দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: একেই বলে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। বসন্তের প্রবল বৃষ্টিতে এক দিকে যখন মাথায় হাত পড়েছে সবজি চাষিদের, তখন হাসি ফুটেছে গভীর সমুদ্রের মৎস্যজীবীদের। বর্ষায় দেখা পাওয়া যায়নি সেই ভাবে। কিন্তু বসন্তে হাজির ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। অসময়ে রুপোলি শষ্যের দেখা পাওয়ায় অবাক মৎস্যজীবীরাও।
[দোলেও রাজনীতির রং, ভোটের মুখে দেদার বিকোচ্ছে মোদি-মমতার মুখোশ]
গত কয়েকদিনে বেশ কয়েক টন ইলিশ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন আড়তে। জেলা মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর, ভরা বসন্তে হওয়া প্রবল বৃষ্টি গভীর সমুদ্রে থাকা ইলিশ টেনে এনেছে মোহনায়। মোহনার ইলিশ এরপর চলে আসছে ডায়মন্ড হারবার, কুলপি, মাতলা-সহ বিভিন্ন নদীতে। ধরা পড়ছে মৎস্যজীবীদের জালে। গত এক সপ্তাহ ধরে মৎস্যজীবীরা নৌকা পিছু প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাট কেজি করে ইলিশ ধরছেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজন মাইতি বলেন, “অসময়ে ইলিশ পাওয়ায় দামও মিলছে ভাল। প্রতি কেজি ইলিশ এখন বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০০০-১২০০ টাকায়। বর্ষার মরশুমের ইলিশের থেকে বসন্তের ইলিশের স্বাদ অনেক ভাল। শুধু তাই নয়, যে সব ইলিশ উঠেছে মৎস্যজীবীদের জালে সেগুলি খোকা ইলিশ নয়। সবই বেশ ভাল মাপের ইলিশ। ওজন আটশো থেকে এক কেজির কাছাকাছি।”
[সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে ক্ষোভ চরমে, দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি বিজেপি নেতাদের]
সাধারণত ইলিশের মরশুম হল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু এখন বর্ষাকাল নয়। ইলিশ মাছের সময়ও নয়। শুধুমাত্র বর্ষার মতো আবহাওয়া তৈরি হওয়ার কারণে ইলিশ নদীর মোহনায় ঢুকে পড়েছে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। মৎস্যজীবী হারান দাস বলেন,“সমুদ্র ও নদীর মোহনা থেকে পাওয়া ইলিশের পেটে প্রচুর ডিম পাওয়া যাচ্ছে। যা একেবারে পুষ্ট ডিম। মনে করা হচ্ছে এই বৃষ্টিতে ডিম ছাড়ার জন্য ইলিশ এসে উপস্থিত হচ্ছে মিষ্টি জলের নদীতে। সেগুলিই ধরা পড়ছে মৎস্যজীবীদের জালে।” এই ইলিশ যাতে মৎস্যজীবীরা না ধরেন তার জন্য বিভিন্ন এলাকায় চালানো হচ্ছে প্রচার। কারণ এই ডিম ভরতি মা ইলিশ ধরা পড়লে আগামিদিনে ইলিশ পেতে সমস্যা হবে। তাই বসন্তের ইলিশের স্বাদ থেকে বিরত থাকতে হবে বাঙালিকে। না হলে বর্ষার ইলিশে ঘাটতির আশঙ্কাও থাকছে।
The post বসন্তেও বাঙালির পাতে ইলিশ! মৎস্যজীবীদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে রুপোলি শস্য appeared first on Sangbad Pratidin.