সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একঘেয়েমি কাটাতে মন ছুটে যায় দূরপ্রান্তে। সব ফেলে ব্যাগ কাঁধে বেড়িয়ে পড়া যায় সেই দূরের টানে। বাঙালি মানেই অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী। পথের বাঁকের রহস্য তাঁকে সবসময়ই ডাকে। সেই সমস্ত ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সুখবর। এবার ‘উইশ টু গো’ লিস্টে জুড়ে যাচ্ছে কয়েক হাজার বছর পুরনো ইতিহাসপ্রসিদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, হেগরার (Hegra) নাম।
ভাবছেন তো, কোথায় এই হেগরা? কীভাবেই বা সেখানে পৌঁছতে পারবেন আপনি? কী ইতিহাস লুকিয়ে আছে এই এলাকার পথের বাঁকে? সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে এবার।
[আরও পড়ুন : তুষার পর্যটনে প্রাধান্য উত্তরবঙ্গ-সিকিমে, অফ সিজনেও পর্যটকদের ঢল নামার আশা ব্যবসায়ীদের]
অন্তত ২০০০ হাজার পর, এই প্রথম সর্বসাধারণের জন্য খুলে যাচ্ছে ইতিহাসপ্রসিদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, হেগরা। এটি সৌদি আরবের ইউনেস্কো স্বীকৃত প্রথম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। হেগরার প্রতিষ্ঠা করেন ‘নবাতিয়ান’ অর্থাৎ প্রাচীন আরববাসী। এঁরাই জর্ডনের পেত্রার ‘সিস্টার সিটি’ গড়ে তুলেছিলেন। মরুভূমির বুকে গড়ে ওঠা এই বিশাল সাম্রাজ্যের সময়কাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে খ্রিষ্টাব্দ প্রথম শতক। পরে তা রোমের দখলে চলে যায়। উনবিংশ শতকে যখন পেত্রা—কে পুনরায় আবিষ্কার করা হল, তখন থেকে পাদপ্রদীপের আড়ালে থেকে গিয়েছিল হেগরা। যদিও তাতে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব কিছু কম হয়নি।
এখানকার ১১১ সমাধিক্ষেত্রের মধ্যে ৯০টিরও বেশিকে পুনরায় সাজানো হয়েছে। এদের বেশিরভাগেরই গায়ে শিলালিপি খোদাই করা, যেখানে ঐতিহাসিক দলিলকে কোনওভাবে নষ্ট না করার হুঁশিয়ারি সংকলিত রয়েছে। আর আছে পূর্ব—নবাতিয়েন আমলের গুহাচিত্র এবং শিলালিপি। আক্ষরিক অর্থে যা ঐতিহাসিক দলিল। তাই ইউনেস্কোর তরফে হেগরাকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’—এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়। নবাতিয়ানরা চাষবাসে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছিল। সেই উন্নতির চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে হেগরার ইতিউতি। সেই সময়কার কৃত্রিম জলাধারের চিহ্ন এখনও অবশিষ্ট রয়েছে সৌদির এই শহরে।
[আরও পড়ুন : ইন্ডিয়া গেট-আইফেল টাওয়ারের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার, পর্যটকদের জন্য নয়া রূপে সাজছে দিঘা]
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গোড়াতেই সৌদি আরবের পর্যটন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পর্যটন শিল্পে ঘাটতি হ্রাসে সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। হেগরা জনগণের জন্য খুলে দেওয়া সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাওয়া বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। তাহলে আর দেরি কেন, মহামারী শেষে বিদেশ ভ্রমণের ফার্স্ট স্টপ হতেই পারে এই ইতিহাসে মোড়া শহর হেগরা।