শিলাজিৎ সরকার: তখনও প্রেস বক্সের ডানদিকের গোলপোস্টে টাইব্রেকার চলছে পুরোদমে। ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোর নজর ছিল না সেদিকে। বরং ঘোরাফেরা করছিলেন নিজেদের ডাগআউটের পিছন দিকটায়। জয় গুপ্তা সুযোগ নষ্ট করতেই জার্সি তুলে মুখ ঢাকলেন। আর মেহতাব সিংয়ের শটটা জালে জড়াতেই অন্ধকার নামল স্প্যানিশ কোচের মুখে।
শনিবাসরীয় সন্ধ্যায় আইএফএ শিল্ড ফাইনালের ডার্বি হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। তারপরই আলোচনা শুরু হয়েছে কোচ অস্কারের জোড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে। প্রথমত, গোটা ম্যাচে ভালো খেলা প্রভসুখন গিলকে তুলে শুধুমাত্র টাইব্রেকারের জন্য দেবজিৎ মজুমদারকে নামানো। দ্বিতীয়ত, আনোয়ার আলি বা মহম্মদ রশিদের মতো ফুটবলাররা থাকতেও জয় গুপ্তার টাইব্রেকারে শট নিতে যাওয়া। দল জিতলে যে সিদ্ধান্তগুলো হতে পারত অস্কারের 'মাস্টারস্ট্রোক', হারের পর তা আতসকাঁচের নিচে।
ম্যাচ শেষে দুই সিদ্ধান্ত নিয়েই সরাসরি জবাব দিলেন অস্কার। দেবজিৎকে নামানো নিয়ে বললেন, "সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। আমি সাপোর্ট স্টাফের কথা শুনে দেবজিৎকে নামিয়েছিলাম। এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া ঠিক হয়নি। গিলকেই মাঠে রাখা উচিত ছিল।" আর জয়ের শট নেওয়া প্রসঙ্গে অস্কারের জবাব, "টাইব্রেকারে শট নেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত প্লেয়ারদের উপর ছেড়েছিলাম। সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কে কে শট নিতে চায়। জয় আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।"
টাইব্রেকারে ডার্বি হেরে ট্রফি জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। প্রথমার্ধে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন হামিদ আহদাদ। তবে তারপরেই জোড়া সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। সেটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলে মনে করছেন অস্কার। তাঁর কথায়, "প্রথম গোলের পরই আমাদের ম্যাচটা শেষ করে ফেলা উচিত ছিল। সেসময় ম্যাচের রাশ আমাদের হাতে ছিল। সেখান থেকে আমরা ম্যাচ শেষ করতে পারিনি। উল্টে গোল খেতে হয়েছে।" তবে অস্কারের বক্তব্য, ম্যাচে নয় তাঁরা হেরেছেন টাইব্রেকারে। "ম্যাচের ১২০ মিনিটে মোহনবাগান আমাদের হারাতে পারেনি। ম্যাচে আমরাই ভালো খেলেছি। আমরা হেরেছি শুধু টাইব্রেকারে। আমরা লড়াই করেছি। গত কয়েক বছরে ইস্টবেঙ্গল ডার্বিতে পিছিয়ে থাকত। সেই ছবিটা এখন বদলে গিয়েছে। ডার্বিতে আমরা আর পিছিয়ে থাকি না মোহনবাগানের থেকে।" ঠিক এক সপ্তাহ পরই সুপার কাপে অভিযান শুরু করবে ইস্টবেঙ্গল। গোয়ায় তাদের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ ডেম্পো। শিল্ড ফাইনালের পর একদিন দলকে ছুটি দিয়েছেন অস্কার। সোমবার গোয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে ইস্টবেঙ্গল। পরের দিন সেখানেই অনুশীলন করবেন কেভিন সিবিয়ে, সল ক্রেসপোরা।
