দুলাল দে, মারগাঁও: সুপার কাপের সব দলগুলিই একটা করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। কিন্তু প্রত্যেক দলের কাছেই প্রশ্ন, আইএসএল করার যে প্রতিশ্রুতিতে সবাই সুপার কাপ খেলতে রাজি হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত বহু প্রতীক্ষিত সেই ইন্ডিয়ান সুপার লিগ হবে তো? কারণ, সোমবার পর্যন্ত যা খবর, তাতে এফএসডিএলের করা ১৮৮টি প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত দিতে পারেনি টেন্ডার কমিটি। শোনা যাচ্ছে, টেন্ডারের শর্ত নিয়ে এত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্রশ্ন এফএসডিএল করেছে যে, তার উত্তর তৈরি করতে সময় লাগছে। আশা করা হচ্ছে, মঙ্গল-বুধবারের মধ্যে উত্তর দিয়ে দিতে পারে টেন্ডার কমিটি। এই উত্তর পাওয়ার পর ঠিক হবে, আইএসএল খেলার জন্য আদৌ বিড করবে কি না এফএসডিএল।
আইএসএলের দলগুলি ভাবছে, দেশের এক নম্বর লিগ নিয়ে। কিন্তু কেউ ভাবছেই না, আই লিগের খবর কী? এই মরশুমে আই লিগের আয়োজন করতে তো কোনও সমস্যা নেই। পূর্ব শর্ত মতো ডিসেম্বরের মধ্যেই এফএসডিএল ৫০ কোটি টাকা দিয়ে দেবে ফেডারেশনকে। ক্লাবগুলির প্রশ্ন, তাহলে আই লিগের ক্রীড়াসূচী, দিনক্ষণ প্রকাশ হচ্ছে না কেন? সবাই আইএসএল নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু দেশের ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলিরও যে দিনক্ষণ কেউ বলতে পারছে না, এই ব্যাপারে কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না।
আইএসএলের মতো আই লিগ চালানোর জন্যও একটা টেন্ডার কমিটি গঠন করেছিল ফেডারেশন। সেই টেন্ডারের কী হল, কিছুই জানা যাচ্ছে না। আসলে আই লিগের অবনমন নিয়ে বেঙ্গালুরু এবং দিল্লির মধ্যে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার জন্যই আই লিগের শুরুও পুরো জটিল হয়ে রয়েছে। অনেক কাঠ, খড় পোড়ানোর পর, ক্যাশের উদ্যোগে আই লিগের চ্যাম্পিয়নশিপ ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি আই লিগের অবনমনের। শোনা যাচ্ছে সুবিচার চেয়ে ইন্টার কাশীর মতো বেঙ্গালুরুও ক্যাশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ জানানোর পর, ক্যাশের তরফে আজ পর্যন্ত কোনও আপডেট নেই। এদিকে, অবনমন আটকাতে আপিল কমিটির দ্বারস্থ হয়েছে রঞ্জিত বাজাজের দিল্লি এফসি। একদিকে, তিনি বলছেন আইএসএলে অবনমন চালু করতে হবে। উল্টোদিকে আবার আইএসএলে অবনমন নেই বলে, নিজের ক্লাবকে বাঁচাতে আই লিগেরও অবনমন আটকাতে উঠে পড়ে লেগেছেন। সব মিলিয়ে ঘেঁটে 'ঘ' হয়ে রয়েছে আই লিগের অবনমন। ফলে আই লিগ নিয়েও কিছুই করতে পারছে না ফেডারেশন।
আইএসএল, আই লিগ ছাড়ুন। আইডব্লুএল, সন্তোষ ট্রফি এই প্রতিযোগিতাগুলোও কবে হবে, কেউই বলতে পারছে না। আইএসএলের টেন্ডার নিয়ে ২৫ অক্টোবর প্রশ্নোত্তর পর্বের বিষয়ে চূড়ান্ত যে তালিকা পাওয়া গিয়েছে তা হল, রাক আডভাইসরি, সুপার সাব (স্পোর্টস ফাইভ), ফ্যানকোড, এফএসডিএল এবং জেএসডব্লু। মোট এই পাঁচটি সংস্থা প্রশ্নোত্তর পর্বে ছিল। কিন্তু এই তালিকায় জেএস ডব্লুকে দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। কারণ, যে ক্লাবটি খোদ আইএসএলে খেলছে, সে আইএসএল চালাবে কী করে? এতো স্বার্থের সংঘাত। সঙ্গে সঙ্গে এফএসডিএলের তরফে প্রতিনিধি জেএসডব্লুর প্রতিনিধির সেই ভার্চুয়াল উপস্থিত থকা নিয়ে আপত্তি জানায়। এফএসডিএলের তরফে পরিস্কার বলা হয়, এই মিটিংয়ে জেএসডব্লুর প্রতিনিধি থাকতে পারবে না। টেন্ডার কমিটিও সেই প্রস্তাব মেনে নেয়। ফলে বিদায় নেন জেএসডব্লুর প্রতিনিধি।
এদিকে ফ্যানকোডকে দেখেও অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। কারণ, ফ্যানকোডের সঙ্গে এফএসডিএলের সখ্য সবাই জানেন। এখন অপেক্ষা টেন্ডার কমিটির উত্তর এবং ৫ নভেম্বর বিড ওপেন পর্যন্ত। যেখানে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা দিয়েছিল ফেডারেশন, সেখানে ২৭ অক্টোবরেও বলা যাচ্ছে না, কারা আইএসএলের টেন্ডারে অংশ নেবে।
