সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর প্রয়াণের পর সাড়ে চার বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু তাঁর মৃত্যুরহস্য এখনও সমাধান হয়নি। এমন আবহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মারাদোনার প্রাক্তন দেহরক্ষী জুলিও সিজার কোরিয়াকে। এদিকে ডাক্তার-নার্স-সহ যে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কিংবদন্তি ফুটবলারের মেয়ে জানা মারাদোনা, তাঁদের বিরুদ্ধে মারাদোনার স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর মৃত্যু যে তীব্র যন্ত্রণার কারণে হয়েছে, সে কথাও বলা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের অংশ ছিলেন এমন একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত সাতজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মাউরিসিও ক্যাসিনেলি বলেন, মারাদোনা কমপক্ষে ১০ দিন ধরে তাঁর ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। তাতে জল জমেছিল। তবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে হার্টফেল এবং লিভার সিরোসিসের কারণে। তিনি বিচারকদের বলেন, চিকিৎসক এবং নার্সদের এই বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল।
ক্যাসিনেলির কথায়, মারাদোনার হৃদপিণ্ডের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ছিল। এর ফলে মৃত্যুর কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা আগে তাঁর প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হয়। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তিনি তাঁর বাড়িতেই বিশ্রামে ছিলেন। যদিও সেই বাড়িতে তাঁকে রাখা ঠিক হয়নি বলেও অভিযোগ। আইনজীবীরা মারাদোনার জীবনের শেষ দিনগুলিকে এক 'ভয়াবহ থিয়েটার' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ক্যাসিনেলির সংযোজন, মারাদোনা যে বাড়িতে মারা গিয়েছেন সেখানে তাঁকে রাখা ঠিক হয়নি। ডাক্তার-নার্স-সহ যে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যার' অভিযোগ আনা হয়েছে। সাতজনই ৮ থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি। প্রসিকিউটরদের অভিযোগ, ফুটবলার মৃত্যুর আগে ব্যথা অনুভব করেছিলেন। দীর্ঘ বিচারাধীন এই মামলায় প্রায় ১২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার মারাদোনা প্রয়াত হন ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। মৃত্যুর পরই পূর্ণ তদন্তের দাবি জানান তাঁর আইনজীবী। অভিযোগ ছিল, চিকিৎসা ব্যবস্থায় অবহেলা করা হয়েছে। ঠিকঠাক চিকিৎসা পেলে হয়তো মৃত্যু এড়ানো যেত। মোট ২০ জন চিকিৎসক ছিলেন তাঁর দেখভালের জন্য। ২০২২ সালের মার্চে তদন্ত শুরুও হয়।