shono
Advertisement
Curacao Football Team

সব প্লেয়ারই 'ভাড়াটে', ক্ষুদ্রতম দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া কুরাসাওয়ের সফর কেমন ছিল?

বিমান ভাড়াও নিজের পকেট থেকে দিতে হত কুরাসাওয়ের কোচকে।
Published By: Arpan DasPosted: 05:19 PM Nov 19, 2025Updated: 05:19 PM Nov 19, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জনসংখ্যা মাত্র দেড় লক্ষ। মোট আয়তন ৪৪৪ বর্গ কিলোমিটার। অর্থাৎ বৃহত্তর কলকাতার থেকে কয়েক গুণে ছোট। উত্তর আমেরিকার ছোট্ট দেশ কুরাসাওয়ের নাম ক'জন জানেন? এবার জানবে। আগামী বছর ফুটবল বিশ্বকাপ খেলবে কুরাসাও। বিশ্বকাপে খেলা সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ। শুধু এটাই নজির নয়, আরও একটি নজির জুড়বে তাদের নামে। সেটা হল, কুরাসাও হল এমন একটি দেশ, যাদের কোনও প্লেয়ারই সেই দেশে জন্মগ্রহণ করেনি। অর্থাৎ, সব প্লেয়ারই বিদেশি বংশোদ্ভূত। ফুটবল বিশ্বকাপে সেটাও নতুন ঘটনা।

Advertisement

সম্প্রতি ভারতের হয়ে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া রায়ান উইলিয়ামস ও নেপালে জন্মগ্রহণ করা অবনীত ভারতী। তবে দু'জনেরই এখনও নীল জার্সিতে মাঠে নামার সৌভাগ্য হয়নি। অবনীতকে তাঁর বলিভিয়ার ক্লাব ছাড়েনি। অন্যদিকে বাংলাদেশ ম্যাচের আগে রায়ানের জন্য ফিফা ও অস্ট্রেলিয়া ফুটবল সংস্থার ছাড়পত্র আনতে পারেনি ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। অথচ হাতে প্রায় ১০ দিন ছিল। রায়ান গ্যালারিতে বসেই দেখলেন বাংলাদেশের কাছে ১-০ গোলে হারল ভারত। ঢাকায় সেই ম্যাচে অনবদ্য খেললেন দুই 'বিদেশি' শমিত সোম ও হামজা চৌধুরী। দু'জনেই বিদেশি বংশোদ্ভূত। ১৮ কোটির দেশ বাংলাদেশ ও ১৪০ কোটির দেশ ভারত, কেউই বিশ্বকাপ তো দূরের কথা, এশিয়ান কাপের টিকিটও পায়নি। সেখানে দেড় লক্ষ জনতার কুরাসাও কোনও 'দেশীয়' ফুটবলার ছাড়াই বিশ্বকাপে খেলবে। ভারতীয় সময়ে বুধবার সকালে জামাইকার সঙ্গে ড্র করে আগামী বছর আমেরিকা-কানাডা-মেক্সিকোয় দেখা যাবে তাদের।

বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করার পর কুরাসাওয়ের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস।

ঠিক কীভাবে সফর শুরু কুরাসাওয়ের? বহু বছর তারা নেদারল্যান্ডসের পরাধীন ছিল। ২০১০-এ দেশের মর্যাদা পেলেও এখন ডাচ সার্বভৌমের অধীনে। আর পনেরো বছরের মধ্যে তারা বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে। আসলে এখনও নেদারল্যান্ডসের অধীনে থাকায় দেশের সবারই ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকার আছে। সবার নেদারল্যান্ডসের পাসপোর্ট আছে। সেটাকেই কাজে লাগান বর্তমান কোচ ডিক অ্যাডভোকাট। যিনি এর আগে নেদারল্যান্ডসের কোচ ছিলেন। কুরাসাওয়ের এর আগের প্রায় সব কোচই নেদারল্যান্ডসের। যার মধ্যে আছে গাস হিডিঙ্ক বা প্যাট্রিক কুইভার্টের মতো নাম।

কুরাসাও ফুটবল দল।

২০২৪-র শুরুতে দায়িত্ব নিয়ে অ্যাডভোকাট ২৪ জন ডাচ বংশোদ্ভূতকে ডেকে আনলেন। আমস্টারডাম, গ্রোনিনগেন, রটারডামে জন্মগ্রহণ করা ২৩-২৫ বছর বয়সি ফুটবলারদের কুরাসাওয়ে নিয়ে এলেন। সেই প্লেয়ারদেরই বেছে নিলেন, যাঁরা কখনও নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখলেও তা পূরণ হবে না। নতুন দেশের নতুন স্বপ্ন নিয়ে লিয়ান্দ্রো বাকুনা, জর্দি পাউলিনা, রসন ভ্যান এইমারা কুরাসাওয়ে খেলতে এলেন। তবে তাতে সমস্যাও ছিল। অনেকেই বিশ্বাস করতেন তাঁরা নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলার 'যোগ্য'। তা দলের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করে। কিংবা অনেকের মনখারাপ। তাঁদের 'চাঙ্গা' করার কাজও ছিল। কিন্তু তা বলে বিশ্বকাপের স্বপ্ন? সেই বিশ্বাসটাই সবার মধ্যে ঢুকিয়ে দেন অ্যাডভোকাট। এমনকী বিমান ভাড়াও নিজের পকেট থেকেই দিতেন কুরাসাওয়ের কোচ।

বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করার পর কুরাসাওয়ের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস।

অনেকে বলতেই পারেন, উত্তর আমেরিকা মহাদেশের থেকে কাজটা হয়তো তুলনায় সহজ। কারণ সেখানে প্রতিপক্ষের নাম বারমুডা, জামাইকা বা ত্রিনিদাদ ও তোবাগো। তবু বিশ্বকাপের মঞ্চ তো, বিশ্বকাপই। বারমুডাকে ৭ গোলে হারিয়ে দরজা খুলে গিয়েছিল। শেষ ম্যাচ ড্র করলেই চলত। সেই ম্যাচে অবশ্য ব্যক্তিগত কারণে কোচ ছিলেন না। কিন্তু তাতে বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন আটকায়নি। ২০১৮-য় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পায় আইসল্যান্ড। এবছরই কেপ ভার্দে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয়। আবার কয়েক মাসের মধ্যেই নজির গড়ল কুরাসাও। এবার দেখা যাক কুরাসাও 'বিদেশিরা' বিশ্বকাপে কীরকম খেলেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • জনসংখ্যা মাত্র দেড় লক্ষ। মোট আয়তন ৪৪৪ বর্গ কিলোমিটার। অর্থাৎ বৃহত্তর কলকাতার থেকে কয়েক গুণে ছোট।
  • উত্তর আমেরিকার ছোট্ট দেশ কুরাসাওয়ের নাম ক'জন জানেন? এবার জানবে। আগামী বছর ফুটবল বিশ্বকাপ খেলবে কুরাসাও।
  • বিশ্বকাপে খেলা সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ। শুধু এটাই নজির নয়, আরও একটি নজির জুড়বে তাদের নামে।
Advertisement