স্টাফ রিপোর্টার: অপরিষ্কার এসি থেকে নিউমোনিয়া! গল্প নয়, সত্যি!
এসি পরিষ্কার করা হয়নি দীর্ঘদিন। গরম বাড়তেই এখন দু'বেলা তা চালানো হচ্ছে। আচমকাই খুশখুশে কাশি। বুকে এক্স রে করতেই ধরা পড়ল নিউমোনিয়া। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটক সাবধান করেছেন। ইতিমধ্যেই এমন নিউমোনিয়া নিয়ে তাঁর চেম্বারে এসেছেন অনেকে। চিকিৎসকের সুপারিশ, "দীর্ঘদিন এসির সার্ভিসিং না করিয়ে ব্যবহার করবেন না। লিজিওনেল্লা নামে এক ধরনের ব্যাকটিরিয়া জন্মায় এসির স্যাঁতসেঁতে ডাক্টে। এই সময়টায় সারা রাত এসি চালানো হয়। ওই ব্যাকটিরিয়া ঢুকে পড়ে ফুসফুসে। তা থেকে একটা তীব্র দমবন্ধ করা কাশি দেখা যায়। বিরল একটা নিউমোনিয়া বাসা বাঁধে ফুসফুসে।"
এই গ্রীষ্মে ধুম জ্বর নিয়ে হাসপাতালে শিশুদের ভিড় বাড়ছে। অভিভাবকদের প্রশ্ন করলেই জানা যাচ্ছে, কেউ ঘেমে-নেয়ে বাড়িতে ঢুকেই এসি রুমে, চাঁদিফাটা রোদ থেকে ফিরেই ফ্রিজের জলে চুমুক দিয়েছিল কেউ। পিয়ারলেস হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের ক্রিটিকাল কেয়ারের বিভাগীয় প্রধান ডা. সহেলি দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, যার জেরে ঘরে ঘরে মাথাচাড়া দিচ্ছে রাইনো-অ্যাডিনো ভাইরাস। চিকিৎসকের কথায়, এই মরশুমে ধুম জ্বর হওয়ার কথা নয়। কিন্তু গত দু'সপ্তাহ ধরে দেখা যাচ্ছে একাধিক শিশু হাসপাতালে আসছে হাইগ্রেড ফিভার নিয়ে। উপসর্গ?
চোখ লাল-গলা ব্যথা। নিশ্বাস নিতে কষ্ট, পাতলা পায়খানা।
এখন বাড়িতে-বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র। ছোটদের স্কুলে গরমের ছুটি চলছে। বাইরে খেলাধুলা করেই তারা ঢুকে পড়ছে এসি রুমে। কেউ ঘেমেনেয়ে স্নান করতে ঢুকে পড়ছে। ডা. সহেলি দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, তাপমাত্রার এই বৈপরীত্যের ফলে মাথাচাড়া দিচ্ছে ভাইরাস। তাপমাত্রার ওঠানামায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করছে না। গরম থেকে ফিরেই আইসক্রিম খাওয়া এই জন্য বিপজ্জনক। এতে গলার তাপমাত্রাটা একধাক্কায় অনেকটা নেমে যায়। মুখের মধ্যে যে জীবাণু ছিল সেগুলো প্যাথোজেনিক হয়ে সংক্রমণ মাথাচাড়া দেয়।
কেন শিশুরাই আক্রান্তের শিকার?
ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. প্রিয়ঙ্কর পাল জানিয়েছেন, বড়দের শরীরে এই ধরনের ভাইরাস একাধিক বার হানা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে অ্যান্টিবডি রয়েছে। শিশুদের তা নেই। অভিভাবকদের বলব, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র খুব বেশি চিলড করে রাখবেন না। ২৪ ডিগ্রি থেকে ২৬ ডিগ্রির মধ্যে রাখবেন।