দুলাল দে: হল কি ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে? সময়টাই ভাল যাচ্ছে না একদম।
বছরের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা, যা এপ্রিল মাসে দেওয়ার কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে দেয়নি আইএসএলের সংগঠক এফএসডিএল। চুক্তিমতো পরের কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা আগস্টে। ফেডারেশনের আর্থিক সমস্যা মেটাতে এখন সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন ফেডারেশন কর্তারা। যদি আগস্ট মাসে একসঙ্গে দুটি কিস্তির টাকা পাওয়া যায়। না হলে এফএসডিএলের তরফে পর পর দুটো কিস্তির টাকা না এলে আর্থিক সমস্যার মধ্যে থাকা ফেডারেশনের অনেক কাজ থমকে যাবে।
চুক্তিমতো ফেডারেশনকে বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা দেয় এফএসডিএল। এই টাকাটা দেওয়া হয় চারটে কিস্তিতে। প্রথম কিস্তি জানুয়ারিতে। পরের কিস্তি এপ্রিলে। তৃতীয় কিস্তি দেওয়ার কথা আগস্টে। শেষেরটা ডিসেম্বরে। প্রথম কিস্তির প্রায় সাড়ে বারো কোটি টাকা দেওয়ার পর এপ্রিল মাসে আর কোনও কিস্তির টাকা এফএসডিএলের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে।
তবে এই টাকা এফএসডিএল কেন আটকে রেখেছে, তা অবশ্য পরিস্কার নয়। এফএসডিএলের তরফে এই টাকা আটকে রাখার পিছনে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। চুক্তিমতো এই বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়ে যাচ্ছে ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে এফএসডিএলের চুক্তি। কিন্তু ডিসেম্বরের পরে কী হবে? চুক্তি বাড়বে না, শেষ হয়ে যাবে? সব কিছু ঠিক করার জন্য ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি মিটিং করেন এফ এসডিএল কর্তারা। তারমধ্যে একটি মুম্বইয়ে। একটি হয়েছিল দিল্লিতে। সেই মিটিংয়ে এফএসডিএলের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, ফেডারেশনের সঙ্গে এফএসডিএলের যে বার্ষিক আর্থিক চুক্তি রয়েছে, নতুন ভাবে চুক্তি হলে তার অর্ধেক টাকাও দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, আইএসএল চালাতে গিয়ে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে এফএসডিএল। তবুও তারা ভারতীয় ফুটবলের স্বার্থে থাকতে চায়। কিন্তু আর্থিক চুক্তি অনেক কম হবে।
স্বাভাবিক ভাবেই ফেডারেশন কর্তারা এই প্রস্তাবে সম্মতি দেননি। তাঁরা নিজেদের মতো করে ফেডারেশনের তরফে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য কিছু পরিকল্পনা করেন। যদিও নতুন করে আর প্রস্তাব দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না ফেডারেশনের সংবিধান নিয়ে আদালতের তরফে নতুন করে কোনও নির্দেশ আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এফএসডিএলের সঙ্গেও চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না ফেডারেশন। ফলে সব দিক থেকেই এখন চুপচাপ। এফএসডিএল এপ্রিলে শেষ কিস্তির টাকা আটকে দিলেও ফেডারেশন কর্তারা এখন কিছুই করতে পারছে না। কিন্তু এটুকু তো বোঝাই যাচ্ছে, ভারতের আপামর ফুটবল সমর্থকদের পাশাপাশি এফএসডিএলও ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কাজ কর্মে একদমই খুশি নয়। না হলে শুধু শুধু টাকা আটকে রাখা কেন? সব মিলিয়ে সময়টা একদমই ভাল যাচ্ছে না ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের। একে দুর্বল হংকংয়ের কাছে হার। তারপর আর্থিক সরবরাহ আটকে যাওয়া। সব মিলিয়ে বেশ চাপে রয়েছে ফেডারেশন।
