুলি বৃন্তের দিক থেকে উপরের দিকে ক্রমাগত অসম আকারে শুকিয়ে যায়। শুকিয়ে যাওয়া জায়গা গুলি কিছুদিন বাদে ঝরে পরে। শুধু পত্রশিরা গুলি থেকে যায়। এই কারণে আক্রান্ত পাতাটিকে জালের মতো দেখতে হয়। তাই এই রোগ নেট ব্লাইট (Net Blight) নামে পরিচিত। আক্রান্ত জমিতে কিছুদিন বাদে সব পাতাগুলি পড়ে যায়। কেবল কাণ্ডগুলি থাকে। চাষিরা অনেক সময় এই লক্ষণটিকে পোকা খাওয়ার সাথে ভুল করে একে ‘চাক পোকা’ নামেও অভিহিত করেন। বর্ষার দিনে খুব ভোরবেলায় পাতার কিনারে সুজির দানার মতো স্কেরোসিয়াম দেখা যায়। তাই লোকমুখে এটি সুজিদানা হাজা নামেও পরিচিত। আক্রান্ত পাতার এই স্কেরোসিয়ামগুলিই রোগটিকে দীর্ঘদিন যাবৎ মাটিতে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। সাধারণত বর্ষাকালে এই রোগটি প্রবলভাবে বৃদ্ধি পায়। যার কারণে চাষিরা ভীষণভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন।
প্রতিকার
সম্পূর্ণরূপে মৃত্তিকাজাত (soil borne) রোগ হওয়ায় আক্রান্ত জমিতে একে দমন বা নির্মূল করা কঠিন। তাই চাষের শুরু থেকে অত্যন্ত সাবধানতার সাথে বীজশোধণ, জৈব নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রয়োগের মাধ্যমে রোগের সম্ভাবনা কমাতে হবে।
১) মাচার কোনও জায়গায় সংক্রমণ শুরু হয়ে গেলে সেখানকার পাতাগুলিকে তুলে দূরে পুড়িয়ে ফেলতে হবে, যাতে স্কেরোসিয়ামগুলি কোনওভাবে জমির মাটিতে না থেকে যায়।
২) জৈব ছত্রকনাশক যেমন ৫০০ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি বা ৫০০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুওরোসেন্স কালচার ১০০ কেজি জৈব সারের সাথে যোগ করে কন্দ বসানোর আগে জমির মাটিতে মেশাতে হবে।
৩) কার্বেন্ডাজিম ৫০ % ডাব্লুপি @ ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে কন্দগুলিকে রোপণের আগে শোধন করে নিতে হবে।
৪) নিম কেক ২.৫ কুইন্টাল প্রতি হেক্টর জমিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫) রোগের লক্ষণ দেখা মাত্র আক্রান্ত অংশে ভ্যালিডামাইসিন ৩% এল @ ২-২.৫ মিলি / লি বা কার্বেন্ডাজিম ৫০ % ডাব্লুপি @ ১ গ্রাম/ লি অথবা হেক্সাকোনাজল ৫% ইসি @ ১.৫ মিলি / লি অথবা ক্রেসোক্সিম মিথাইল ৪৪.৩ % এসসি @ ১ মিলি/ লি জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৬) একই ছত্রাকনাশক বারবার ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
ধ্বসা বা ডাউনি মিলডিউ
নভেম্বর মাসের শেষ থেকেই পাতায় ডাউনি মিলডিউ ছত্রাকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ এর তীব্রতা সবথেকে বেশি হয়। সিউডোপেরোনোষ্পোরা কিউবেনসিস (Pseudoperonospora cubensis) নামক ছত্রাকটি এই রোগের কারণ। আক্রান্ত পাতাগুলির উপরের তলে হালকা হলুদ রঙের ছোপ দেখা যায়। এই ছোপগুলি পত্রশিরা দিয়ে ঘেরা থাকায় নির্দিষ্ট কৌণিক আকারের হয়। এর ঠিক নিচের তলের পাতায় খুব ভোরবেলায় ধূসর মাইসেলিয়ামের আস্তরণ দেখা যায়। রোগটির তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই হলুদ ছোপগুলি যেমন একসঙ্গে মিশে একাধারে বাদামি বর্ণ ধারণ করে পাতার উপরের তলকে পুরো গ্রাস করে, সেরকম নিচের অংশের মাইসেলিয়ামের আস্তরণও আরও ঘন এবং কালচে হয়ে ওঠে। এভাবে আক্রান্ত পাতার সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে সালোকসংশ্লেষ ব্যাহত হয়ে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়, ফলন কম হয়। শিশিরের কারণে পাতার উপর জমে থাকা জলের আস্তরণ ডাউনি মিলডিউ ছত্রাককে ছড়িয়ে পড়তে সহায়তা করে।
প্রতিকার
১) জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি।
২) ডালগুলি ১০-১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের হলে রোগের আক্রমণের আগেই প্রতিষেধক হিসেবে একবার মেটালাক্সিল ৮% ও ম্যাঙ্কোজেব ৬৪% ডিব্লুপি ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে বা সাইমক্সানিল ৮% ও ম্যাঙ্কোজেব ৬৪% ডাব্লুপি ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে গাছ ও সংলগ্ন মাটিতে স্প্রে করতে হবে।
৩) আক্রান্ত অংশে আমেটকট্রাডিন ২৭% ও ডাইমিথোমর্ফ ২০.২৭% এসসি ১.৬- ২ মিলি/ লি অথবা ডাইমিথোমর্ফ ১২% ও পাইরাক্লস্ত্রবিন ৬.৭ % ডাব্লুজি ২.৫গ্রাম / লি জলে মিশিয়ে ১৫-২০ অন্তর স্প্রে করতে হবে।