ভারত: ০
হংকং: ১ (পেরেইরা)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হংকংয়ের কাছেও হার ভারতের। এটুকু বললেই যেন ভারতীয় ফুটবলের দুরবস্থার ছবিটা আরেকবার সামনে ভেসে ওঠে। কে বলবে, তিনবছর আগে এই দলটাকেই ৪-০ গোলে হারিয়েছিল ব্লু টাইগার্সরা। এখনও ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তারা ভারতের থেকে ২৬ ধাপ পিছিয়ে। খেলা দেখে অবশ্য সেটা বোঝা গেল না। বা বলা ভালো, ভূরিভূরি সুযোগ নষ্ট করে অ্যাওয়ে ম্যাচে হংকংয়ের কাজ সহজ করে দিল মানোলো মার্কেজের দল। যিনি এখনও ভারতকে একটি ম্যাচও জেতাতে পারেননি। এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে হংকং ম্যাচ জিতল ১-০ গোলে। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন ফার্নান্দো পেরেইরা।
কাইতাক স্টেডিয়ামে ৫০ হাজার দর্শকের সমর্থন। গোটা স্টেডিয়াম লালে লাল। তার মধ্যে ভারতের প্রথম একাদশে ছিলেন না সুনীল ছেত্রী। একে তো ঘরের মাঠ, তার উপর মানোলো মার্কেজের স্ট্রাটেজি। দুইয়ের অ্যাডভান্টেজ নিয়েই নামল হংকং। একসময় বেঙ্গালুরু এফসিতে কোচ ছিলেন হংকংয়ের বর্তমান কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড। সুনীলও তাঁর অধীনে খেলেছেন। সেই ওয়েস্টউডও যেন এদিন বুঝিয়ে দিলেন, কোথায় কোথায় রক্তশূন্যতা।
প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করে হংকং। রক্ষণে সন্দেশ জিঙ্ঘান ও আনোয়ার আলির জুটি তবু কাজের কাজটি সামলে দিচ্ছিলেন। বাঁদিকে অভিষেক সিংও বারবার ওভারল্যাপে উঠছিলেন। কিন্তু আশিস রাই আরও একটা সুযোগ পেয়েও তথৈবচ অবস্থা। হংকংয়ের ক্রমাগত চাপে তখন নাভিশ্বাস অবস্থা। মাঝমাঠ ছন্নছাড়া। সে তবু একরকম। কিন্তু আশিক কুরুনিয়ান বা লিস্টন কোলাসোরা প্রতিমুহূর্তে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, সুনীল ছেত্রীকে কেন অবসর নিয়েও জাতীয় দলে ফিরতে হয়। যে সুযোগগুলো হাতছাড়া হল, তা রীতিমতো আতঙ্কের। সুনীল নেমেও উদ্ধার করতে পারলেন না। বিপরীতে হংকংও যে গোল মিস করেনি তা নয়। কিন্তু ভারত যে থাইল্যান্ড ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়নি, তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। আর শুধু থাইল্যান্ডই বা কেন? গত দেড়বছরে ভারতের জয়ের খতিয়ান শূন্য। সোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া ছাড়া আর কীই বা করতে পারেন সমর্থকরা?
তবু মনে হচ্ছিল, হংকংকে রুখে দিতে পারবে ভারত। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। কিন্তু শেষবেলায় রক্ষণ ও গোলকিপারের পরিকল্পনা বোধহয় অন্যরকম ছিল। হংকংয়ের স্ট্রাইকারকে আনোয়ার আলি কভার নিতে পারলেন না। বিশাল কাইথ এগিয়ে এসে ফ্লাইট মিস করে ধাক্কা মারলেন বিপক্ষকে। দুজনের তালমিলের অভাবে পেনাল্টি পায় হংকং। অনেকটা ব্রুনো ফার্নান্দেজের মতো শট করে জালে বল জড়িয়ে দেন ফার্নান্দো পেরেইরা।
এই গ্রুপে ভারত আপাতত সবার শেষে। যেখানে উজবেকিস্তান-জর্ডনরা পারে, সেখানে ভারত পারে না। আদৌ পারবে কি না, বা পারার সদিচ্ছা আছে কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন ভক্তরা। শোনা যাচ্ছিল, এই ম্যাচ জিতলে ফেডারেশনের থেকে ৪২ লক্ষ টাকা পুরস্কার পেতেন সুনীলরা। টাকাও মোটিভেশন জোগাতে পারল না, নাকি ক্ষমতার অভাব, নাকি কোচের ভুল স্ট্র্যাটেজি? কোনটা ডোবাচ্ছে ভারতকে? প্রশ্নগুলো সহজ, উত্তর অজানা।