অফিসের কাজের মাঝে ঢুলুনি, ট্রেনে-বাসে উঠেই ঘুম আর নাক ডাকছেন? চাইলেও কন্ট্রোল করা যায় না ঘুমকে। ঠিক এসে যায় দু’চোখ জুড়ে। যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ার সমস্যা রয়েছে? এর সমাধান কী? বলছেন জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মিত্র।
[জানেন কি, প্রতিদিন পপকর্ন খেলে বাড়তে পারে আপনার আয়ু?]
৪৫ বছরের অজয় সমাদ্দার রোজের ভাতঘুমটা সেরে নেন অফিস যাওয়ার পথে। চেপেচুপে একটু বসতে পেলে ছোট্ট করে ঘুম। আর দাঁড়িয়ে থাকলে ঢুলতে ঢুলতেই কেটে যায়। শুধু অজয়বাবু কেন? কানাই স্যর, পাণ্ডুয়ার পুলিশকর্তা, সল্টলেকের আইটি অফিসের তরুণ ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ‘নবান্ন’গামী ম্যাডাম – এমন অজস্র মানুষ আছেন যাঁরা আসা-যাওয়ার পথে ট্রেন, বাসে শত ভিড়েও জেগে থাকতে পারেন না। অফিসেও কাজের মাঝে হঠাৎ চোখ লেগে যায়! তারপর নিমেষে গভীর ঘুম থেকে নাক ডাকা। আবার কিছুক্ষণের মধ্যেই জেগে ওঠা। এমনকী গাড়ি চালানোর সময় কিংবা বাথরুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার কথাও শোনা যায়। অনেকে তো নিজে এই ঘুমিয়ে পড়ার অস্তিত্বও টের পান না। যেখানে সেখানে অসময়ে কেন এমন ঘুম পায়? ভেবে দেখেছেন? অভ্যাস ভেবে ভুল করবেন না। এর পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে নানা অসুখ।
[ব্রেকফাস্টে না, জানেন কী ক্ষতি করছেন শরীরের?]
ঝিমুনি কেন?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্লিপ অ্যাপনিয়া, ইনসমনিয়ার সমস্যা থাকলে অসময়ে যে কোনও স্থানেই ঘুমিয়ে পড়ার প্রবণতা থাকে। ইনসমনিয়া মানে ঘুমের সময়ে ঘুম না হওয়া। শত পরিশ্রম করেও রাতে বিছানায় শুয়ে চোখে ঘুম নেই অথবা ঘুম এলেও তা একটানা হয় না। তাই ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্তিভাব কাটে না। দিনের বেলা ঘুম পায়।
ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার সমস্যা কিংবা কোনও কাজ করতে করতে চোখ বন্ধ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে স্লিপ অ্যাপনিয়া হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শ্বাসনালীতে ফ্যাট জমলে ও নাকের মাঝখানের হাড় বাঁকা হলে নাক ডাকার সমস্যা বা স্লিপ অ্যাপনিয়া হয়। কারণ এমন হলে শ্বাসনালীর নিচ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা সঙ্কুচিত হয়ে ঘুমের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। তাই নাক ডাকার সঙ্গে আচমকা ঘুম ভাঙে। এই সমস্যা হলে শ্বাসনালী দিয়ে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ব্রেনে পৌঁছয় না। তাই সারাদিনই ক্লান্তি-ঝিমুনিভাব থাকে। থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, পার্কিনসন, স্ট্রোক হলে ও সিরোসিস অফ লিভারের মতো অসুখ থাকলেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
সমাধান কী-
সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে ভাল ঘুম অত্যন্ত জরুরি। কতটা ঘুমালে শরীর সুস্থ থাকবে তা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন। যে যতটুকু ঘুমিয়ে সারাদিন সুস্থ বোধ করবে তার ততটা ঘুম খুব দরকার। ব্রেনের কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে, ক্লান্তিভাব এড়াতে, স্বতঃস্ফূর্ত থাকতে প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। তা না হলে মনোসংযোগের অভাব হয়, এনার্জি কমে, মেজাজ ঠিক থাকে না, অবসাদ বাড়ে। কাজ ও জীবনযাত্রার মান খারাপ হয়। তাই রাতের ঘুম কেমন হচ্ছে সেদিকে নজর রাখুন। অসময়ে ঘুমিয়ে পড়লে সজাগ হোন।
পরামর্শে: ৯৮৩১৬৭১৫২৫
[জানেন, বারবার ফোটানো গরম চা শরীরের কী ক্ষতি করে?]
The post যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ছেন, বড় কোনও অসুখ নয়তো? appeared first on Sangbad Pratidin.