সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোনালি স্বপ্ন বুনেছেন ভারতীয় মেয়েরা। যে স্বপ্ন দেখাতে পারেননি ছেলেরা, সেই স্বপ্নকে সত্যি করে দেখিয়েছেন ‘নীল বাঘিনী’রা। থাইল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছেন ব্লু টাইগ্রেসরা। এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে তাঁদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য বেজায় খুশি অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন। সিনিয়র ভারতীয় মহিলা জাতীয় দলের জন্য ৫০,০০০ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
মহিলাদের এশিয়ান কাপের যোগ্যতা নির্ণয় পর্বে জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছিল ভারতীয় মহিলা দল। প্রথম ম্যাচে মঙ্গোলিয়াকে ১৩-০ গোলে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে তিমুর লেস্তেকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ভারতের মেয়েরা। ইরাককে ৫-০ গোলে হারিয়ে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন সঙ্গীতা বাসফোর, মনীষা কল্যাণরা। কার্যত 'ফাইনাল' সেই ম্যাচে শক্তিশালী থাইল্যান্ডকে হারায় ভারত। আর তারপরেই সামনে বছর অস্ট্রেলিয়ায় হতে চলা এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে যায় ভারতীয় মহিলা দল।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার সহযোগিতায় মহিলা ফুটবলের উন্নয়নে এগিয়ে এসেছে AIFF। তৃণমূল এবং যুব কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফেডারেশন। এরকম একটি উদ্যোগ হল ASMITA মহিলা ফুটবল লিগ। যা ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সারা দেশে অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫ এবং অনূর্ধ্ব-১৭ স্তরে ১৫৫টি লিগ সফলভাবে পরিচালনা করেছে। ২০২৩-২৪ সংস্করণে ৬,৩০৫ জন জুনিয়র মহিলা ফুটবলার অংশ নিয়েছিলেন। ২০২৪-২৫ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৮,৬৫৮।
এই ধরনের উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় ভারতে রেজিস্ট্রীকৃত মহিলা ফুটবলারের সংখ্যা ২৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের জন্য বেঙ্গালুরুতে ৫৩ দিনের প্রস্তুতি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। এই সময় ভারত কেবল নিজেদের মধ্যে অনুশীলন ম্যাচ নয়, খেলেছে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে দু'টি ফিফা মহিলা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচও। অর্থাৎ, এশিয়ান কাপের মূলপর্বে উঠে বহুদিনের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে 'নীল বাঘিনী'দের।
২০২৬ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কাপ। সেখানে কিন্তু লড়াই আরও কঠিন। ফেডারেশনের লক্ষ্য থাকবে, তার আগে প্রস্তুতিতে কোনও রকম ফাঁক না রাখার। এরজন্য উচ্চমানের আন্তর্জাতিক শিবির তো বটেই, প্রয়োজন একাধিক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলারও। এশীয় সেরাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলার জন্য ভারতীয় মেয়েদের প্রস্তুত করার দিকে নজর দিতে হবে ফেডারেশনকে। তাহলেই এশিয়ান কাপের মতো কঠিন প্রতিযোগিতায় সাফল্য আসবে। ২০০৩ সালে শেষবার যোগ্যতার ভিত্তিতে মহিলা এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০২২ সালে আয়োজক দেশ হিসেবে এশিয়ান কাপ খেলে ভারত। এরপর আবার এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলতে দেখা যাবে ব্লু টাইগ্রেসদের। আপাতত দেশে ফিরেছেন ভারতীয় ফুটবলাররা। নয়াদিল্লিতে তাঁদের জমকালোভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে।
