সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিলে তিলে গড়ে তুলেছি প্রতিবাদ, কিছুটা সচেতনতাও। দিনের পর দিন স্কুল না গিয়ে পোস্টারে প্রতিবাদের কথা লিখে ঘুরে বেড়াত এদিক-ওদিক। ছিল জনা কয়েক সঙ্গীসাথীও। তারা সমস্বরে বলত পৃথিবীর অসুখের কথা। বলত বদলে যাওয়া আবহাওয়ার আসন্ন বিপদের কথা। বছর ষোলর মেয়েটিকে কেউ পাত্তা দেয়নি তখন। দিনে দিনে সকলেই বুঝেছেন, এ মেয়ের কথা ফেলে দেওয়ার তো নয়ই, বরং বেশি করে গুরুত্ব দেওয়ার। বলছি সুইডিশ কিশোরী পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের কথা। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এবার তাকে দেওয়া হল মানবতার পুরস্কার। Gulbenkian Prize for Humanity তে ১০ লক্ষ ইউরো পুরস্কার পেল সে। তবে পুরস্কারের অর্থমূল্য পুরোটাই পরিবেশের কাজে দান করবে বলে জানিয়েছে গ্রেটা।
পরিবেশকে বাঁচানোর জন্য গ্রেটা ও তার সঙ্গীসাথীদের আন্দোলন খুব কম সময়ের মধ্যে বিশ্বে বেশ তোলপাড় ফেলেছে। নিজেদের শখ পূরণের জন্য প্রকৃতি ধ্বংস, অবহেলা – এসবের যে সুদূরপ্রসারী ভয়ংকর ফলাফল আছে, তা যে বয়সে গ্রেটারা বুঝে গিয়েছিল, পক্ককেশ তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের তা বোধগম্য হয়নি বহুদিন।
[আরও পড়ুন: আশা জাগাল অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন, দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালে মিলল সাফল্য]
যদিও গ্রেটা থুনবার্গের (Greta Thunberg) বার্তা অনেক দেরিতে হলেও পৌঁছেছিল তাঁদের কানে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে অনেকেই মেনে নিয়েছেন, আসল সমস্যার কথা চিহ্নিত করেছে গ্রেটার। এই জন্য গত বছর মাদ্রিদের সম্মেলনে বক্তব্য রাখার ডাক পেয়েছিল কিশোরী। সেখানেও নানাভাবে ছাপ রেখেছিল সে। সুইডেন থেকে একটা পরিবেশবান্ধব কায়াক (Kayak) নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল মাদ্রিদের পথে। কিশোরীর চাঁচাছোলা বক্তব্যে কেউ কেউ বিরক্ত বোধ করলেও, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল, ব্রিটেনের প্রিন্স ফিলিপ তার সঙ্গে গিয়ে আলাপ করেছিল।
২০১৯ সালে বিশ্ববিখ্যাত TIME ম্যাগাজিনের কভার ছবিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছিল গ্রেটা থুনবার্গ। গত বছর নোবেল পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিল। আর এবার ১০ লক্ষ ইউরো আর্থিক পুরস্কার! সবটাই তার আন্দোলনের স্বীকৃতি। গ্রেটার কথা বলতে গিয়ে বিচারকরা বলেছেন, “পৃথিবীকে অন্যরকমভাবে দেখার চেষ্টায় অক্লান্ত সংগ্রাম ওকে আজকের দিনের অন্যতম অসাধারণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তুলেছে। অন্যকে উদ্দীপ্ত করার শক্তি আছে ওর মধ্যে। ” আর সতেরোর কিশোরী বলছে, “Gulbenkian Prize for Humanity’র প্রাপক হয়ে আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। আমরা এখন একটা সংকটের মধ্যে আছি। পুরস্কারের ১০ লক্ষ ইউরো আমি সেসব সংগঠনের মধ্যে ভাগ করে দেব, যারা ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে সুন্দর রাখার কাজ করছে।”
[আরও পড়ুন: প্রকৃতির কোলে ফিরছে বিরল প্রাণীকুল, ওড়িশা উপকূলে দেখা মিলল বিরল হলুদ কচ্ছপের!]
Gulbenkian Prize প্রতি বছর দিয়ে থাকে পর্তুগিজ একটি সংস্থা। জলবায়ু বদলের নেতিবাচক প্রভাব থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে যেসব সংগঠন বা ব্যক্তি কাজ করছেন, তাদের দেওয়া হয় আর্থিক পুরস্কার। যাতে নিজেদের কাজ আরও ভালভাবে তারা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তাঁরা। এবার তা দেওয়া হল গ্রেটা থুনবার্গ ও তার সংগঠনকে।
The post স্বীকৃতির সিঁড়িতে আরেক ধাপ, মানবতার পুরস্কার হিসেবে বিপুল অর্থপ্রাপ্তি গ্রেটা থুনবার্গের appeared first on Sangbad Pratidin.