মোহনবাগান: ৪ (শুভাশিস ২, মনবীর ২)
মহামেডান: ০

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা দল লিগ টেবিলের শীর্ষে, আর একটা দল সবার শেষে। 'ডার্বি' বলা হলেও দুটো দলের পরিস্থিতির বিস্তর তফাৎ। মোহনবাগান যেখানে লিগ শিল্ডের দিকে হাত বাড়াচ্ছে, সেখানে চূড়ান্ত ডামাডোল মহামেডানে। তার মধ্যে কোচ চেরনিশভ 'ছুটি'তে অনুপস্থিত। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচের ফলাফল যা হতে পারে, ঠিক তাই হল। মহামেডানকে ৪-০ গোলে হারাল মোহনবাগান। দুটি করে গোল অধিনায়ক শুভাশিস ও মনবীরের।
যুবভারতীতে এদিন শুরু থেকেই খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিল সবুজ-মেরুনের ফুটবলারদের পায়ে। এদিন প্রথম দলে ছিলেন না আলবার্তো রদ্রিগেজ। সেখানে শুরু করেন বঙ্গসন্তান দীপেন্দু বিশ্বাস। তিনি তো নজর কাড়লেনই, তবে এদিনের নায়ক আরেক বঙ্গসন্তান। তিনি মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বোস। মরশুমের শুরুর দিকে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু তারপর শুধু ডিফেন্স নন, আক্রমণে উঠে এসে গোল করে দলকে জিতিয়েছেন। এদিন মহামেডানকে গোলের মালা শুরু হল তাঁর পা দিয়েই। আর তার অ্যাসিস্ট দীপেন্দুর। সাদা-কালো ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে গোলের সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন শুভাশিস। ফাঁকায় বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দিতে ভুল করেননি তিনি।
দ্বিতীয় গোল এল ৮ মিনিট পরে। কামিংসের বিষাক্ত কর্নার যখন বক্সে ভেসে আসছে তখন মনবীর একেবারেই অরক্ষিত। মহামেডানের গোলকিপার পদম ছেত্রী এগিয়ে এসেও মনবীরের গোল আটকাতে পারেননি। তারপর অবশ্য খেলায় কিছুটা ফেরার চেষ্টা করে মেহরাজউদ্দিন ওয়াড্ডুর দল। কিন্তু একা অ্যালেক্সিস গোমেজ আর কত করবেন? সারা মাঠ জুড়ে খেললেন। অনেকগুলো ক্রস তুললেন। কিন্তু সুযোগ পেয়েই মোহনবাগানকে ফের এগিয়ে দিলেন শুভাশিস। ম্যাচের বয়স তখন ৪৩ মিনিট। বক্সের মধ্যে ম্যাকলারেনের ফ্লিক পাস মহামেডান ডিফেন্ডারদের স্তব্ধ করে দেয়। সেই সুযোগ নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করে যান মোহনবাগানের অধিনায়ক।
অবশ্য তার একটু পরেই ব্যবধান কমাতে পারত মহামেডান। তাদের স্ট্রাইকার মনবীরের শট বাজপাখির মতো ঝাঁপিয়ে আটকান গোলকিপার বিশাল কাইথ। অবশ্য 'বিপদ কখনও একা আসে না'। একে তো ৩ গোল হজম করে বিপাকে মহামেডান। তার মধ্যে প্রথমার্ধ শেষের ঠিক আগে অলড্রেডকে বল ছাড়া লাথি মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন কাসিমোভ। ম্যাচ একপ্রকার তখনই শেষ হয়ে যায়। ৫৩ মিনিটে 'কফিনে' শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন মনবীর। এবারও কামিংসের ক্রস এবং অরক্ষিত অবস্থায় মনবীরের হেড।
'ডার্বি'তে চেনা ছন্দে দেখা গেল কামিংসকে। তারপরও অবশ্য গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারত মোহনবাগান। যে কারণে পেত্রাতোসকেও নামান মোলিনা। কিন্তু পেত্রাতোস ও ম্যাকলারেন, দুজনেই সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। ৪-০ গোলে জেতা ম্যাচে হয়তো মোলিনাকে এই একটা ব্যাপারই দুশ্চিন্তায় ফেলতে পারে। এই জয়ের ফলে ১৯ ম্যাচে মোহনবাগানের পয়েন্ট দাঁড়াল ৪৩। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা গোয়ার দুম্যাচ কম খেলে সংগ্রহ ৩৩। ফলে 'ডার্বি' জিতে লিগ শিল্ডের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রইল মোহনবাগান। আর সেখানে ১৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে সবার শেষেই রইল মহামেডান।