অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ছট পুজোর সন্ধেয় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তারপর বহু বছর পেরিয়েছে, ফিরতে পারেননি। এবার হ্যাম রেডিওর সাহায্যে পরিবারের কাছে ফিরছে বিহারের এক যুবক। একই সঙ্গে বিহারের আরও এক যুবককে ঘরে ফেরাল হ্যাম রেডিও।
বছর তিনেক আগে দু’জনকেই হাওড়া স্টেশনের কাছে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল। হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে তাঁদের উদ্ধার করে লিলুয়ার বেলিলিয়াস রোডে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিহারের বাঁকা জেলার লিলাতারি গ্রামের বাসিন্দা মনোজ পাসোয়ান ও ওড়িশার বালেশ্বরের বিষ্ণুপুর গ্রামের কমললোচন পান্ডা অতীতের কথা কার্যত ভুলে গিয়েছিলেন। নিজেদের নাম ছাড়া আর কিছুই তাঁরা বলতে পারছিলেন না। এমনকী, ঠিকমতো খেতেও পারছিলেন না। বছরের পর বছর হাওড়ার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় দু’জনের চিকিৎসা চলে। অবশেষে দুই যুবককে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। হ্যাম রেডিওর সাহায্যেই দুই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
[আরও পড়ুন: Jagadhatri Puja 2021: মাস্ক না পরে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে গেলেই খেতে হবে কানমলা, সৌজন্যে প্রমিলা বাহিনী]
শনিবার লিলুয়ার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোমে গিয়ে মনোজ পাসোয়ান (৩০)-এর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের ছেলেকে বিহারে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। ২০১২ সালে ছটপুজোর সময় বাঁকা জেলার লিলাতারিতে নিজের গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান মনোজ। ঘুরতে ঘুরতে চলে আসেন হাওড়া স্টেশনে। শনিবার মনোজের মামা পুতুল পাসোয়ান জানিয়েছিলেন, গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সব কিছু ভুলে যান মনোজ। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁরা মনোজের সন্ধান পাননি। মনোজের স্ত্রী ও দশ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। অবশেষে ন’বছর পর মনোজ পরিবারের সদস্যদের চিনতে পেরে বাড়ি ফিরলেন।
অপরদিকে, ওড়িশার কমললোচন পান্ডা (৪০) নামে এক যুবকের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করে হ্যাম রেডিও। ২০০৪ সাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান কমল। তিনিও গ্রাম থেকে বেরিয়ে স্মৃতিভ্রংশ হয়ে হারিয়ে যান। অবশেষে আমেদাবাদে থাকা কমললোচনের ভাই পদ্মলোচনের সঙ্গে যোগাযোগ করে হ্যাম রেডিও। আগামী বুধবার কমললোচনের পরিবারের সদস্যরা হাওড়ায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় এসে তাঁকে নিয়ে যাবেন বলে জানা গিয়েছে। হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস জানিয়েছেন, হ্যাম রেডিওর সাহায্যে স্মৃতিভ্রংশ হওয়া দুই যুবককে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হল। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে ফাদার সাজন জোসেফ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর তাঁরা ঘরে ফিরছেন।