স্টাফ রিপোর্টার: মাস কয়েক আগেই একটা অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বাংলার ফুটবল। সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের সব সদস্যকেই চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু ঘোষণা নয়, সেই ফুটবলারদের অধিকাংশই ইতিমধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন। বঙ্গ ফুটবলের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি আগে। আর বাংলার সন্তোষ জয়ী দলকে ভবানীপুর ক্লাবের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছিলেন, কলকাতা লিগের প্রতি দলে খেলানো হোক ১১ জন ভূমিপুত্রকে। যাতে উন্নতি হয় বঙ্গ ফুটবলের। ক্রীড়ামন্ত্রীর সেই স্বপ্ন আগামী মরশুমেও পূরণ করতে পারছে না আইএফএ। কারণ বৃহস্পতিবার লিগের ক্লাবদের সঙ্গে বৈঠকের পর তারা জানিয়েছে, আসন্ন কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনে প্রথম একাদশে পাঁচ ভূমিপুত্র খেলানো বাধ্যতামূলক করা হবে। অর্থাৎ ক্রীড়ামন্ত্রীর কথামতো ১১ জন ভূমিপুত্র খেলানো তো দূর, তার অর্ধেকও করতে পারল না আইএফএ!
অবশ্য আসন্ন লিগে ১১ জন ভূমিপুত্র খেলানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল না আইএফএ'র। বরং তারা বর্তমান নিয়মে থাকা চার ভূমিপুত্রকে বাড়িয়ে সাত করার কথা ভেবেছিল। সেইমতো আগেই গভর্নিং বডির মিটিংয়ে প্রস্তাব পাশ করিয়ে রেখেছিল বঙ্গ ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা। অর্থাৎ, আসন্ন লিগে ক্রীড়ামন্ত্রীর পরামর্শ মানার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না আইএফএ'র। এদিন বৈঠকে ক্লাবগুলিকে আইএফএ ৭ ভূমিপুত্রের নিয়ম চালু করার প্রস্তাব দেয়। যদিও ভবানীপুর ক্লাবের মতো দু-একটি ক্লাব সেই প্রস্তাব শুনে পালটা ১১ ভূমিপুত্র বাধ্যতামূলক করার দাবিও জানায়।
তবে সেই দাবিতে কান দেয়নি আইএফএ। এমনকী এর আগে ভবানীপুর ক্লাবের সংবর্ধনা মঞ্চে ক্রীড়ামন্ত্রীর মুখে ১১ জন ভূমিপুত্রের কথা শুনে যাঁরা বাহবা দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এদিন ভবানীপুরের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। ওই ক্লাব কর্তাদের একাংশ আইএফএ'র দেওয়া সাত ভূমিপুত্রের নিয়মে রাজি হননি। শেষপর্যন্ত অধিকাংশ ক্লাব সাত ভূমিপুত্রের নিয়মে সম্মত হলেও মূলত ওই মুষ্টিমেয় কর্তার চাপেই শেষ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ ভূমিপুত্রের নিয়ম চালু করে আইএফএ। যা নিয়ে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্তের বক্তব্য, “ক্লাবগুলি জানিয়েছে যথেষ্ট ভূমিপুত্র ফুটবলার পাওয়া যাচ্ছে না। আর আইএসএলের ক্লাবগুলির কিছু বক্তব্য ছিল। আমরা সবকিছু বিবেচনা করেই পাঁচ ভূমিপুত্র বাধ্যতামূলকের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এর পাশাপাশি লিগের আরও কিছু নিয়ম বদল করা হয়েছে এদিনের বৈঠকে। এবার থেকে গ্রুপ পর্বে পাওয়া পয়েন্ট চ্যাম্পিয়নশিপ রাউন্ডে ‘ক্যারি ফরোয়ার্ড’ হবে না। এমনকী এই রাউন্ডে ক্লাবগুলি আর নিজেদের গ্রুপ থেকে আসা অন্য দুই ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলবে না। অর্থাৎ কমছে লিগের ম্যাচ সংখ্যা। তবে রেলিগেশন রাউন্ডে পয়েন্ট ‘ক্যারি ফরোয়ার্ড’ হবে। এদিনের বৈঠকে আসেননি মোহনবাগান, ডায়মন্ড হারবার এফসি, মেসারার্স ক্লাব এবং বিএসএসের কোনও প্রতিনিধি। মোহনবাগানের কর্তা বিনয় চোপড়ার বক্তব্য, একদিন আগেই বৈঠকের কথা জানানোয় প্রতিনিধি পাঠাতে পারেননি তাঁরা। অন্যদিকে ডায়মন্ড হারবার জানিয়েছে, ইমেল না দেখায় আসতে পারেনি তারা।
