সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিকিৎসা-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে জাপানের বিজ্ঞানীদের জয়জয়কার। স্টেম সেল চিকিৎসায় নজির গড়লেন সেদেশের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের অসাধ্যসাধনে সম্ভব হল হৃত দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা। লিম্বাল সেল ডেফিসিয়েন্সি (এলএসসিডি) নামের জটিল চোখের রোগে আক্রান্ত রোগীদের উপর স্টেম সেল থেরাপির প্রয়োগে বিজ্ঞানীরা লাভ করলেন অভূতপূর্ব সাফল্য।
এই দুরারোগ্য রোগে শুধুমাত্র যে দৃষ্টিশক্তি ব্যাহত হত, তা-ই নয়, প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিতে এর চিকিৎসা তথা নিরাময়ও এতদিন ছিল দুঃসাধ্য। অথচ জাপানি বিজ্ঞানীরা সেই কেরামতিই করে দেখালেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানর ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। ফলে আক্ষরিক অর্থেই বলা যেতে পারে যে, বিশ্বে এই প্রথম স্টেম সেল থেরাপির প্রয়োগে অন্ধত্ব ঘুচিয়ে, হৃত দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
মেডিক্যাল সায়েন্স বলছে, এলএসসিডি রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় চোখের কর্নিয়া। এর থেকে হয় চিরস্থায়ী ব্যথা, দৃষ্টিশক্তির ধারাবাহিক ক্ষয় এবং শেষ পর্যন্ত অন্ধত্ব। আরও চিন্তার বিষয় হল, এই রোগের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিও সীমিত। এর আগেও এই রোগের নিরাময়ে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কিন্তু সে সবই প্রায় ব্যর্থ হয়েছে। রোগীরা নিরাময় পাওয়ার বদলে ভুগেছেন একের বেশি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায়।
ওসাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের অপথ্যালমোলজিস্ট, কোঝি নিশিদা এবং তাঁর সহকর্মী বিজ্ঞানীরা এই রোগেরই নিরাময়ে স্টেম সেল থেরাপি নিয়ে গবেষণা করছিলেন বেশ কিছু বছর ধরে। তাঁরা এক্ষেত্রে অন্য ধরনের কোষের প্রয়োগ করে দেখেন। নাম প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল, যার মাধ্যমে কর্নিয়াল ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। বিজ্ঞানীরা একজন হেলদি ডোনারের থেকে রক্তকোষ সংগ্রহ করেন এবং তাকে ‘রিপ্রোগ্র্যাম’ করে পরিণত করেন এমব্রায়োনিক ধরনের কোষীয় পরিস্থিতিতে। আর তারপরই তাকে রূপান্তরিত করেন স্বচ্ছ-পাতলা কর্নিয়াল এপিথেলিয়াল কোষে। শেষপর্যন্ত এই সেলগুলিকেই ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। আর তাতেই হয় কামাল। ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রক্রিয়া শেষে রোগীদের হৃত দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসে, চার জনের মধ্যে তিন জনের ক্ষেত্রেই।