সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবনের শেষ টেস্ট ম্যাচে নামার সময় বিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ গার্ড অফ অনার দিয়ে সম্মান জানিয়েছিল মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেণ্ডুলকরকে৷ আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দেওয়ার পরও প্রিয় লিও মেসিকে জড়িয়ে ধরেছিলেন ফরাসি তারকা পল পোগবা৷ আর কাভানির পায়ের জাদুতেই তাঁর বিশ্বকাপ অভিযান চিরতরে শেষ জেনেও চোট পাওয়া ফরাসি স্ট্রাইকারকে নিজেই মাঠের বাইরে পৌঁছে দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷ এই দৃশ্যগুলিতেই প্রতিবার জিতে যায় স্পোর্টসম্যান স্পিরিট৷
[মেসির ব্যর্থতার দিন জন্ম নয়া তারকার, পেলের কীর্তি ছুঁয়েও তুলনায় আপত্তি এমবাপের]
লড়াই তো শুরুই হয় ফলাফলের দিশার খোঁজে৷ তাই বলে কি মনুষ্যত্ববোধ চলে যাবে? কখনওই না৷ খেলাই তো হারের যন্ত্রণা সহ্য করতে শেখায়৷ শেখায় সাফল্যেও সংযত থাকতে, অন্যকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে, মুখ থুবড়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়াতে৷ আর তাই তো শত্রুর হাতে নিধন নিশ্চিত জেনেও অবলীলায় এগিয়ে গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানো যায়৷ এ ছবিই তো মনুষ্যত্বের সংজ্ঞা ব্যাখ্যা করে৷ তাই তো মাঠের মহারণে হেরেও নায়ক হয়ে উঠতে পারেন সিআর সেভেন৷ উদ্ধত, বদমেজাজি, স্বার্থপর সম্বোধন করে নিন্দুকরা যাঁকে মাঝেমধ্যেই একহাত নেন, সেই পর্তুগিজ তারকা শনিবার হেরেও ‘বাজিগর’ হয়ে গেলেন ফুটবলপ্রেমীদের মনে৷ কাভানি ও রোনাল্ডোর এই ছবিই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল৷ বিশ্বকাপ তথা ফুটবলের সেরা বিজ্ঞাপন হয়ে রইল এই সহমর্মিতার ছবিই৷
[অধরা সোনার পরী, বিশ্বকাপের ট্র্যাজিক নায়কই থেকে গেলেন মেসি]
মেসি-রোনাল্ডো বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেও ফুটবলভক্তদের চর্চায় এখনও তাঁরাই৷ তবে শেষ যোলো থেকে বিদায় নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ রোনাল্ডোর৷ দল কেমন খেলল, কেন পরাজয়, কোচ বদলের প্রয়োজন আছে কি না, এসব নিয়ে এখনই কাটাছেঁড়া করতে ইচ্ছে করছে না অধিনায়কের৷ নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও মুখ খুললেন না৷ এদিকে শনি-রাতের ম্যাচের ফলাফল কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস৷ হতাশ কোচ বলছেন, “অন্যরকম ফলের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলাম আমরা৷ তাই এই ফলটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না৷ কিন্তু এটাই ফুটবল৷ রেফারিকে দোষারোপ করার কোনও মানে হয় না৷ আমার খারাপ লাগছে দ্বিতীয়ার্ধে দল দুর্দান্ত চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হল বলে৷ জানতাম উরুগুয়ে দারুণ দল৷ কিন্তু আমরাও নিজেদের সেরাটা দিয়েছি৷ সকলেই জিততে চায়৷ কিন্তু কাউকে তো হারতেই হয়৷” নুইয়ে পড়া ঘাড়ে, দম বন্ধ হয়ে আশা ব্যর্থতার নিস্তব্ধতাতেও পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য উরুগুয়েকে কিন্তু শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি স্যান্টোস৷ আর তাই বিশ্বকাপের আকাশ থেকে দুই মহাতারকা খসে পড়লেও বেঁচে রইল স্পোর্টসম্যান স্পিরিট৷ এভাবেই চিরজীবী হোক খেলোয়াড়ি মানসিকতা৷
The post বিশ্বকাপ যাবে আসবে, বেঁচে থাক স্পোর্টসম্যান স্পিরিট appeared first on Sangbad Pratidin.