সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ের আবার আলাদা করে দিন হয় নাকি? না, তা হয় না। কিন্তু সবচেয়ে কাছের মানুষকে স্পেশাল ফিল করানোর যদি একটা সুযোগ থাকে, তাহলে ক্ষতি কি? এবার ১২ মে, রবিবার পড়েছে মাতৃদিবস। ছুটির দিন। এদিনটা না হয় মাকে হেঁশেলের দায়িত্ব থেকে নিস্তার দিন। বরং সোজাসাপ্টা কিছু পদ রেঁধে সারপ্রাইজ দিন। কী রাঁধবেন? ভেবে পাচ্ছেন না! 'কুছ পরোয়া নেহি'! চটজলদি সুস্বাদু কিছু রেসিপি রইল সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এ। যেটা পছন্দ বেছে নিয়ে রাঁধুন মায়ের জন্য।
চিংড়ির মুইঠ্যা
উপকরণ-
চিংড়ি মাছ: ৫০০ গ্রাম, আলু সেদ্ধ: ১৫০ গ্রাম, ধনেপাতা কুচি: ২ চামচ, রসুন বাটা: ১ চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো: আধ চামচ, হলুদ গুঁড়ো: আধ চামচ, লেবুর রস: ১ চামচ, কাঁচালঙ্কা বাটা: ১ চামচ, নুন: স্বাদমতো, গ্রেভির জন্য, পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ, রসুন: ৬-৭ কোয়া, আদা টুকরো: আধ ইঞ্চি, কাজু: ৮-১০টি, টম্যাটো: ১টি, গোটা গরমমশলা: পরিমাণমতো, তেজপাতা: ১টি, লঙ্কা গুঁড়ো: ১ চামচ, হলুদ গুঁড়ো: আধ চামচ, ধনে গুঁড়ো: ১ চামচ, নারকেলের দুধ: ১ কাপ, নুন ও চিনি: স্বাদমতো, সর্ষের তেল: ৫ চামচ।
প্রণালী-
প্রথমে, চিংড়ি মাছ খোসা ছাড়িয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। পরিষ্কার অবশ্যই নজরে রাখুন যেন জল না থাকে। চিংড়িগুলোকে ভাল করে বেটে নিন। এরপর একটি বড় পাত্রে চিংড়ির সঙ্গে আলু সেদ্ধ, ধনেপাতা কুচি, রসুন বাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, লেবুর রস, কাঁচালঙ্কা বাটা ও নুন ভাল করে মিশিয়ে নিন। দেখবেন যেন প্রত্যেকটি উপদান ভাল করে মিশিয়ে যায়। এবার একটি কড়াইয়ে সামান্য তেল নিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচি, রসুন, আদা টুকরো, কাজু ও টম্যাটো দিয়ে ভাল করে ভেজে নিন। এরপর অন্য পাত্রে রেখে মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে ভাল করে বেটে নিন। এ বার কড়াইতে তেল গরম করে তাতে তেজপাতা ও গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিয়ে বাটা মশলা দিয়ে দিন। ভাল করে একটু নাড়াচাড়া করে সব রকম গুঁড়ো মশলা দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। তেল ছেড়ে এলে নারকেলের দুধ দিয়ে ভাল করে নাড়াতে থাকুন। এ বার বেটে রাখা চিংড়ি মাছের মিশ্রণ বড়ার মতো গড়ে নিয়ে ঝোলে ছেড়ে দিন। মিনিট পাঁচেক ঢাকা দিয়ে ফুটতে দিন। গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিন। ব্যস তৈরি চিংড়ি মাছের মুইঠ্যা। ভাতের সঙ্গে দারুণ লাগবে।
মাটন রোগান জোশ
উপকরণ
মাটন ১ কেজি, সরষের তেল ১৫০ থেকে ২০০ মিলিলিটার, তেজপাতা ১টা, ছোট এলাচ ৪-৫টা, বড় এলাচ ২টো, লবঙ্গ ৭-৮টা, গোটা দারচিনি টুকরো ২টো মতো, আদা-রসুন বাটা ২ চা-চামচ, রতনজোত ৪-৫টো, দই ১০০ গ্রাম, ঘি ২০০ গ্রাম, ধনে গুঁড়ো ২ চা-চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ চা-চামচ, আদা গুঁড়ো ২ চা-চামচ, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো ৩ চা-চামচ, হিং গুঁড়ো ২ চা-চামচ, গরম মশলা।
প্রণালী
ম্যারিনেট করতে মাংসের সঙ্গে ১০০ গ্রাম টক দই, ১ চা-চামচ গরম মশলা ও আধ চা-চামচ নুন মিশিয়ে ৫ ঘণ্টা রেখে দিন। আলাদা পাত্রে বাকি ১০০ গ্রাম দইয়ের সঙ্গে প্রতিটা গুঁড়ো তথা ধনে-জিরে-আদা-লঙ্কা মিশিয়ে নিন। সঙ্গে মেশান হিং-ও। প্রেশার কুকারে সরষের তেল গরম করে তাতে তেজপাতা, ছোট এলাচ, বড় এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি ফেলে নাড়তে থাকুন। ভাজা ভাজা হয়ে এলে ম্যারিনেট করা মাংস ঢেলে দিন। কষিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ না দই থেকে জল বেরিয়ে এসে শুকনো শুকনো হয়ে আসছে। হয়ে এলে পরে দইয়ের মিশ্রণটুকু ঢেলে নাড়তে থাকুন। দুটো বিষয় ভাল করে মিশে গেলে প্রেশার কুকার আটকে বেশি আঁচে চার থেকে পাঁচটা মতো সিটি দিতে হবে। এরপর গ্যাস কম আঁচ করে আরও একটি সিটি পড়বে। মাংস নরম হয়ে এলে এক পাত্রে ঘি গরম করে তাতে রতনজোত ফেলে রং বদলানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ঘি মোটামুটি মরচে লাল রঙা হয়ে এলে ইতিমধ্যেই তৈরি হওয়া মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে নিন।
