সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা সময় তিনি ছিলেন বাজপেয়ী-আডবানীদের ঘনিষ্ঠ। তারপর তাঁকে দেখা গিয়েছে রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও। এবার মমতার হাত ধরে প্রত্যাবর্তন করলেন লোকসভায়। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে জেতার পর শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughan Sinha) বলছেন, “সবচেয়ে দমদার, জানদার, শানদার নেত্রী মমতাই।”
আসানসোল লোকসভা (Assansol Lok Sabhe) কেন্দ্র যা এক সময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল, যে কেন্দ্রে গতবারও রেকর্ড ব্যবধানে জিতেছিল বিজেপি। সেখানেই এবারে জোড়াফুল ফুটিয়েছেন ‘শটগান’। শুধু জেতাই নয়, ব্যবধানের নিরিখেও অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন শত্রুঘ্ন। যে কেন্দ্রে বছর তিনেক আগে প্রায় ২ লক্ষ ভোটে হারতে হয়েছিল তৃণমূলকে, সেই কেন্দ্রেই শত্রুঘ্নর হাত ধরে তৃণমূল জিতলে লাখ তিনেক ভোটে। এ হেন জয়ের কৃতিত্ব অবশ্য পুরোটাই দলকে দিচ্ছেন বিহারীবাবু। আর দিচ্ছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)।
[আরও পড়ুন: এবার বাংলাতেও তৈরি হবে বিরাট হনুমান মূর্তি, হনুমান জয়ন্তীতে ঘোষণা মোদির]
জয়ের পর শত্রুঘ্ন বলছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন-বান-শানের জয় হয়েছে। এবার বিজেপি এখানে ইভিএমের খেলা দেখাতে পারেনি। স্বচ্ছ ভোট হয়েছে। তারই ফল মিলল।’’ শটগান আরও বলছেন, “২০২৪-এর নির্বাচনে খেলা ঘুরিয়ে দেবেন মমতা। কারণ তিনিই এখন দেশের সবচেয়ে শানদার, জানদার এবং দমদার নেত্রী।” বিহারীবাবুর দাবি, আগামী দিনে বিহার-সহ দেশের হিন্দি বলয়েও মমতা এবং তৃণমূলের জনপ্রিয়তা বাড়বে।
রাজনীতিতে শত্রুঘ্নর অভিজ্ঞতা নেহাত কম নয়। সেই আটের দশকে কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকাকালীনই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সেসময় বাজপেয়ী এবং আডবানীর আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন তিনি। ১৯৯২ সালে দিল্লির একটি কেন্দ্র থেকে সুপারস্টার রাজেশ খান্নার বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে লড়াইও করেন তিনি। তাতে সাফল্যে আসেনি, ক্ষতি হয়েছে কেরিয়ারের। কিন্তু তাতে দমে যাননি শটগান। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার রাজ্যসভার সাংসদ হন তিনি। ২০০২ সালেও রাজ্যসভায় তাঁকে নির্বাচিত করে বিজেপি। বাজপেয়ী জমানায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ এবং জাহাজ মন্ত্রকও সামলেছেন তিনি। লোকসভায় তাঁর প্রথম প্রবেশ বিজেপির টিকিটেই।
[আরও পড়ুন: হিন্দু মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক, ‘অপরাধে’ মুসলিম যুবকের বাড়ি পুড়িয়ে দিল হিন্দুত্ববাদীরা]
২০০৯ এবং ২০১৪ সালে বিহারের পাটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জেতেন তিনি। কিন্তু মোদি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি। তখন থেকেই মোদি-শাহদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হয় তাঁর। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন আসার আগে পুরোদস্তুর বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে আগে তিনি যোগ দেন কংগ্রেসে (Congress)। কিন্তু দুর্দশাগ্রস্ত কংগ্রেসের টিকিটে নিজের পাটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে জিততে পারেননি তিনি। অবশেষে এবারে আসানসোলের উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতে ফের সংসদে গেলেন শত্রুঘ্ন। এ হেন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ যেভাবে মমতাকে দেশের সেরা নেত্রীর আসনে বসালেন, সেটা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।