হোসে র্যামিরেজ ব্যারেটো: আর একটা ম্যাচ। এই ম্যাচটা জিততে পারলেই ইতিহাস। এমন একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মোহনবাগান ফুটবলাররা। তার উপর যুবভারতীর ওই ব্যাঘ্রগর্জন। প্রত্যাশার চাপ তৈরি হয়েছে জানি। তবে এই চাপটা সরিয়ে রেখে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে ইতিহাস তৈরি হওয়া সময়ের অপেক্ষা। প্রাক্তন মোহনবাগান ফুটবলার হিসাবে ওদের একটাই উপদেশ দেব, পুরো বিষয়টাকে উপভোগ করো।
খাতায়কলমে এবারের আইএসএলের সেরা দল মোহনবাগান। তবু বলব, ফাইনাল যেহেতু একটা ম্যাচের খেলা, তাই সতর্ক থাকতেই হবে কোচ মোলিনাকে। গতবারও লিগ শিল্ড জয়ের পর ফাইনালে হারতে হয়েছিল শুভাশিসদের। সারা লিগে দারুণ খেলে লিগ শিল্ড জয়ের পরও যদি এই ম্যাচটা হেরে যেতে হয়, তা হলে ‘ডবল’ হবে না। তার উপরে প্রথম দু'য়ে না থেকেও কিন্তু ফাইনালে উঠে এসেছে বেঙ্গালুরু। যুবভারতীতে সেমিফাইনাল ম্যাচে উপস্থিত ছিলাম। দেখেছি বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করতে পারলেও গোল করতে পারেনি মোহনবাগানের আক্রমণভাগের ফুটবলাররা। ফাইনালে সেই রকম সুযোগ তৈরি করে খুব বেশি মিস করা যাবে না।
ফাইনালে মোলিনার চিন্তা কমতে পারে যদি চোট কাটিয়ে মনবীর ফিরে আসে। ও ফিরলে উইংয়ে শক্তি বাড়বে। একদিকে মনবীর আরেক দিকে লিস্টন। দুই প্রান্ত থেকে ওদের দিয়ে আক্রমণ তৈরি করেন মোলিনা। যেটা বিপক্ষ দলের কাছে ত্রাসের কারণ হয়ে যায়। দুই উইং থেকে আক্রমণ বাড়লে ম্যাকলারেনদের গোল করার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়। সেমিফাইনালে মনবীর চোটের জন্য প্রথম একাদশে ছিল না। আশা করি ফাইনালে ফিরবে। ও ফিরলেই দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ আরও বেড়ে যাবে মোহনবাগানের।
আরও একটা বিষয় বলার আছে, গত ম্যাচে আপুইয়া যেভাবে দুরন্ত শটে গোল করল, তা প্রশংসাযোগ্য। বক্সের বাইরে থেকে এরকমই শট নেওয়ার প্রবণতা বজায় রাখতে হবে। ফাইনালেও ওর থেকে এমন প্রচেষ্টা আশা করব। মোহনবাগান রক্ষণকে মাথায় রাখতে হবে সুনীলের মতো অভিজ্ঞ সুযোগ সন্ধানী স্ট্রাইকার বিপক্ষে রয়েছেন। যতক্ষণ মাঠে থাকবে, ততক্ষণ কিন্তু ওকে সুযোগ দেওয়া যাবে না। মাথায় রাখতে হবে, এ মরশুমে ১৪টা গোল করে ফেলেছে।
যেভাবে প্লে অফ জিতে ফাইনালে উঠে এসেছে ওরা, তাতে বোঝা যাচ্ছে, যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী বেঙ্গালুরু। তার মধ্যে মুম্বই সিটি এফসিকে পাঁচ গোল দিয়েছে! এখন থেকেই বুঝতে পারছি ফাইনালের আবহ কী হতে চলেছে। গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের সামনে খেলার কথা উঠলেই আমার অতীতের দিনগুলো মনে পড়ে যায়। ওই চিৎকার আর স্লোগানই তাতিয়ে দিয়ে যায় ফুটবলারদের। ওরা যে খেলাটা সারা মরশুম জুড়ে খেলেছে, আমি অনুরোধ করব, চাপকে উপেক্ষা করে সেই স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই ডবল ক্রাউন হওয়া অসম্ভব নয়। মোহনবাগান সভ্য সমর্থকদের মতো আমিও কিন্তু শুভাশিসদের ডবল ক্রাউনের স্বপ্নে বিভোর।