অমিতলাল সিং দেও, মানবাজার: পুলিশ সুপারের নামেও সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো আইডি। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক আইডি নকল করার অভিযোগে এক যুবককে আটক করল পুরুলিয়া সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া এলাকার এক যুবককে মোবাইল-সহ আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এদিন তাঁকে পুরুলিয়া নিয়ে আসা হয়। তবে তদন্তের স্বার্থে ওই যুবকের নাম জানাতে চাইনি পুলিশ।
গত ৩১ আগস্ট পুরুলিয়া (Purulia) জেলা পুলিশের এক আধিকারিক, পুরুলিয়া সাইবার ক্রাইম থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের নাম ও ছবি ব্যবহার করে দুটি নকল ফেসবুক আইডি ব্যবহার করার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিন একটি সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য দিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে ই-মেল পাঠান এই মামলার তদন্তকারী আধিকারিক। পরে ওই দুটি নকল অ্যাকাউন্টকে বন্ধ করে দেয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: ডিপফেক ভিডিও না রুখলে ‘ইমিউনিটি’ প্রত্যাহার, সোশাল মিডিয়াগুলিকে হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের]
সম্প্রতি ওই অ্যাকাউন্ট দুটি যে মোবাইল নম্বর এবং ই-মেল আইডি দিয়ে খোলা হয়েছিল তার যাবতীয় তথ্য পুলিশকে জানায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। যার ভিত্তিতে এদিন পুরুলিয়া সাইবার ক্রাইম থানার একটি টিম দক্ষিণ ২৪ পরগনা গিয়ে ওই যুবককে আটক করে। তবে এরই মাঝে জেলা পুলিশের নজরে আসে পুলিশ সুপারের আরেকটি নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। এই ক্ষেত্রেও অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুক্রবার পুরুলিয়া সাইবার ক্রাইম থানায় আরেকটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ। দেখা গিয়েছে, ফেসবুকের ওয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর ছবি, নাম এবং পদবি। সম্প্রতি পুরুলিয়া জেলা পুলিশের আধিকারিকরা ছাড়াও বিভিন্ন জনের ফেসবুকে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে আসছে বন্ধুত্বের বার্তা। মানবাজারের এক শিক্ষককে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে মেসেজে করে মোবাইল নম্বর চাওয়া হয়। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে জানানো হয়, তার এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান বদলি হয়ে যাচ্ছেন। ফলে তাঁর সদ্য কেনা গেরস্থালির জিনিসপত্র স্বল্প দামে বিক্রি করে দিতে চান। ইচ্ছুক থাকলে যোগাযোগ করুন। এর পরেই একটি মোবাইল নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে গৃহস্থালি আসবাবপত্রের ছবি দ্রুত ক্রয় করার টোপ দেওয়া হয়। বাড়ি পর্যন্ত সেই সমস্ত জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য অগ্রিম টাকাও পাঠাতে বলেন প্রতারকরা।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, পুলিশ সুপারের নাম, ছবি ব্যবহার করে নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে তা থেকে প্রতারকরা নানা জনকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। তবে তদন্তকারীদের ধারণা, এর পিছনে কোনও বড় চক্র কাজ করেছে।