সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সফর ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে বাংলাদেশ। ওই সময় সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত ১৮ জন। তারপর থেকেই অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু হয়। এহেন পরিস্থিতিতে তদন্তে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোদি বিরোধিতার অছিলায় শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাই লক্ষ্য ছিল হেফাজতে ইসলামের। এই ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছে খোদ ইসলামিক সংগঠনটির প্রধান মামুনুল হক।
[আরও পড়ুন: ঢাকায় গ্রেপ্তার মোদি বিরোধী বিক্ষোভের মূল চক্রী হেফাজতে ইসলামের নেতা]
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। তদন্তকারীদের দাবি, হেফাজতের নেতাকর্মীদের উসকানি দিত মামুনুল। সে বলত, শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে হেফাজতের সমর্থন ছাড়া কেউ ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। এই মিশনে সে আফগানিস্তান থেকে ফেরত আসা মুজাহিদ ও জামাতের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখত। মারধর, হুমকি, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃত গোলযোগ সৃষ্টি, মোবাইল চুরির অভিযোগে গত বছর দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনুলকে ৭ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। মহম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক সাজেদুল হক রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) দেবদাস চন্দ্র অধিকারী গোয়েন্দা পুলিশের আধিকারীকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই অবদন মঞ্জুর করেন। এদিকে, হেফাজত নেতা মামুনুলের তিনটি বিয়ের মধ্যে দুটি চুক্তিভিত্তিক বলে স্বীকার করে নিয়েছে। কিন্তু সে এই দুটি বিয়ে-সংক্রান্ত কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এছাড়া, হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে তাণ্ডব ও নৃশংস হামলার ঘটনার দায় নিয়েছে মামুনুল।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ও ২৭ মার্চ বাংলাদেশে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে ও মুজিববর্ষ পালনে ঢাকা যান তিনি। সেই সময় জামাত ও বিএনপি প্রতিবাদ শুরু করেছিল। এর মধ্যে পাকিস্তানের চক্রান্ত রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সংসদের তরফে এক টুইটে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, পাকিস্তান দূতাবাস ও হেফাজত-এ-ইসলামের মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে। প্রসঙ্গত, কট্টরপন্থী হেফাজতই প্রথম এই ব্যাপারে প্রতিবাদ শুরু করার ডাক দিয়েছিল। সেই সময়ই বাংলাদেশ সংসদের ইঙ্গিত ছিল, ওই প্রতিবাদ শুরুর করতে গোপনে আর্থিক মদত জুগিয়েছে ঢাকার পাক দূতাবাসও। একে আইএসআইয়ের চক্রান্ত বলে তোপ দেগে তার নিন্দাও করা হয় সেই টুইটে।