আচারি মেথি কাতলা
উপকরণ-
চার পিস কাতলা, টক দই ৪-৫ চামচ, পিঁয়াজবাটা (২টি), রসুন-আদাবাটা ২ চামচ, টমেটো বাটা- অর্ধেকটা, কাঁচালঙ্কা ২/৩টি চেরা, মেথি- ১চামচ, হলুদ, নুন, চিনি-আন্দাজমতো, ধনেপাতা (অপশনাল)
প্রণালী-
প্রথমে মাছের পিসগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর আদার রস আর নুন মাখিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। একটি বাটিতে সব মশলা পিঁয়াজ-রসুন, দই, চিনি-নুন অল্প জল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর কড়ায় তেল গরম হলে মাছ ভেজে তুলে নিন। এবার রান্নার জন্য আরও দু’ চামচ তেল দিন ওই একই পাত্রে। মেথি আর দুটো কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিন। তারপর জল দিয়ে গুলে রাখা মশলাটা এতে দিয়ে দিন। ভালো করে কষান এবার। মশলা ভালো করে কষে এলে সামান্য জল দিন। ফুটে উঠলে ভাজা মাছের টুকরোগুলো দিয়ে ঢেকে দিন। এবার বাকি কাঁচালঙ্কাগুলো দিন। গ্রেভি গা মাখা হয়ে এলে দু ফোঁটা কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে ঢাকনা বন্ধ অবস্থাতেই নামিয়ে নিন।
এই তিনটে পদই বাসন্তী পোলাওয়ের সঙ্গে দিব্যি জমবে। জেনে নিন রেসিপি।
উপকরণ
চাল, কাজু বাদাম, কিসমিস, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, তেজপাতা, গুঁড়ো গরম মশলা, হলুদ গুঁড়ো, আদা, চিনি, ঘি, সাদা তেল
প্রণালী
পরিমাণ মতো চাল নিয়ে ভালো করে ধুয়ে জল ঝড়িয়ে নিন। তারপর ঘি আর হলুদ দিয়ে চালটাকে ভাল করে মেখে আধ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। কড়াইতে ঘি দিয়ে কাজু আর কিসমিস হালকা করে ভেজে নিন। ভাজা কিসমিস আর কাজু তুলে একপাশে সরিয়ে রাখুন। পাত্রে আরও একটু তেল দিয়ে তাতে তেজপাতা, লবঙ্গ, এলাচ আর দারচিনি দিয়ে দিন। আদা বাটা দিয়ে হালকা ভাজুন। তারপর চাল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। চাইলে ৩-৪ ফোটা গোলাপ জলও দিতে পারেন। এবার যত কাপ চাল নিয়েছেন ঠিক তার ডাবল কাপ জল আন্দাজমতো পাত্রে দিয়ে নুন আর চিনি দিয়ে দিন। ভাজা কাজু আর কিসমিসগুলো দিন। জল শুকিয়ে আসার পর চাল ভাল সিদ্ধ হয়েছে কিনা দেখে নিন। এবার নুন-চিনি চেখে ঘি আর গুঁড়ো গরম মশলা ছড়িয়ে মিশিয়ে দেবেন। ব্যস, আপনার বাসন্তী পোলাও তৈরি।
জম্পেশ খাওয়ার সঙ্গে শেষপাতে মিষ্টি হবে না, তাও আবার হয় নাকি? রইল আমের পায়েসের রেসিপি।
উপকরণ-
পাকা আম দুটো, দুধ এক লিটার, গোবিন্দ ভোগ চাল, চিনি, কাজু, কিসমিস, আমন্ড, ছোট এলাচ।
প্রণালী-
আমকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে মিক্সার গ্রাইন্ডারে অল্প ঘুরিয়ে নিন। এতে আমের পেস্ট তৈরি হবে। এরপর দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিতে হবে। এবার এই ঘন দুধের মধ্যে চাল দিয়ে নাড়তে থাকুন। চাল সেদ্ধ হয়ে গেলে তার মধ্যে চিনি ও নুন মিশিয়ে দিন। চিনি থেকে যে জল বের হবে তা শুকিয়ে কিছুটা ঘন হয়ে এলে কিসমিস ও বাদাম দিয়ে দিন। চাল সেদ্ধ হয়ে গেলে এর মধ্যে আমের পেস্ট দিয়ে নেড়ে ফুটে উঠলেই নামিয়ে নিন। এরপর সার্ভিং ডিশে পায়েস ঢেলে উপরে বাদাম ও কিসমিস দিয়ে সাজিয়ে দিন। চাইলে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে খেতে পারেন আমের পায়েস।