সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুনীল ছেত্রীর বিকল্প কে? উত্তরটা সুনীল ছেত্রী। আট মাস আগে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁকেই আবার ফিরিয়ে আনা হল ভারতীয় দলে। তাতে হাসি ফুটতে পারে ফুটবল ভক্তদের মুখে। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে, দেশের সার্বিক ফুটবল পরিকাঠামো নিয়ে। বিশেষ করে স্ট্রাইকার তুলে আনা নিয়ে।
১৯ বছর ধরে সুনীল খেলছেন ভারতের জার্সিতে। ১৫০ ম্যাচে রয়েছে ৯৪ গোল। সক্রিয় ফুটবলারদের মধ্যে রোনাল্ডো-মেসির পরেই তাঁর গোলসংখ্যা। অবসরের আগে ফিফা থেকেও একাধিকবার শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে ভারত অধিনায়ককে। গত বছর জুন মাসে অবসর নেন সুনীল। কুয়েতের বিরুদ্ধে যুবভারতীতে শেষ ম্যাচ খেলতে নামেন। সেই ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে। ম্যাচের পর ভক্তদের চোখে জল এনে রাজকীয় মহাপ্রস্থান ঘটে সুনীলের।
তখন কে জানত, সেই 'ক্যাপ্টেন, লিডার, লেজেন্ড'কেই ফের ডেকে আনতে হবে এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের বৈতরণী পার করার জন্যই। তাও বিপক্ষে এশিয়ার মহা শক্তিশালী কোনও দেশ নয়। বাংলাদেশ ও মলদ্বীপের বিরুদ্ধে খেলবেন ব্লু টাইগার্সরা। দুটো দলই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের থেকে পিছনে। তাদের হারানোর জন্য কিনা শেষে অবসর ভেঙে ফিরতে হল সুনীলকে। বৃহস্পতিবার কোচ মানোলো মার্কুয়েজ যে দল ঘোষণা করেন, তাতে জ্বলজ্বল করছে সুনীল ছেত্রীর নাম।
আসলে এ যেন একপ্রকার ভারতীয় ফুটবলের স্ট্রাইকার সমস্যাকেই তুলে ধরছে। ২০২৪-এ একটি ম্যাচেও জয় পায়নি ভারতীয় দল। ইগর স্টিমাচকে বিদায় দিয়েও খুব একটা কাজের কাজ হয়নি। শেষ ১০ ম্যাচে গোল করেছে মাত্র ৪টি। তার মধ্যে একটি গোল আবার সুনীলেরই। বাকি তিনটি গোল ছাংতে, রাহুল ভেকে ও ফারুখ চৌধুরীর। মরিশাসের মতো দলের বিরুদ্ধে জালে বল জড়াতে পারেনি ভারতীয় দল।
অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছেন আইএসএলের দিকেও। প্রায় সব দলই ভরসা রাখে বিদেশি স্ট্রাইকারের উপর। সে অর্থে ভারতীয় বক্স স্ট্রাইকার ক্লাবগুলোতে কোথায়? ছাংতে, লিস্টনরা সে অর্থে স্ট্রাইকার নন। মনবীর, রহিম আলিরা স্ট্রাইকার হিসেবে শুরু করলেও, বিদেশিদের ভিড়ে জায়গা করতে চলে এসেছেন উইংয়ে। ইস্টবেঙ্গলে ডেভিড জায়গা পান না দিয়ামান্তোকোসের জন্য। চলতি আইএসএলের পাঁচজন সেরা গোলদাতার মধ্যে চারজন বিদেশি। ভারতীয় মাত্র একজনই। তাঁর নাম সুনীল ছেত্রী। ৪০ বছর বয়সেও তাঁর নামের পাশে ১২টি গোল। ফলে সেই পুনর্মুষিক ভব অবস্থা। সুনীল ছেত্রীর বিকল্প খুঁজতে গিয়ে ফিরে আসতে হল সুনীল ছেত্রীতেই। নিন্দুকরা প্রশ্ন তুলতেই পারে, ভারতীয় ফুটবলও কি এভাবেই পিছন দিকে হাঁটছে?
