মলয় কুণ্ডু: রাজ্যের আকাশে ফের ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা দেখা দিতেই কৃষকদের সতর্ক করল রাজ্য সরকার। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি হতে পারে। তাই সেখানকার কৃষকদের আগাম সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিল রাজ্য সরকার। আগামী ৪ ও ৫ ডিসেম্বর অর্থাৎ শনি ও রবিবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কৃষকদের যাতে ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার কয়েক দফা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
চলতি বছর একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। ধানের জমিতে নোনা জল ঢুকেছে। ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। শাক-সবজি থেকে ফল নষ্ট হয়েছে। রাজ্য সরকার কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। দেওয়া হয়েছে নতুন করে চাষের উপযোগী বীজ, সার এবং অন্যান্য উপকরণও। ফের ঝড়-বৃষ্টি হলেও যাতে ক্ষতি এড়ানো যায়, তার জন্য বুধবার রাজ্যের কৃষি দপ্তর কৃষকদের উদ্দেশে নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad) সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: মেক্সিকান ঘাস দিশা দেখাচ্ছে আয়ের, খাস কলকাতায় বিঘার পর বিঘা জমিতে হচ্ছে চাষ]
আবহাওয়া দপ্তরের তরফে থেকে রাজ্যকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ থাইল্যান্ড উপকূলে একটি নিম্নচাপ অ়্চলের সৃষ্টি হয়েছে। সেটি ২ ডিসেম্বর, শুক্রবার ও তার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আরও ঘণীভূত হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এই ঘূর্ণিঝড়টি পরবর্তী সময়ে আরও শক্তি বাড়িয়ে ৪ ডিসেম্বর সকালে অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এর প্রভাব পড়বে রাজ্যে। কৃষি দপ্তর তাই কৃষকদের জানিয়েছে, মাঠের পাকা ধান দ্রুত কেটে ঝাড়াই করে গুদামজাত করার জন্য। প্রয়োজনে যন্ত্রের সাহায্য নিতেও বলা হয়েছে।
সবজি, সরষের মতো তৈলবীজ বা সদ্য লাগানো আলুর জমিতে জমা জল দ্রুত বের করার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে প্রতিরোধক হিসাবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেত বলা হয়েছে। যে সমস্ত কৃষক ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আলু বোনার পরিকল্পনা করেছেন, তাঁদের সাত দিন পিছিয়ে দিতে হবে। ঝড়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এমন ফসল যেমন সবজি ও অন্যান্য ফল বিশেষ করে পেপেঁ, কলা জাতীয় ফসল যাতে ঝড়ে সহজে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার জন্য আগাম ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সবজির মাচা ও পানের বরজে শক্তভাবে বাঁধন দিতে হবে। এছাড়াও কৃষি সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যায় কাছের কৃষি অফিসে যোগেযাগ করার কথাও কৃষকদের বলা হয়েছে।