নব্যেন্দু হাজরা: দু’বছরের করোনা কাঁটা পেরিয়ে এবার স্বমেজাজে বাংলার দুর্গোৎসব। রাজ্যবাসীও কোমর বেঁধে তৈরি হচ্ছে শারদীয়ার মৌতাত নিতে। কিন্তু তাঁদের সেই পরিকল্পনায় কি অসুর হয়ে দাঁড়াবে বৃষ্টি? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। আশঙ্কা বাড়িয়েছে মৌসম ভবন এবং হাওয়া অফিসের এক পূর্বাভাস। কী বলছে সেই পূর্বাভাস?
দিল্লির মৌসব ভবন বলছে, এ বছরও গত কয়েক বছরের রীতি বজায় থাকবে। বর্ষার শেষবেলায় বাড়তি বৃষ্টির সাক্ষী থাকতে পারে দেশ। সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বর্ষা বিদায় নিতে শুরু করে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ছবিটা অন্য। বর্ষার শেষবেলায় অতিরিক্ত বৃষ্টি হচ্ছে। এবারও সেই ধারা বজায় থাকার সম্ভাবনা সমূহ।
[আরও পড়ুন: হাওড়ার পুরভোট কবে? প্রশ্ন শুনেই রাজ্যপাল বললেন, ‘কানে শুনতে পাচ্ছি না’]
আবার এদিকে এবছর সঠিক সময় বাংলায় বর্ষাপ্রবেশ করলেও মৌসুমি বায়ু শক্তিশালী না হওয়ায় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ ভারী বৃষ্টি পায়নি। ফলে বৃষ্টির পরিমাণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সাধারণত ১০ অক্টোবর বাংলা থেকে বিদায় নেয় বর্ষা। কিন্তু এবার তো আগস্টের শেষেও ভারী বৃষ্টি পায়নি বাংলা। ফলে অক্টোবরের শুরুতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর এবার ১ অক্টোবর থেকেই শুরু হচ্ছে দুর্গাপুজো।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর বলছে, রবিবার অর্থাৎ আজ পর্যন্ত দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি-সহ দুই দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এদিন থেকেই মৌসুমী অক্ষরেখার অবস্থান বদলাতে পারে। সে ক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গে বাড়তে পারে বৃষ্টি। চলতি মাসের ৬-৭ তারিখ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে গোটা বাংলাতেই ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পূর্বাভাস রয়েছে নিম্নচাপেরও। এমনকী চলতি মাসের শেষে অর্থাৎ পুজোর মুখে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। তবে তার প্রভাব বাংলার বুকে কতটা পড়বে সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি আবহাওয়া দপ্তর।
[আরও পড়ুন: ‘TET নেবেন না, আত্মহত্যা করব’, নিয়োগ তৎপরতা শুরু হতেই পর্ষদ সভাপতিকে হুমকি উত্তীর্ণদের]
মৌসম ভবনের সাম্প্রতিক পূর্বাভাস বলছে, এ বছরও সেপ্টেম্বরে অতিরিক্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যা আবার দীর্ঘ সময়ের গড়ের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেশি। আর বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে সেপ্টেম্বেরর শেষে। ৩০ সেপ্টেম্বর পুজোর পঞ্চমী। ফলে পুজো শুরুর দিকে বৃষ্টির আশঙ্কায় ভুগছে বঙ্গবাসী। ২০১৯ সাল থেকে টানা তিন বছর বর্ষার সময় উদবৃত্ত বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি উদবৃত্ত বৃষ্টি হচ্ছে সেপ্টেম্বরে। এবার সেই ধারা বজায় থাকলে বাংলার পুজোর বাজার মাটি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।