দুলাল দে: ভারতীয় ফুটবলে এখন সবচেয়ে আগ্রহের বিষয় ‘স্পোর্টস কোড’। যে স্পোর্টস কোডের উপর ভিত্তি করেই ঠিক হবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সংবিধান। যে সংবিধানের উপর ভর করে হবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন। যেদিকে এখন তাকিয়ে আপামর ফুটবল ফ্যানরা। কারণ, এতদিনে সবাই বুঝে গিয়েছেন, স্থায়ী সংবিধান করে ফেডারেশনের নির্বাচন না হলে কিছুতেই কাটবে না ভারতীয় ফুটবলের জটিল অবস্থা। আর সেই কারণেই কেন্দ্রীয় ক্রীড়া দফতর থেকে বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার কাছে পাঠানো স্পোর্টস কোড নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রীড়া মহলে। আর প্রস্তাবিত সরকারি ক্রীড়াদফতরের প্রস্তাবিত স্পোর্টস কোডে ভারতীয় ফুটবলে সবচেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন ফুটবল ফেডারেশনের প্রাক্তন সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেল। আর স্পোর্টস কোডে যা প্রস্তাব ক্রীড়া সংস্থাগুলির কাছে এসেছে, তা যদি সত্যি সত্যিই সংসদে পাশ হয়ে যায়, তাহলে ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না বর্তমান সভাপতি কল্যাণ চৌবে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই সমস্যা হবে না বাইচুং ভুটিয়ার। প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে তাঁর প্রোফাইলের জন্যই অনায়াসে ফেডারেশনের নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন তিনি।
সবাই এই মুহূর্তে তাকিয়ে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দিকে। আদালতের গ্রীষ্মাবকাশের ছুটি শেষ হলেই সবাই আশা করছেন, নির্বাচনের আচরণ বিধি জানা যাবে। তার আগে সরকারের তরফ থেকেও স্পোর্টস কোড ঠিক করে সংসদে পাশ করিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। সেই জন্যই স্পোর্টস কোডের খসড়া তৈরি করে বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, সংস্থাগুলির মতামত।
যে স্পোর্টস কোড সংস্থাগুলির কাছে পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে কম করে দু'টো দফায় কার্যকরী কমিটিতে থাকতেই হবে। আর এখানেই বাদ পড়ে যাবেন বর্তমান ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে। এর আগে কোনওদিন ফেডারেশনে আসেননি তিনি। তবে কোনও কার্যকরী কমিটিতে না থাকলেও বাইচুংয়ের প্রোফাইলের ফুটবলার নির্বাচনে সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ, দু'টো পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। সেরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন প্রাক্তন সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেলও।
এর আগের নিয়ম অনুযায়ী, তিনবার সভাপতি কিংবা ফেডারেশনের অন্য কোনও পদে থাকলে চতুর্থবার ফেডারেশনের কোনও পদে থাকতে পারতেন না। এই নিয়মেই সরে যেতে হয়েছিল প্রফুল্ল প্যাটেলকে। কারণ, পরপর তিনটে দফায় তিনি সভাপতি ছিলেন ফেডারেশনে। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, দু'টো দফায় সভাপতি কিংবা কোষাধ্যক্ষ থাকার পর একবার কুলিং পিরিয়ডে গেলেই ফের সভাপতি কিংবা কোষাধ্যক্ষ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন তিনি। এখানেই ছাড় পেয়েছে যাচ্ছেন প্রফুল্ল প্যাটেল। তিনবার সভাপতি থাকার পর একবার কুলিংয়ে চলে গিয়েছেন তিনি। তবে স্পোর্টস কোডে রয়েছে দু’দফায় থাকার পরেই একবার কুলিংয়ে যেতে হবে। এই জায়গাটায় একেক পক্ষ একেকরকম ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, প্রফুল্ল প্যাটেলের সময় এই স্পোর্টস কোড ছিল না। এখন যখন তৈরি হচ্ছে, তখন তিনি কুলিং পিরিয়ডে আছে। ফলে তিনি যদি ভোটে দাঁড়ান, তাহলে তাঁর উপর নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। ফলে নির্বাচনে দাঁড়াতে কোনও সমস্যাই হবে না। সেরকম বলা হয়েছে, ৭৫ বছর পর্যন্ত সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ পদেও থাকতে পারবেন। ফলে সব দিক থেকেই ফেডারেশন সভাপতি পদে লড়ার জন্য সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন প্রফুল্ল প্যাটেল। সঙ্গে বাইচুং ভুটিয়াও। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, সবার আগে এই স্পোর্টস কোড পাশ করতে হবে।