দুলাল দে: ঠিক কবে থেকে আনোয়ার আলি কেসটা ঝুলে রয়েছে বলুন তো? ইমামি ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান এসজির মাঝে পড়ে আনোয়ার আলির কেসটা যে সেই ফেডারেশনের অ্যাপিল কমিটিতে গেল, তারপর থেকে তো কোনও নাম গন্ধ নেই। কেমন যেন পুরো ব্যাপারটা মিইয়ে গেল। ভোজবাজির মতো হাওয়া গেল ব্যাপারটা।
লোকজন যখন আনোয়ার আলির কেসটা প্রায় ভুলতে বসেছে, তখনই ফের ফিফায় চিঠি দিয়ে আনোয়ার আলির বিষয়টি উসকে দিয়েছে মোহনবাগান। কিন্তু আজ পর্যন্ত আনোয়ার আলি কেসটাকে অ্যাপিল কমিটিতে ঝুলিয়েই রেখেছে ফেডারেশন। ফলে নিজেদের মতো করে কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারছে না মোহনবাগান। আর সেই কারণেই ফিফায় যাওয়া। আর ফিফার তরফে ফেডারেশনে চিঠি আসার পরেই অ্যাপিল কমিটিতে তোড়জোড়। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে বিষয়টি ফের হিমঘরে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন।
অ্যাপিল কমিটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ টন্ডন, বারবার আনোয়ার আলির ইস্যু নিয়ে মিটিং করতে চাইলেও, কমিটির সদস্যদের অভাবে করা সম্ভব হয়নি, এই কারণ দেখিয়ে বারবার শুনানি ভেস্তে গিয়েছে। এর মধ্যে অ্যাপিল কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা বিচারক, অশোক ত্রিপাঠি ৮ নভেম্বর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আনোর আলির শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। তখন ৮ নভেম্বর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ টন্ডন আদেশ দেন, ১২ নভেম্বর এবং ১৩ নভেম্বর এই দু'দিন আনোয়ার আলির পক্ষের আইনজীবী যুক্তি শোনা হবে। ঠিক ছিল এরপর শোনা হবে, ইস্টবেঙ্গলের আইনজীবীর বক্তব্য। কিন্তু ফের অ্যাপিল কমিটির কোরাম সম্পূর্ণ না হওয়ায় ফের শুনানি মুলতুবি হয়ে যায়। দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা আনোয়ার আলির বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য এবার চেয়ারপার্সন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ টন্ডন কিছুটা বিরক্ত হয়েই নির্দেশ দেন, অবিলম্বে আপিল কমিটির কোরাম সম্পূর্ণ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি নির্দেশ দেন, পরবর্তী শুনানিতে সবাইকে থেকে কোরাম সম্পূর্ণ করতে হবে।
সেইমতো ঠিক হয়, মামলাটির শুনানি হবে ২৮ এবং ২৯ নভেম্বর। নয়াদিল্লির কৈলাশ কলোনিতে এই মামলার শুনানির জায়গা ঠিক হয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সঙ্গে এও জানান যে, এবার কোরাম গঠনে ব্যর্থ হলে তা গুরুতরভাবে বিবেচিত হবে।
কিন্তু কোথায় কী। আজকে ২ ডিসেম্বর হয়ে গেল। আনোয়ার আলিকে নিয়ে মিটিংয়ের সেই শুনানি আর হল না। শোনা যাচ্ছে, এবারও না কি কোরাম হয়নি। তাই ফেডারেশনের তরফে আপাতত মিটিং মুলতুবি রাখা হয়েছে। আর অদ্ভুত এক ভূতুড়ে কারণে আনোয়ার আলির কেসটি এবারও শুনানি হল না। যার সত্যিই কোনও ব্যাখ্যা নেই। এবার যতক্ষণ না ফেডারেশনের ভিতরে এই আনোয়ার আলির কেসের ভূত তাড়ানোর জন্য ওঝা না আনা যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আনোয়ার আলির কেস কবে যে শুনানি হবে, কেউ জানে না। ততদিনে হয়তো আনোয়ার আলি অবসরও নিয়ে নিতে পারেন!
