দেবব্রত দাস, পাত্রসায়ের: কেউ পেশায় শিক্ষক, কেউ সরকারি কর্মী। আবার কেউ বেকার শিক্ষিত যুবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অন্যের সঙ্গে পরিচয়। সেই সুবাদে লকডাউনের জেরে এলাকার দুস্থ, অসহায় মানুষজনের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, এঁরা সম্মিলিতভাবে নিজেদের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে অনলাইনে ফ্রি কোচিং চালু করা হয়েছে এলাকার পড়ুয়াদের জন্য। বাঁকুড়ার পাত্রসায়েরে এভাবেই লকডাউনে নিত্যদিনের জীবনের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠছেন, একে অন্যের হাত ধরে।
পাত্রসায়ের ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। এই সামাজিক সংগঠনটির কাজ বহুমুখী। লকডাউনে যাদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটানোই মুশকিল, তাঁদের অন্নের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি এভাবে এলাকার সাধারণ পড়ুয়াদের জন্য অনলাইনে ফ্রি কোচিং চালু করাও বেশ অভিনব উদ্যোগ। লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ হওয়ায় পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল পড়ুয়ারা। শহর এবং শহর সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গায় অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু হলেও, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কেউ এই পদ্ধতির সঙ্গে অভ্যস্ত নয়। পাত্রসায়রের এই সংস্থার হাত ধরেই তারা শিখল পড়াশোনার নতুন এক প্রক্রিয়া। তাঁদের এই কাজে খুশি এলাকার বাসিন্দা
থেকে পড়ুয়া সকলেই।
[আরও পডু়ন: আমফানের দাপটে ভেঙেছে পা-ডানা, রক্তাক্ত পাখিদের শুশ্রূষায় মগ্ন হাওড়ার পরিবেশপ্রেমীরা]
আসলে এই সংস্থা গড়ে তোলার নেপথ্যে রয়েছেন পাত্রসায়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষিত বেকার যুবক। তাঁরাই ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে পড়ানোর ব্যবস্থা করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম কর্মকর্তা অর্ক মুখোপাধ্যায় বলেন, “লকডাউনের জন্য দুস্থ মানুষজন অসুবিধায় পড়েছেন। তাদেরকে আমরা যথাসাধ্য খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছি। লকডাউনে স্কুল,কলেজ-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েছে। এই অবস্থায় আমরা পড়ুয়াদের সামান্য সাহায্য করার জন্য অনলাইনে ফ্রি কোচিং ক্লাস চালু করেছি।” পাত্রসায়ের বামিরা গুরুদাস বিদ্যায়তনের নবম শ্রেণির ছাত্র অনিন্দ্য দাসের কথায়, “এই অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে আমরা খুবই উপকৃত।” লকডাউনে ঘরবন্দি থাকলেও পড়াশোনায় পিছিয়ে না থেকে উলটে বিনামূল্যে নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষাগ্রহণ বেশ উপভোগই করছে পড়ুয়ারা।
[আরও পডু়ন: লকডাউনে কোন পণ্যের চাহিদা তুঙ্গে অনলাইন শপিং সাইটে, জানেন?]
The post পড়াশোনা হচ্ছে না লকডাউনে? গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের জন্য চালু বিনামূল্যে অনলাইন কোচিং appeared first on Sangbad Pratidin.